Home Blog Page 13

খামারীর ঘরে প্রাণিসম্পদ সেবা…..

0


 

অধিক মাংস উত্তপাদনকারী গরু ব্রাহমা পালনে উতসাহিত করার উদ্দেশ্যে, যেসব খামারের গাভীকে ব্রাহমা জাতের বীজ দিয়ে কৃত্রিম প্রজনন করানো হয়েছে তাদেরকে বিনামূল্যে কৃমিনাশক ঔষধ বিতরন করা।তবে দেওয়া হয় সরাসরি খামারীর খামারে গিয়ে।

এ কাজে সরাসরি যোগ দিয়েছিলে রাঙ্গামাটি জেলার সুযোগ্য জেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা ডা:মনোরঞ্জন ধর মহোদয়।সাথে আমি ডা:সুচয়ন চোধুরী,উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অ:দা:)।

আর এই বিষয়টি আয়োজনে সব চেয়ে বড় দায়িত্ব পালন করেছেন সহকর্মী ভিএসএ(এ,আই) দীপল চাকমা।

দীপল বাবু ব্রহমা জাতের গরুর বীজ খামারীদের কাছে পৌঁছানোর জন্য নিয়মিত চেষ্টা করে যাচ্ছেন এবং এ কাজে তিনি সফলও হয়েছেন।

ডা:সুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অ:দা:)
রাঙ্গামাটি সদর

শীতকালীন ঘাস চাষ (পর্বঃ১): ভূট্টা চাষ

0



শীত কাল দরজায় এসে কড়া নাড়ছে।আর সাথে সাথে ঘাস লতা পাতা শুকিয়ে যাচ্ছে।তাহলে গরু খাবে কি?
সেটাই তো ভাবছেন! কিছু ভাববেন না।শীতে ভাল ফলন হয় এরকম অনেক ঘাস আছে।এ ঘাসগুলো শীতেই ভাল হয়।বলুন তো সে গুলো কি?আমি কয়েকটির নাম বলছি

  1. ভূট্টা
  2. মাসকলাই
  3. কাউপি
  4. খেসারী
  5. জোয়ার
  6. বাজরা
  7. বালি
  8. ওটস
  9. জাম্বু
  10. ট্রিটিক্যালি ইত্যাদি

প্রথমে আসি ভূট্টার কথায়।ভূট্টা গরু,ছাগলের জন্য খুবই পুষ্টিকর একটি খাদ্য।এর পাতা,ফল,গাছ সবই খাদ্য হিসেবে ব্যবহার যায়।আপনি কি জানেন বাংলাদেশে কত ধরনের ভূট্টা আছে।তাহলে প্রথমেই আমরা জানব ভূট্টার জাত সম্পর্কে।

জাতঃ

বাংলাদেশে অনেক ধরনের ভূট্টা আছে।তন্মধ্যে উল্ল্যেখ্য যোগ্য হল সাভার-১,বর্নালী,শুভ্রা,খই ভূট্টা,জেমি।ডি,এম,আর ইত্যাদি।তবে কাঁচা ঘাসের জন্য সবচেয়ে ভাল হল সাভার-১।আসুন জেনে নেই এটি কীভাবে চাষ করতে হবে?

কোন ধরনের জমিতে চাষ করবেন?

সাধারনত সবধরনের মাটিতেই এটি চাষ সম্ভব তবে বেলে ও ভারী এঁটেল মাটি এ ঘাস চাষ না করাই ভাল।রবি মৌসুমে  উঁচু ও মাঝারি জমি এবং খরিপ মৌসুমে উঁচু জমি যেখানে পানি জমে না সেখানে  ঘাস ভাল জন্মে।মোট কথা জমিতে পানি জমে থাকলে সে জায়গাতে ভূট্টা চাষ না করাই উত্তম।

বীজ বপনের উপযুক্ত সময় কখন?

