Home Blog Page 10

গাভীর দুধ উৎপাদন বৃদ্ধির ১০টি কৌশল

1


প্রিয় খামারী ভাই-বোনেরা, যারা ডেইরী খামার করেন তাদের প্রায় সবাই চান খামার থেকে বেশি লাভ করতে।আর লাভ করতে হলেই তো বেশি দুধ প্রয়োজন।তাই আপনার খামারের গাভীটি যাতে তার সাধ্যের সবটুকু দিয়ে আপনার আশা পূর্ন করতে পারে সে ব্যবস্থা করতে হবে।গাভী কিন্তু চাই তার সব টুকু উজার করে দিয়ে মালিকের উপকার করার জন্য।কিন্তু সেই সুযোগ আপনি কতটুকু কাজে লাগাতে পারলেন,সেই কারিশ্মা কিন্তু আপনার হাতে।এখন প্রশ্ন হল কি সেই কারিশমা।ব্যাপার জঠিল কিছু নয়।আপনার শুধু জানতে হবে,কেন বা কি কারনে গাভীর দুধ বাড়ে আর কি কারনে কমে! যদি জেনে থাকেন তাহলে মিলিয়ে নিন আর জানা না থাকলে নিমিষেই নিচের ১০ট বিষয় খেয়াল করুন।

১।কিভাবে দুধ দোহন করান?

দুধ উৎপাদন কম হবে না বেশি হবে অথবা ঘন হবে না পাতলা হবে তা অনেকাংশে নির্ভর করে দোহনের উপর।যদি দহনের কোন ত্রুটি থাকে,দোহন কারী পরিবর্তন হয় তাহলে দুধের পরিমানও পরিবর্তন হবে।আর দুধ হোহনের সময় যদি ইভটিচিং করেন তাহলে তো সে বেকে বসবেই।তার মানে দুধ দহনের সময় তাকে একটি শান্ত-শিষ্ট পরিবেশ দিতে হবে।

তাছাড়া ওলানে দুধের চাপের উপরও দুধের পরিমান এবং  দুধের উপাদানের পরিমান নির্ভর কিরকম? বিষয়টি হল দোহন প্রক্রিয়া অগ্রসর হওয়ার সাথে সাথে দুধে চর্বির পরিমান বাড়তে থাকে।অনেক্ষন পর দুধ দোহন করলে দুধের চাপ বেশি থাকে তাই চর্বির পরমান কম থাকে,কিন্তু যদি অল্প সময় পর পর দোহন করা হয় তবে দুধে চর্বির পরমান বেশি পাওয়া যায়।।তাই একই গাভীর  সকালের দুধের চেয়ে বিকেলের দুধে চর্বির পরিমান বেশি থাকে।

এমন যদি হয় আজকে এই ঘরে তো কালকে অন্য ঘরে দুধ দহন করালেন,অথবা দূধ দহনের সময় পরবর্তন করলেন তাহলেও দুধের পরিমান হ্রাস পেতে পারে।দুধ দোহনের সময় যদি কোন আগন্তুক দাড়িয়েঁ থাকে তাহলে দুগ্ধবতী গাভীটি লজ্জা পাবে এটাই তো স্বাভাবিক।তাই দুধ দোহনের সমইয় “নো বাইরের মানুষ” (এমন কি যদি সে মালিকও হয়!)

২। সুষম খাবার পর্যাপ্ত দিচ্ছেন তো?

যেই গরু বেশীই দুধ দিবে সেই গরুকে বেশি খাবার দিতে হবে এটাই স্বাভাবিক।জানেন সকলে মানেন কয়জনে?১০০ কেজি একটি গরুর কতটুকু খাবার প্রয়োজন সেই বিষয়ে আমার আগের একটি লেখা আছে প্রয়োজন করলে এই লিংকে ক্লিক করে পড়ে নিতে পারেন।এই স্বাভাবিক খাদ্যের সাথে বাড়তি দুধের জন্য বাড়তি খাবার যোগ করতে হবে।আর গরু যদি গর্ভবতী হয় তাহলে আরো অতিরিক্ত যোগ হবে সব ঠিক ঠাক থাকলে তবেই সে আপনাকে ভাল দুধ দিতে পারবে।

০৩।গর্ববতী গাভীর শারীরিক অবস্থা কেমন?