সেই কথা তো আগেই বললাম।সাধারনত অক্টোবর/নভেম্বর মাসে এবং মার্চ/এপ্রিল মাসে যেসমস্ত জমিতে পানি জমে থাকে না সেখানে এ ঘাস চাষ করা বুদ্ধিমানের কাজ হবে।তবে যদি মনে করেন আপনি বীজ উৎপাদনের জন্য চাষ করছেন,তাহলে রবি মৌসুমই ভাল হবে।

বীজ কি নিয়মে লাগাবেন?

প্রথমে ভাবতে হবে আপনি কি কাঁচা ঘাসের জন্য লাগাবেন নাকি ভূট্টা গাছ অথবা ভূট্টার জন্য লাগাবেন।যদি এমন হয়,আপনি শূধু কাঁচা ঘাসের জন্য লাগাবেন তাহলে বীজ ঘন ভাবে বপন করতে পারেন।আর যদি ভূট্টা গাছ এবং দানা নিতে চান তাহলে তো অবশ্যই একটূ ফাঁকা ফাঁকা করে লাগাতে হবে।

সাধারনত দুই সারির মাঝখানে দূরত্ব ৩০ সেন্টি মিটার বা ১ ফুট রাখতে পারেন।আর দুই গাছের পাঝে দূরত্ব হবে ৫-৮ ইঞ্চি বা ২-৩ ফুট।

কতটুকু বীজ লাগবে?

প্রতি একরে যদি আপনি ২০-৩০ কেজি ভূট্টা লাগান তাহলে প্রচুর কাঁচা ঘাস পাবেন।আর যদি ভেব থাকেন যে দানা উৎপাদন করবেন তাহলে একর প্রতি ১০-২০ কেজির বেশি না লাগানো ভাল।

বীজ লাগাবেন কি ভাবে?

বীজ লাগালোর পূর্বে জমি তৈরি করে নিতে হবে।সে ক্ষেত্রে আপনাকে যেটা করতে হবে তা হল জমি ৩-৪ বার চাষ দিয়ে ভাল করে আগাছা মুক্ত করে নিতে হবে।

ঘাসের জন্য হলে,
এরপর ১ ফুট দূরত্বে সারি করে নিয়ে সারি বরাবর কাঠের হাত লাঙ্গল দিয়ে ১-১.৫ ইঞ্চি গর্ত করে নিয়ে গর্তের মধ্যে  ২-৩ ইঞ্চি পরপর বীজ ফেলে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।
দানার জন্য হলে,
১ ফুট দূরত্বে সারি করে নিয়ে সারি বরাবর কাঠের হাত লাঙ্গল দিয়ে ১-১.৫ ইঞ্চি গর্ত করে নিয়ে গর্তের মধ্যে  ২-৩ ইঞ্চি পরপর বীজ ফেলে মাটি দিয়ে ঢেকে দিতে হবে।পরবর্তীতে দুই সারির মাঝখানের সারি তুলে পশূকে খাওয়াতে হবে ফলে দুই সারিরি দূরত্ব হয়ে যাবে ২ ফুট।তাছাড়া প্রতি  সারি থেকে মাঝে মাঝে ঘাস কেটে পাতলা করে ফেলতে হবে।ফলে একই লাইনে দুই গাছের দূরত্ব হবে ৮-১০ ইঞ্চি।

সার কতটুকু প্রয়োগ করবেন?

রবি মৌসুমে একর প্রতি

সার পরিমান (কেজি)
ইউরিয়া ১১০-১৩০
টিএসপি ৭০-৯০
এমপি ৫৫-৯০
জিপসাম ৬০-৭০
গোবর ২০০০

 

খরিপ মৌসুমে একর প্রতি

সার পরিমান (কেজি)
ইউরিয়া ৯০-১১০
এমপি ৫৫-৯০
জিপসাম ৪০-৬০
গোবর ২০০০
সার কীভাবে প্রয়োগ করবেন?

চাষ দেওয়ার শেষের দিকে এক-তৃতীয়াংশ (৩০-৪০ কেজি)ইউরিয়া ও অন্যান্য সারের সবটুকু জমিতে ছিটিয়ে দিয়ে মাটির সাথে ভাল ভাবে মিশিয়ে দিতে হবে।বাকি থাকে দুই-তৃতীয়াংশ ইউরিয়া।

যদি রবি মৌসুম হয় তাহলে বীজ গজানোর ৪০-৪৫ দিন পর( ৮ পাতার সময়) এই ইউরিয়ার অর্ধেক  ছিটিয়ে দিতে হবে।বাকি অর্ধেক দিতে হবে পুরুষ ফুল বের হওয়ার আগে অর্থাৎ বীজ লাগানোর ৭০ – ৭৫ দিন পর।

আর যদি খরিপ মৌসুম হয়,সেক্ষেত্রে বীজ গজানোর ২০-২৫ দিন পর বাকি ইউরিয়ার অর্ধেক অর্থাৎ ১৫-২০ কেজি উপরি প্রয়োগ করতে হবে।বাকি ১৫-২০ কেজি প্রয়োগ করবেন ৪০-৪৫ দিন বয়সে।এখানে খেয়াল রাখতে হবে,সার প্রয়োগের সময় জমিতে যেন পর্যাপ্ত রস থাকে।

জমিতে কখন সেচ দিবেন?

রবি মৌসুম অর্থা শীত কালে চাষ করলে সেচ দেওয়া প্রয়োজন।তবে এটি জমি ও মাটির প্রকারের উপর ভিত্তি করে কম বেশি হতে পারে।

সাধারনত বীজ গজানোর ৩৫-৪০ দিন পর প্রথম সেচ দিতে হয়।এরপর ফুল আসার পূর্বে অর্থাৎ ৭০-৭৫ দিন পর দ্বিতীয় বারের মত সেচ দিতে হয়।অবশেষে যখন গাছে দানা বাঁধতে শুরু করে তখন অর্থাৎ ৯০-১০০ দিন বয়সে যদি প্রয়োজন হয়  তাহলে তৃতীয়বারের মত সেচ দেওয়া যেতে পারে।

কাঁচা ঘাস কখন গরুকে খাওয়াবেন?

আপনি যখন ঠিক মত সার পানি দিতে থাকবেন,দেখবেন তর তর করে ঘাস গুলো কড় হয়ে উঠছে।তখন থেকে আপনি ঘাস হিসেবে কেটে এই ঘাস গরুকে খাওয়নো যায়।এসময় চাইলে আপনি সাইলেজও তৈরি করতে পারেন।
তবে ফুল আসার আগ মুহুর্তে বা ৫-১০% গাছে যখন ফুল আসেই সেই সময়টি গাছ কেটে বা সাইলেজ বানিয়ে গরুকে খাওয়ানোর উপযুক্ত সময়।

দানা কখন সংগ্রহ করবেন?

দানা সংগ্রহ করতে হলে মোচা পাকার জন্য সময় দেওয়া জরুরী।আর যদি বীজের জন্য হয় তাহলে অবশ্যই বীজ পাকতে হবে।তা না হলে দানা সংগ্রহের কিছু দিনের মধ্যেই ফাংগাস এবং বিভিন্ন ধরনের পোকামাকড় দানা ফুটোফুটো করে ফেলবে।আর দানাটি ছোবড়া হয়ে পড়ে থাকবে।এজন্য মোচা পেকেছে কিনা খেয়াল রাখতে হবে।কিভাবে বুঝবেন?খুব সহজ! মোচা খড়ের রং ধারন করে কিছুটা হলুদ বর্ন ধারন করলে  বুঝতে হবে মোচা পেকেছে।এসময় মোচা থেকে ছড়ানো বীজে গোড়া পরীক্ষা করলে কালো গোড়া দেখা যাবে।

বপনের পর কখন ফসল পাওয়া যায়?