গাভী যদি গর্ভবতী হয় তাহলে তাকে এমন ভাবে খাবার দিতে হবে যেন সে নিজের শরীর চালানো,দুধ উৎপাদন এবং গর্ভস্থ বাচ্চার বৃদ্ধির জন্য পর্যাপ্ত খাবার পাই।যদি গাভী থেকে ভাল দুধ পেতে চান তাহলে গর্ভস্থ গাভীকে পর্যাপ্ত সুষম খাদ্য এবং সুষ্ঠ ব্যবস্থাপনার ব্যবস্থা করতে হবে।তা না হলে দুধ পাবেন ঠিকই কিন্তু খামারে লাল বাতি(!) জ্বলতে বেশী সময় লাগবে না।

খেয়াল রাখবেন,প্রসবের ৫০-৬০ দিন পূর্বেই গাভীর দুধ দোহন অবশ্যই বন্ধ করতে হবে।কিন্তু তা একদিনে নয়।

০৪।গাভীর বয়স কেমন হল?

বয়সে সাথে সাথে যৌবনে ভাঁটা পড়ে দুধেও টান পড়ে।একটু সহজ করে বলি,প্রথম বিয়ানে দুধের পরিমান একটু কম থাকে দ্বিতীয় বিয়ানে তা আর একটু বাড়ে।তৃতীয় বিয়ানে তা চরমে পৌঁছে যাই।খামারীর আনন্দ ধরে না।সেই রকমই চলে আরো দুই এক বিয়ান তার পরে শুরু হয় ভাঁটার টান।যত বিয়ান বাড়ে তত দুধ কমে।এই হল সাধারনহিসাব নিকাশ।

যদি বয়স হিসাব করেন তাহলে সাধারনত ৪-৫ বছর বয়সে দুধের ভরা বর্ষা চলতে থাকে।আর ৮-৯ বছরের পর শুরু হয় গ্রীষ্মের খরা।এবার ভাবুন,আপনার কি করা?

০৫। শারীরিক ওজনঃ

গরুর আকার এবং ওজনের সাথে রয়েছে দুধের একটি দারুন সম্পর্ক।সেই বিষয়টি আমাও চেয়ে আপনারা আরো ভাল জানেন।গরুর ওজন যত বেশী হয় স্বাভাবিক ভাবে তার ওলান ও পরিপাকতন্ত্র বড় হয়।তাই দুধ উৎপাদন ক্ষমতা ও বেশী হওয়ার সম্ভাবনা থাকে।

০৬।গর্ভকালঃ

গর্ভকালে শুরুর দিকে দুধের উৎপাদন তেমন পরিবর্তন না হলেও শেষের দিকে  উৎপাদন হ্রাস পায়।সাধারনত গর্ভস্থ বাচুরের জন্য পুষ্টির প্রয়োজন হয় বলেই দুধ কমে যায় বলে ধারনা করা হয়।তাচাহড়া এই সময় শরীরের মধ্যে ইষ্ট্রজেন এবং প্রজেষ্টেরন(Estrogen & Progesteron) নামক দুটি হরমোন বৃদ্ধি পায়,যা দুধ উৎপাদন হ্রাসে প্রভাব বিস্তার করে।

তাই এই বিষয়ে মন খারাপ করার কিছু নেই।পুরাতন খামারীরা এই বিষয়টি ভালই বুঝেন।

০৭।কতদিন পর পর বাচ্চা হয়?

একবার বাচ্চা দেওয়ার দুই বছর পর যদি ডাকে আসে, তাহলে দুধের কথা তো পড়ে খামার টিকানোই মুশকিল হয়ে যাবে।তাই খেয়াল রাখতে হবে বাচ্চা দেওয়ার ২-৩ মাসের মধ্যের যেন গাভী ডাকে আসে।তাহলে আপনি ১-১.৫ বছরের মধ্যেই  নতুন বাচ্চা পাবেন।তবে কোন ভাবেই বাচ্চা প্রসবের ৬০ দিনের মধ্যে গাভীকে নতুন ভাবে গর্ভবতী করা যাবে।

এতেই করেই আপনার খামের দুধ উৎপাদন ও খামারের লাভ দুটো ঠিক থাকবে।

০৮।সব বাটে কি দুধ সমান আসে?