বপনের ৫০-৬০ দিন পরেই আপনি ঘাস কেটে গরূকে খাওয়াতে পারবেন।

কত কেজি ঘাস পাওয়া যাবে?

প্রতি একরে গড়ে ১০-১২ টন ঘাস পাওয়া যেতে পারে।

তাই শীত কালে আর ঘাসের চিন্তা করেতে হবে না ।আজই নেমে পড়ুন ঘাস চাষের কাজে।আগামী পর্বে মাসকলাই চাষ নিয়ে লিখব।সেই পর্যন্ত www.facebook.com/farmerhope.page এ like দিয়ে সাথেই থাকুন।

পাকচুং ঘাস কীভাবে চাষ করবেন সেটা এই লিংক থেকে জেনে নিতে পারেন।

পশুকে কৃমি আক্রমন থেকে বাঁচানোর উপায় (পর্ব-১): গোল কৃমি

4



গরু বলেন আর ছাগল বলেন শরীরে ভিতরে লাখে লাখে ঝাঁকে ঝাঁকে কৃমি থাকলে সেই গরুকে দিয়ে আর কিচ্ছুই হবে না। না দিবে দুধ না হবে মাংস।আর আপনার সব শ্রম যাবে বৃথা।তাই গরুকে কৃমি মুক্ত রাখতে পারলেই এসব ঝামেলা শেষ। আপনি হবেন সফল খামারী।আপনি চাইলে ঔষধ খাওয়ায়ে কৃমিকে ঠেকাতে পারেন।কিন্তু তা কতটুকু, তা কি ভেবেছেন?তবে বিষয়টা যদি এমন হয়,আপনার পশুর শরীরে কৃমি বাসা বাঁধার আগেই আপনি তাকে আটকাই দিলেন।হুম,এটাই হবে বুদ্ধিমানের কাজ।

এটা করতে গেলে আপনাকে জানতে হবে কৃমি পশুর শরীরে বাসা বাঁধে কি ভাবে?সেটাই আজকে বলব।
পশুর শরীরের মুলত পেটের মধ্যে যে সমস্ত কৃমি বাসা বাঁধে তাদেরকে তিন ভাগে ভাগ করা হয়।

১। গোল কৃমি

২। কলিজা কৃমি
৩। ফিতা কৃমি

একেকটা কৃমি একেক ভাবে পশুকে ঘায়েল করে।প্রথমে বলি গোল কৃমির কাণ্ড কারখানা।
এই কৃমি গুলো পেটের অলিতে গলিতে ঘুরে বেড়ায় এমন কি ফুসফুসে পর্যন্ত বাসা বাধঁতে পারে।
বাচ্চা বয়সে এই কৃমির বাচ্চাগুলো(Larvae)গুলো ঘাস বা মাটির মধ্যে ঘাপটি মেরে বসে থাকে।যার যখনি পশু ঐ ঘাস খায় অমনি কৃমির বাচ্চা পেটের ভিতর ঢুকে যায়।ঢুকেই সে তার কাণ্ড কীর্তি শুরু করে দেয়।

লার্ভা

এই বাচ্চাগুলো পেটের মধ্যে রাজার হালে খেয়ে দেয় বড় হয়ে বিয়ে সাদি সংসার শুরু করে।আর মহিলা কৃমিগুলো ডিম পাড়া শূরু করে।এই বাচ্চা থেকে ডীম পাড়ার জন্য ২- ৪ সপ্তাহই যতেষ্ঠ।এই ডিম গুলো পশুর পায়খানা মাধ্যমে গোবরের সাথে মিশে পশূর শরীরে বাইরে চলে আসে।

কৃমির ডিম

কয়েকদিনের মধ্যে ডিম ফুটে বাচ্চা বের হতে থাকে।আর গায়ে গোতরে বড় হতে থাকে অন্য পশূর পেটে ডূকার জন্য। ডিম থেকে ফুটে বাচ্চা হওয়া পর্যন্ত সময়টা গরম কালে কয়েকদিন হলেও শীত কালে কিন্তু কয়েক সপ্তাহও লাগতে পারে।

এই লার্ভা দ্বারা আক্রান্ত ঘাস বলেন আর মাটি বলেন অথাবা অন্য খাবার বলেন,খেলেই এই কৃমি দ্বারা আক্রান্ত হওয়ার সমূহ সম্ভবনা থাকে।

কখন পশূ বেশি আক্রান্ত হয়?

সাধারনত বসন্ত কালে এবং শরতের শুরুর দিকেএ রোগের প্রাদূর্ভাব বেশি দেখা দিতে পারে।কারন এই সময়
সময় মাটির নীচে লুকিয়ে থাকা কৃমির বাচ্চা (Larvae) গুলো ঘাসের উপরে উঠে আসে আর ওত পেতে বসে থাকে শিকার ধরার জন্য।তাই এই সময়ে পশূকে ঘাস এবং খাদ্য খাওয়ানোর সময় সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে।
তবে শীতকালে এর দৌরাত্ত্ব তুলনা মুলক ভাবে অনেক কম থাকে।

গোল কৃমি পশুর কি ক্ষতি করে?

পেটের ভিতরের পাকস্তলীর একটা অংশে (Abomasum) তার ছিদ্র করে ঢুকের পড়ে রক্ত নালীর মধ্যে আর আরা করে রক্ত খেতে থাকে। ফলে পশুর দেহের রক্ত চলের যায় কৃমির পেটে।এদিকে পশুর  শরীর হয়ে যায় রক্ত শুন্য (Anaemeia).শরীরের রক্ত শূন্যতা দেখা দিলে পশূ মারাও যেতে পারে।

পাকস্থলীতে কৃমি

আরো মারাত্মক হল এটা পাকস্তলীর (Abomasum) এর গায়ে লেগে থাকা বিভিন্ন গ্রন্থি (Gland) ছিদ্র করে ফেলে।এই গ্রন্থগুলো থেকে মুলত হজম রস (Enzyme) বের হয় বের হয়। এই গ্রন্থিগুলো নষ্ট হওয়ার কারনে আর হজম রস বের হয় না।তাই পশুকে যতই খাওয়ান না কে হজম আর হবে না।ফলে দেক্ষা যাবে পশু মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা করে। আর ধীরে ধীরে শুকিয়ে যায়। ফলশ্রুতিতে কংকাল সার গরু ছাগলে আপনার খামার ভরে যাবে।

কীভাবে বুঝবেন আপনা খামারে গোল কৃমির সংক্রমন আছে?

শরীরে কৃমির পরিমান যদি কম হয় তাহলে পশূর শরীর এটা মেনে নেয়।তাই কিছুই বুঝা যায় না।কিন্তু যদি লোড বেশি হয় তাহলে পশু মাঝে মাঝে পাতলা পায়খানা করবে।আর লোড তার চেয়েও বেশী হলে পশু নিয়মিত পাতলা পায়খানা করবে।আর রুচি কমে যাবে।পরবর্তীতে পশু শুকিয়ে যায়।আর সর্বশেষ ফলাফল অকাল মৃত্যু।

কীভাবে এই কৃমির ব্যাপারে নিশ্চিত হবে?

খুব সহজ ।আপনি সন্দেহ জনক পশুর গোবর নিয়ে নিকটস্থ প্রাণিসম্পদ দপ্তর, এফ,ডি,আই,এল, সিডিআইএল এ পরীক্ষা করাতে পারেন।অথবা কোন বেসকারী প্রতিষ্ঠান (যদি থাকে) সেখান থেকেও পরীক্ষা করে এই কৃমির ব্যাপারে নিশ্চিত হতে পারেন।

কীভাবে প্রতিরোধ করবেন?