উত্তর হল না।তাহলে কোন বাট থেকে বেশি আসে?

সাধারনত গাভীর পিছনের অংশের বাট দুটি থেকে মোট দুধের ৬০% আসে এবং সম্মুখ অংশের বাট থেকে বাকি ৪০% আসে।খেয়া রাখতে হবে সব দুধ সঠিক ভাবে আহরপন করেছেন তো!খেয়াল করতে হবে যেন বাটে যেন সমস্যা না আসে।(বাটের সমস্যা প্রতিরোধের উপায়)

০৯। কয়বার দুধ দোহন করেন?

সাধারনত সবাই দুই বেলা দোহন করেন।কিন্তু তা কখন?কখনো সকাল ৭টা বাজে শুরু কখনো ৮টা আবার মাঝে মধ্যে ৮.৩০ টাও হতে পারে।যদি তাই হয় তাহলে বলল আপনার সময়ের ব্যাপারে আরো একটু সতর্ক হওয়া প্রয়োজন।চেষ্টা করবেন প্রতিদিন একই সময়ে দুধ দহনের।আর দুই বেলা দুধ দোহনের ব্যবধান যদি হয় সমান সমান (অর্থাৎ ১২ ঘন্টা পর পর) তবে আপনি সর্বাধিক দুধ সংগ্রহ করতে পারবেন।

যদি সম্ভব হয় আপনি তিন বেলাও দুধ দোহন করতে পারেন।এতে করে দুধের পরিমান বড়বে ।তবে দুধ দোহনের ব্যবধান টা সঠিক হওয়া চাই।

১০।গাভীকে কতটুকু পানি দেন?

দুধের প্রায় ৮৭% পানি।তাহলে বুঝুন দুধের মাধ্যমে শরীর থেকে কি পরিমান পানি বের  হয়ে যায়!তাছাড়া একবার প্রস্রাবে করার সময় কতটুকু তরল শরীর থেকে গাভী বের করে খেয়াল করেছেন?তাছাড়া তার শরীরের স্বাভাবিক কার্যক্রমের জন্যও পানির প্রয়োজন।

কিন্তু কতটুকু বিশুদ্ধ পানি আমরা তাকে দিচ্ছি?স্বাভাবিক ভাবে একটা গাভীর ওজনের উপর ভিত্তি করে ৫০-৮০ লিটার পানি দৈনিক প্রয়োজন হতে পারে। তাই এ ব্যাপারে কোন ধরনের কার্পন্য করা যাবে।গাভীকে তার চাহিদা মাফিক পর্যাপ্ত পানি দিন।প্রয়োজনে একটু বেশি দিন তবে তা কোন ভাবেই যেন তার চাহিদার চেয়ে কম না হয়।

বিজয় দিবস,১৭ উদযাপন

0


বিজয় দিবসের,১৭ শুভেচ্ছা

বাংলাদেশের ভিতরে এবং বাইরে থাকা সকল খামারী এবং শুভাখাংকীদের মহান বিজয় দিবসের শুভেচ্ছা।

শীতকালীন ঘাস চাষ (পর্ব-২):ইপিল ইপিল চাষ

0


শীতকালে যখন ঘাসের আকাল চলে সেখানে ,গবাদি পশুর জন্য খুব  উপাদেয় খাদ্য হল ইপিল ইপিল গাছের পাতা ও কচি ডগা।ইপিল-ইপিল গাছের আরেক নাম সুবাবুল ।এটি মুলত আমেরিকান প্রজাতি হলেও বর্তমানে  ভারতে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ব্যাপক পরিচিতি লাভ করেছে সেই তুলনায় বাংলাদেশ অনেক পিছিয়ে।