এই কৃমি প্রতিরোধের জন্য এখন বাজারে অনেক ধরনের কৃমি নাশক পাওয়া যায়।সাধারন বসন্তের আগে এবং শরতের শুরুতে কৃমি নাশক প্রয়োগ করলে এই কৃমিকে আটকানো যাবে।কারন এই সময় ঔষধ প্রয়োগ করলে প্রাপ্ত বয়স্ত কৃমিগুলো মারা যারা এবং বাচ্চা কৃমিগুলোও আর বড় হতে পারবে।আর আপনার পশূ থাকবে নিরাপদ।

আগামী পর্বে কলিজা কৃমির ভয়াবহতা নিয়ে লিখব সেই পর্যন্ত

www.facebook.com/farmerhope.page এ like দিয়ে সাথে থাকুন।

বাচুরকে দুধ কতটুকু খাওয়াবেন?

0


 

 

উত্তর খুব সহজ! বাচুরের যতক্ষন না পেট ভরে।কিন্তু এটা কি তার জন্য পর্যাপ্ত না কি কম বা বেশি।যদি গরু ফ্রিজিয়ান বা উন্নত কোন জাতের তাহলে তো সেটা ২০-২৫লিটারও দিতে পারে।আর বাচুর যদি মন ভরে খেতে থাকে তাহলে কি হবে চিন্তা করুণ তো! সর্বনাশ!! হতে পারে পাতলা পায়খানা,পেট ফোলাসহ অনেক ঝামেলা।সর্বশেষ পরিনতি মৃত্যুও হতে পারে।

আর বিষয়টা যদি তার উলটো হয় তাহলে কি হবে।একটা একশত কেজি ওজনের দেশী রোগা গাভী তার বাচুরকে কতটুকু দুধ দিতে পারে,যদি সারা দিনও বাচূর দুধ খায়।আর যদি বাচুর হয় দেশি এবং ফ্রিজিয়ানের ক্রস তাহলে তো আর কথাই নেই।না খেয়ে খেয়ে বাচুরটি হবে দূর্বল।তার ভবিষ্যত কি হবে ভাবুন তো!সেটা কি ভবিষ্যতে ভাল গাভী হতে পারবে।উত্তর অবশ্যই “না”।

দুধ বেশী খাওয়ান আর কম খাওয়ান দুটোই খারাপতাই বাচুর কে পর্যাপ্ত দুধ খাওয়াতে হবে।তাহলেই ভবিষ্যতে ভাল গাভী পাবেন।পাবেন ভাল ষাড়।
কিন্তু সেই পর্যাপ্ত পরিমানটা কতটুকু।এক মিনিট ভাবুন??

এবার বলি শুনুন, যদি বাচুরের ওজন হয় ৩০ কেজি তাহলে তাকে দুধ দিতেহ হবে দৈনিক তিন কেজি।এভাবে চল্বা জন্মের পর তিন সপ্তাহ।

এর পরে বাচুরের ওজন ৩০ কেজি হলে দৈনিক দুধ দিতে হবে ২ কেজি।এই হিসেবে চলবে আরো দুই সপ্তাহ।তাহলে মোট পাঁচ সপ্তাহ গেল।

এবার আপনি প্রতি ২০ কেজি ওজনের জন্য ১ কেজি করে দুধ দিলেও চলবেতাহলে বাচুরের শরীর স্বাস্থ্য ভাল থাকবেআর ভবিষ্যতে আপনার খামার লাভজনক হয়ে  উঠবে।

ডাঃসুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা(অঃদাঃ)
রাঙ্গামাটি সদর,রাঙ্গামাটি

আরো জনতে হলে নিচের লিংকগুলো ক্লিক করতে পারেন

১। ডেইরী খামারে ওলান ফোলা রোগ নিয়ন্ত্রনে ১০ টি কৌশল
২। কিভাবে বুঝবেন আপনার গরু ডাকে আসছে?
৩। গরুর স্বাভাবিক তাপমাত্রা কত?
৪। গরুর রক্ত প্রশ্রাব কি করবেন?