শীতকালে প্রকৃ্তিতে  ঘাসের প্রকট সংকট সৃষ্টি হয়।এই সময় খামারীদের জন্য একটি স্থায়ী সমাধান হতে পারে ইপিল ইপিল।এই গাছের পাতা শুকিয়ে অনেক দিন পর্যন্ত সংরক্ষন করে গবাদি পশুকে খাওয়ানো যায়।এছাড়া এ গাছের পাতা ও কঁচি ডগা খাওয়ালে গবাদিপশু ও পাখীর মাংস ,দুধ ও ডিমের পরিমাণ বৃদ্ধি পায়।

এছাড়া এই গাছের আরো অনেক বহুমুখী ব্যবহার রয়েছে। এখন ভাবুন এই গাছ আপনার জন্য কতটা উপকারী!আসুন এবার জেনে নিই কিভাবে এটি চাষ করতে হবে।

ইপিল ইপিল চাষের জন্য কেমন জমি প্রয়োজন ?

রাস্তার ধারে, বাধের উপর,বাড়ির আশেপাশে অথবা সীমানা বরাবর অথবা যেখানে মন চাই সেখানে লাগাতে পারবেন। তবে খেয়াল রাখতে হবে যেন গাছের শিখড় মাটির অনেক গভীরে প্রবেশ করার সুযোগ থাকে। কারন স্বভাবগত ভাবে ইপিল ইপিল গাছের শিকড় মাটির গভীরে গিয়ে নিজের জন্য প্রয়োজনীয় পানি সংগ্রহ করে।এই কারনে অধিক গরম পড়লেও গাছটি নিজেকে টিকিয়ে রাখতে পারে।কিন্তু কোন ভাবেই নিচু জমিতে এই ঘাস লাগানো উচিত নয়।কারন এই গাছটি জলবদ্ধতা একদম সহ্য করতে পারে না।

যে মাটিতে অম্লত্বের পরিমান বেশি সেই মাটিতে এই গাছ ভালো হয় না।তবে লবনাক্ততা কিছুটা সহ্য করতে পারে।এবার সিদ্ধান্ত আপনার, কোথায় লাগাবেন!

ইপিল ইপিল গাছের বীজ কখন কিভাবে সংগ্রহ করতে হয়?

ইপিল ইপিল গাছের বীজের খোলস বা পড যখন খয়েরী বা গাড় বাদামী রং ধারন করে সেই সময়টাই বীজ সংগ্রহ করার উপযুক্ত সময়।আরো নির্দিষ্ট করে বললে শীতের শুরুর দিক  নভেম্বর থেকে মার্চ এই সময়টাই ইপিল ইপিল বীজ সংগ্রহ করার সময়। যেহেতু ইপিল ইপিল বীজ গরম সহনীয় নয় সেহেতু এই গাছের বীজ সীম সহ সংগ্রহ করার পর শুকিয়ে শুস্ক ও ঠান্ডা জায়গায় সংরক্ষন করতে হয়।ইপিল ইপিল বীজ এক সাথে না পাকার কারনে এই বীজ এক সাথে সংগ্রহ না করে অনেক দিন ধরে সংগ্রহ করতে হয়।

ইপিল ইপিল গাছের বীজ

কিভাবে বীজ শোধন, চারা প্রস্তুত এবং চারা  রোপণ করবেন?

বীজ শোধনের প্রাথমিক ধাপে বীজকে ৮০ ডিগ্রী সেন্টিগ্রেট তাপমাএায় ৩মিনিট গরম পানিতে ডুবিয়ে রাখতে হবে কারণ এতে ইপিল ইপিল বীজের শক্ত আবরণ অনেকটা নমনীয় হয়ে আসে। পরবর্তীতে গরম পানি ফেলে দিয়ে কয়েকবার স্বাভাবিক ঠান্ডা পানি দিয়ে ধুয়ে যত দ্রুত সম্ভব ছায়াতে শুকাতে কিংবা বপন করে ফেলতে হবে। এছাড়া অঙ্কুরোদগম দ্রুত করতে চাইলে বীজ বপনের পূর্বে ১২-২৪ ঘন্টা পানিতে ভিজিয়ে রাখা যায়।এভাবে বীজ তৈরী হয়ে গেলে এগুলোকে চারা তলায় পুততে হবে।