Farmer Hope ব্রয়লার খামার পরিকল্পনা (পর্ব-৬): প্রথম বাচ্চা গ্রহনের পর করনীয়

0

 

বাচ্চা তুলার আগে নিশ্চিত হতে হবে আপনার খামারটি সম্পূর্নভাবে বাচ্চা তোলার জন্য প্রস্তুত।এরপর সুবিধা জনক সময়ে সুবিধাজনক দামে বাচ্চা খামারে নিয়ে আসবেন।খামারে আনার পর যত দ্রুত সম্ভব বাচ্চা লিটারে ছেড়ে দিতে হবে।তবে তার খেয়াল করতে হবে বাচ্চা ছাড়ার আগে পানির পাত্র বসানো হয়েছে কিনা! আর পানির তাপমাত্রাটা হওয়া চাই স্বাভাবিক।অধিক ঠান্ডা বা অধিক গরম পানি বাচ্চা জন্য ভয়ংকর ক্ষতি ডেকে আনতে পারে।

মনে রাখবেন যে লোক বাচ্চা নিয়ে যে যেন খামারে না ডুকে।কারন তার মাধ্যমে হাজার হাজার জীবানু খামারের মধ্যে ডুকতে পারে যা আপনার খামারের বারটা বাজানোর জন্য যতেষ্ঠ।তাই বাচ্চা আনার আগেই ঠিক করে নিতে হবে কে বাচ্চা আনবে আর কে খামারের ভিতরে থাকবে।

যদি সম্ভব হয় তাহলে সকাল বেলা বাচ্চা খামারে তোলাই ভাল।কারন এ  সময় আবহাওয়া অনেকটা ঠাণ্ডা থাকে।আর যদি তা করতে পারেন তবে যা করতে পারেন তাই করবেন।

বাচ্চা গ্রহনের সময় বাক্সের মধ্যে মৃত বাচ্চার সংখ্যা হিসাব করে নিতে হবে।আর সেটা রেজিষ্টারে লিখে রাখতে পারেন।আর সেই সংখ্যা যদি বেশি হয় তাহলে কি করতে হবে তা আমার চেয়ে আপনারা ভাল জানেন।

বাচ্চা ছেরে দেওয়ার পর তাদের আচরন ও গুনাগুন ভালভাবে লক্ষ্য রাখতে হবে।সাধারনত বাচ্চা ছাড়ার একটু পর থেকেই ছোটা ছুটি শুরু করে দেয় আর একি স্বরে চিঁ চিঁ শব্দ করে।এটাই স্বাভাবিক।যদি দেখেন মুরগী আলাদা আলাদা স্থানে দল পাকাচ্ছে তাহলে বুঝবেন তারা পনার ক্ষতির চক্রান্ত করছে।তারা যদি সিদ্ধান্ত নেয় যে তারা সবাই এক সাথে অসুস্থ হয়ে পড়বে তাহলে আপনার খবর আছে!তাই কোন ধরনের বিশৃংখলা দেখলেই নিকটস্থ অভিজ্ঞ রেজিষ্টার্ড পোল্ট্রি চিকিতসকের সাথে যোগাযোগ করে ব্যবস্থা নিতে হবে।আর না নিলে ২-৩ দিনের মধ্যে বুঝতে পারবেন কি ঘটবে।দায়িত্ব আপনার।