চারা প্রস্তুতকরনঃ

বীজ বপনকাল গ্রীষ্মকাল (মার্চ-এপ্রিল)। তৈরি বীজ বীজতলায় ১.২-১.৫সেঃ মিঃ মাটির নিচে ৫ সেঃমিঃ অন্তর অন্তর পুতে দিতে হবে।এছাড়া পলিথিন ব্যাগেও চারা তৈরী করা যায়,এক্ষেএে ৩ ইঞ্চি বাই ৭ইঞ্চি পলিথিন ব্যাগ হলে ভালো হয়।পলিথিন ব্যাগে হলে এক ব্যাগে দুটি বীজ দিতে হয় পরবর্তীতে চারা গজানোর পর ভালো চারাটি রেখে খারাপটি ফেলে দিতে হবে।বীজ বপনের ১০-১২ সপ্তাহ পরে চারা রোপনের উপযোগী হয়। এই সময় চারা ৮-১২ ইঞ্চি লম্বা হয়ে থাকে।

চারা রোপনঃ

চারা রোপন বর্ষা মৌসুমে করতে  হয়।চারাগুলি ৮-১০ ফুট অন্তর অন্তর গর্ত করে লাগাতে হবে। উদ্দেশ্যের ভিন্নতার উপর নির্ভর করে ইপিল ইপিল এর রোপণ পদ্ধতিও ভিন্ন ভিন্ন হতে পারে।যেমন গবাদি পশুর খাদ্য ছাড়াও কেউ যদি একে বেড়া হিসেবে ব্যবহার করতে চাই, সেক্ষেএে বেড়া বরাবর ৩০ সেঃমিঃ/১ ফুট চওড়া করে কুপিয়ে লাইনে ঘন করে চারা রোপণ করতে হবে।

খাওয়ানোর নিয়মঃ

এ গাছের পাতাসহ কঁচি ডগা কেটে অন্য ঘাস বা খড়ের সাথে মিশিয়ে খাওয়ানো যেতে পারে।তাছাড়া ইপিল ইপিল গাছ যখন দুই হতে আড়াই হাত লম্বা হয় তখন গরু/ছাগল চরায়ে বা কেটে খাওয়ানো যেতে পারে।

ফলনঃ

একক ভাবে ইপিল ইপিল চাষ করলে বছরে ৫-৬ বার কাঁচা ঘাস সংগ্রহ করা যায় এবং অনেক বছর ফলন পাওয়া যায়। এভাবে একর প্রতি বছরে ২৪-৩২ টন কাঁচা ঘাস পাওয়া যায়।

পুষ্টিমানঃ


সাধারন অবস্থায়

শুষ্ক পদার্থ ২৩.০%
প্রোটিন(C.P) ৫.৪%
ফাইবার(C.F) ৩.৬৮%
চর্বি(E.E) ১.৩৮%
খনিজ(Ash) ২.১৫%
বিপাকীয় শক্তি (কি.ক্যালরি/কেজি) ৬৮৭

মাস কলাই চাষ করবেন কিভাবে?

0


মাসকালাই সম্পর্কে বাংলাদেশের মানুষ অনেক আগে থেকেই জানে।তবে যদি ভাল ফলন পেতে চাস সম্পর্কে জানা খুব জরুরী।তাই আজ মাস নিয়ে একটু কথা বার্তা বলব।শীতে দিনে যখন অন্যান বারমাসি ঘাসের ক্ষেতে আকাল  পড়ে তখন আপনাকে সকাল সকাল কাঁচা ঘাসের যোগান দিতে পারে এই অস্থায়ী ঘাসটি।আবার এই ঘাস থেকে যে ফল হয় অর্থাৎ মাস কালাইয়ের ডাল মানুষের খাদ্য তালিকায় স্থান করে নিয়েছে।আবার এই ডাল ভাঙ্গানোর পর  ভুষি হয় তাও পশূ খাদ্যে যুক্ত করে আপনি পশুর আমিষের চাহিদা পূরন করতে পারেন।তাহলে দেখুন একই অঙ্গে কত  গুন!

তাহলে আর দেরি কেন? আপানার যদি জমি থাকে তাহলে এখনি ভাবতে পারেন মাসকালাই চাষের কথা।যদি তাই হয় তাহলে নীচের লেখাগুলো পড়লে সঠিক পদ্ধতিতে এই ঘাসটি চাষ করতে পারবেন।

মাস কলাই কি?

মাস কলাই হচ্ছে দাল ফলস।এর ইংরেজি নাম black gram বা Urid beam এবং বিজ্ঞানের ভাষায় এড় নাম হল Vigna mungo.

কি কি জাতের মাস কলাই আছে?

বাংলাদেশ কৃষি গবেষনা ইনিষ্টিটিউট কয়েকটি মাস কলাইয়ের জাত উদ্ভাবন করেছে ।তার মধ্যে উল্ল্যেখযোগ্য হল নীচের গুলোঃ

  1. বারি মাস-১(পান্থ)
  2. বারি মাস-২(শরৎ)
  3. বারি মাস-২(হেমন্ত)
  4. বিনা মাস-১ ইত্যাদি

এই ঘাস চাষের জন্য কেমন জমি নির্বাচন করবেন?

সাধারনত বেলে দোঁআশ মাটিতে এই ঘাসের ফলন ভাল হয়।তবে বালি মাটি ও লাল মাটিতেও এ ঘাসের আবাদ মোটামূটি ভাল হয়।তবে ভবনার কিছু নাই বাংলাদেশের প্রায় সব মাটিতেই এই ঘাস চাষ করা যায়।
এই ঘাসের জন্য সবচেয়ে বেশি যে বিষয়টি গুরুত্বপূর্ন তা হল,এই ঘাস জমাবদ্ধতা মোটেই সহ্য করতে পারে না।তাই যেই জমিতে জলাবদ্ধতা হয় বা হতে পারে ঐ জমিতে কোন ভাবেই এই ঘাস চাষ করা উচিত নয়।

কখন চাষ করলে ভাল হয়?

সাধারনত রবি মৌসুমে অর্থাৎ শীতের সময় এ ঘাস চাষ করতে হয়।তবে এপ্রিল-মে মাসে চাষ করে গরুকে কাঁচা ঘাস হিসেবে খাওয়ানো যায়।

কীভাবে চাষ করবেন ?

বীজ সাধারনত দুই ভাবে চাষ করা যায়।আপনি চাইলে ছিটিয়ে বীজ লাগাতে পারেন আবার আপনি চাইলে সারি করেও লাগাতে পারেন।
বাংলাদেশের কোন কোণ স্থানে দেখা যায় বর্ষার শেষে ধানের জমি হতে পানি চলে যাওয়ার পর ছিটিয়ে দেওয়া হয়।আবার চর ও হাওড় এলাকায় পানি চলে যাওয়ার পর অথবা চাষ দিয়ে ছিটিয়ে বুনলেফলন ভাল হয়।তাছাড়া রাস্তার ধারে,বাঁধের ঢালে বীজ বুনে দিলেও ভাল ফলন পাওয়া যায়।যদিই জমি উঁচু হয় সেক্ষেত্রে হালকা রকমের ৩-৪ বার চাষ ও মই দিয়ে বুনতে হবে।

তবে লাইন বা সারি করে বীজ বপন করলে ফলন ভাল হয়।সারিতে বীজ বপন করলে শ্রী থেকে সারির দূরত্ব ৩০সেঃমিঃ এবংগ্রাছ থেকে গাছের দূরত্ব ১০ সেঃমিঃ রাখতে হবে।বীজ ৩-৪ সেঃমিঃ গভীরতায় বপন করলে ভাল হয়।

কি পরিমান বীজ লাগতে পারে?

প্রতি একর প্রতি ৮-১০ কেজি বীজ হলে মোটামুটি ভাল উৎপাদন আশা করা যায়।

কিভাবে সার প্রয়োগ ও পানি সেচ দিবেন?