নতুন নাদুস নুদুস বাচ্চা গুলো অনেক সময় পানি পর্যন্ত খেতে চায় চাই।সেরকম যদি হয় তাহলে তাকে জামাই আদর করে পানি খাওয়াতে হবে।দেখবেন দুই একবার আদর পেলে সে নিজেই ঘর জামাইয়ের মত হয়ে যাবে।তার খাবার নিয়ে আপনাকে আর ভাবতে হবে না।
আপনি কি দেখেছেন বাচ্চা ছাড়ার সময় খামারে ভিতরের তাপমাত্রা কত?সেটা কিন্তু অবশ্যই ৯৫ ফারেন হাইট হওয়া চাই।খামারের তাপমাত্রা কিরকম হবে সে বিষয়ে আলাপ হবে আগামী পর্বে।
সেই পর্যন্তwww.facebook.com/farmerhope.page like দিয়ে সাথেই থাকুন।
 

 

ডাঃসুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা(অঃদাঃ)
রাঙ্গামাটি সদর

আরো জানতে নিচের লিংকগুলোতে ক্লিক করতে পারেন

১। পর্ব-১ঃ আপনি কি ভাবছেন ব্রয়লার খামার করবেন?

২। পর্ব-২ঃ প্রতি ব্যাচে মুরগীতে কত খরচ হতে পারে?

৩।পর্ব-৩ঃ প্রতি মুরগীর জন্য কত জায়গা   প্রয়োজন?(গ্রীষ্ককাল)

৪।পর্ব-৪ঃ প্রতি মুরগীর জন্য কত জায়গা প্রয়োজন?(শীতকাল)

৫। পর্ব-৫ঃ মুরগী তোলার আগের প্রস্তুতি

৬। পর্ব-৬ঃ প্রথম বাচ্চা গ্রহনের পর করনীয় 


গরু মোটাতাজাকরনে খামারীর প্রশ্নোত্তর(পর্ব-১):দানাদার খাদ্যের মিশ্রন কেমন হবে?

0


উত্তরটা খুব সহজ।

যে খাবার খেলে গরুর শরীরের সব ধরনের চাহিদা পূর্ন হবে সে ই খাবারই খাওয়ারতে হবে।যাকে বই পুস্তকের ভাষায় সুষম খাদ্য বলে।

এই তালিকার প্রথমেই রাখব ঘাস আর পানি।আর দ্বিতীয়তে হল দানাদার খাদ্য।

যদি আপনি ১০ কেজি ওজনের খাদ্য মিশ্রন তৈরী করেন সেখানে গমের ভূষি রাখতে পারেন ২৫০০ গ্রাম আর তিলের খৈল ২০০০ গ্রাম।এই দুটিতে প্রচুর পরিমান আমিষ আছে।
চাউলের কুড়া রাখতে পারেন(তুষ ছাড়া) ১৫০০ গ্রাম এতে আর আমিষ,শর্করা দুটিই পাওয়া যাবে পর্যাপ্ত পরিমানে।

শর্করার উৎস হিসেবে দিতে পারেন চাউলের খুদি(জাউ রান্না) ১৫০০ গ্রাম।তবে সাথে অল্প আদা যোগ করতে হবে

বাড়তি আমিষের জন্য খেশারী ভাংগা ২০০০ কেজি যুক্ত করতে হবে যাতে আমিষ পাওয়া যাবে প্রায় ১৩%।

যদি গরুর হাড়-গোড় শক্ত করতে চান তাহলে ডিসিপি যোগ করতে পারেন ২৫০ গ্রাম আর সব শেষে লবন তো থাকবেই সেটা ২০০ গ্রামের মত দিলে হবে।

আপনি হয়ত ভাবছেন একটু ভিটামিন টিটামিন খাওয়ালে মনে সখের গরুটি আরো সুন্দর হবে।তাই আপনার জন্য বলছি,এই মিশ্রনে আপনি ভালো মানের ভিটামিন মিনারেল প্রিমিক্স, যেমনঃ মেগাভিট ডিবি,রেনাভিট ডিবি,ভিটামিক্স ডিবি বাঁ অন্য কোন ভাল মানের ডিবি পাউডার ৫০ গ্রাম যুক্ত করতে পারেন।হয়ে গেল ১০ কেজি দানাদার খাদ্যের মিশ্রন।

error: Content is protected !!