খুব সহজ।মাস কলাইয়ের জন্য তেমন সার বা সেচের প্রয়োজন হয় না।জম তৈরি করার সময় একর প্রতি ২০ কেজি টিএসপি ও ১০ কেজি ইউরিয়া সার দিলে চমৎকার উৎপাদন পাওয়া যাবে।এছাড়া যদি খামারের গোবর জমি চাষের সময় দিয়ে দেন ভাল ফলন পাওয়া যাবে।

কি কি রোগ হতে পারে?

ভাগ্য খারাপ হলে এ ঘাসের হতে পারে বিভিন্ন রোগ ।যেমনঃ

  1. হলুদ মোজাইক ভাইরাস সংক্রমন
  2. সারকো স্পাইরা ক্রয়েন্টা ছত্রাম সংক্রমন
  3. পাউডারি মিল ভিউ ইত্যাদি

তবে যে রোগই হোক না কেন, দ্রুত নিকতস্থ কৃষি বিভাগে যোগযোগ করে ব্যবস্থা নিতে হবে।

কখন ঘাস গরুকে খাওয়ানোর উপযোগী হয়?

বীজ বপনের ৫০-৬০ দিন পর ঘাস গরুকে খাওয়ানোর উপযোগী হয়।এ সময় ঘাস কাটতে হবে।

ফলন কি পরিমান হয়?

সবুজ ঘাস হিসেবে কাটলে একর প্রতি ১০ টন হয়ে থাকে।তবে ভাল ভাবে চাষ করলে একর প্রতি ফলন ১২-১৫ টনও হতে পারে।

কিভাবে খাওয়াবেন?

আপনি চাইলে গরুকে চড়িয়ে খাওয়াতে পারেন।তবে সে ক্ষেত্র ঘাস অপচয়ের সম্ভাবনা থাকে।তাই ঘাস কেটে খাওয়ানোই উত্তম।

এটি কি শুকিয়ে সংরক্ষন করা যায়?

উত্তর হল “হ্যাঁ”।এটি সবুজ অবস্থায় কেটে শুকিয়ে সংরক্ষন করা যায়।

আরো জানতে পারেনঃ

১। ভূট্টা ঘাস চাষ পদ্ধতি

সহজ পদ্ধতিতে পাংচুং ঘাস চাষ

পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২০ বছর পূর্তি উদযাপন

0


পার্বত্য চট্টগ্রাম শান্তি চুক্তির ২০ বছর পূর্তি উপলক্ষে রাঙ্গামাটি জেলা পরিষদ হতে একটী বর্নাঢ্য র‍্যালী শুরু হয়ে রাঙ্গামাটি পৌরসভা প্রঙ্গনে এসে শেষ হয়।র‍্যালী শেষে এক আলোচনা সভা অনুষ্টিত হয়।

র‍্যালীতে অংশ গ্রহন করেন রাঙ্গামাটি প্রাণিসম্পদ বিভাগ।এই কার্যক্রমে অংশ গ্রহন করার জন্য প্রাণীসম্পদ পরিবারের সকলকে আন্ত্রিক ধন্যনাদ জ্ঞাপন করছি।

ডাঃসুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিদম্পদ কর্মকর্তা(অঃদাঃ)
রাঙ্গামাটি সদর

Workshop on Curriculam Development for AFSP III

0


A workshop was arranged by Aggrivultuaral and Food security project (AFSP) in Chittagong Hill Tracts, Phase II on curriculam Development for Phase III.

A day long activites was run in Conference Room of ASHIKA,Rangamati.The Govt. & Non-Govt Officials,Social leader,Field worker and many other participants of several discipline were present there.

Many tropics were come out from the workshop to include in the new curriculum special food safety.The room adviced to add tropics about antibitic use and miss use in agricultural product,production of organic food and many other health related issues need to be included in the future curriculum.

At last all participants agreed to made an updated eco-friendly curriculum for AFSP III.

Dr.Suchayan Chowdhury
Upazila Livetock officer (inchr)
Rangmati sadar,   Rangamti

error: Content is protected !!