খামার যদি হয় বিনোদন!
রাঙ্গামাটি শহরের ভেদভেদি এলাকায় ছোট একটি ডেইরী খামার গড়ে তুলেছেন খামারী সমীর দে। নিজের মূলপেশার পাশাপাশি অবসর সময়টি আনন্দময় করে তুলেন খামারে কাজ করেন।
আনন্দের পাশাপাশি লাভবানও হয়েছেন তিনি। তাই তিনি অন্যদেরকেও ব্যক্তিগত কাজের পাশাপাশি একটা বা দুইটি গাভী পালনের জন্য পরামর্শ দেন তিনি।
উনার বিশ্বাস, ডেইরী ফার্ম করলে কখনো ক্ষতির সম্মুখীন হতে হয় না। যদিও ক্ষতি বলে কেউ মনে করে থাকেন, এটা সাময়িক।
উনি মনে করেন উন্নত ঘাস খাওয়ালে গাভীর স্বাস্থ্য যেমন ভাল থাকে তেমনি দুধের উৎপাদনও বাড়ে এমনকি দানাদার খাদ্যের উপরও চাপ কম পড়ে।
তাই ৫০ শতক জায়গার উপর তৈরী করেছেন পারা ঘাস প্লট।দখলে মন জুড়িয়ে যায়।।
উনার অবর্তমানে উনার সচেতন স্ত্রীর এক হাতে খামারের সব কাজ সামলে নেন।ফলে তার অবর্তমানে খামারের দেখা শুনা নিখুত ভাবে চলতে থাকে।
গাভীর কৃত্রিম প্রজনন থেকে শুরু করে, টিকাবীজ প্রদান ও বিভিন্ন সময়ে প্রয়োজনমত গবাদিপশুর চিকিৎসা সহ খামার সম্পর্কিত সব বিষয়ে উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস, সদর, রাঙ্গামাটি সব সময় উনার পাশে ছিল থাকবে, এই প্রত্যয় ব্যক্ত করছে।
যারা খামার করব করব ভাবছেন কিন্তু অন্য পেশায় জড়িত,তাদের জন্য উনি উদাহরন হয়ে রইল।
ডা:সুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অ:দা:)
রাঙ্গামাটি সদর।
একজন নতুন ডেইরী খামারীর স্বপ্ন
চোখে স্বপ্ন আর বুকে আশা নিয়ে ডেইরী ফার্মীং শুরু করেন সখিনা বেগম, স্বামীঃ নুর আলম, গ্রামঃ আমেনা পাহাড় (ওমদামিয়া পাহাড়), রাঙ্গামাটি।
গাভী পালনের জন্য কর্মসংস্থান ব্যাংক থেকে লোন নিয়েছেন এবং উপজেলা প্রাণিসম্পদ অফিস, সদর, রাঙ্গামাটি থেকে কৃত্রিম প্রজননের জন্য সহায়তা নিয়েছেন। উনার বর্তমানে দুইটি গাভী গর্ভবতী এবং আর একটি বকনা যেকোন সময় ডাক দিতে পারে। উনিই খামারের মূল মালিক।
উনার ইচ্ছা উনার স্বামীকে উনি গাভী পালন করে আর্থিকভাবে সহযোগিতা করবেন এবং উনি যেন গাভী পালনের মাধ্যমে ব্যাংক থেকে নেওয়া ঋণ পরিশোধ করতে পারেন, তাই সকলের দোয়া চেয়েছেন।
আসুন উনি যেন এগিয়ে যান আমরা উনার জন্য দোয়া করি।
সবুজ পাহাড়ে সাদা ভেড়া
শুনেছিলাম,
মাননীয় মন্ত্রীর নিউজিল্যান্ড সফর,
পাহাড়ে দেখলেন ভেড়া পালন,
পালে পালে চরছে ভেড়া,
লাগছে ভীষণ সুন্দর।
পণ করলেন মাননীয় মন্ত্রী,
পালবেন ভেড়া তিনি,
পার্বত্য চট্টগ্রামের পাহাড়ে,
সুন্দর লাগবে আহা রে!
মিটাবেন দেশের আমিষের চাহিদা,
ঘুচবে গরিবেরও দুঃখ দুর্দশা।
যেমন ভাবা তেমন কাজ,
পার্বত্যবাসী দেখল ভেড়ার চাষ,
মাননীয় মন্ত্রীর আশির্বাদ,
মাঝে মাঝে~
রাস্তায় দেখা যায় ভেড়ার ঝাক,
মাননীয় মন্ত্রীর জয় হোক,
ভেড়া পালন স্বার্থক হোক।
……..অসাধারন এই কবিতাটি লিখেছেন এবং ছবি তুলেছেন সহকর্মী দীপল চাকমা।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার পৌরসভা থেকে আসামবস্তি হয়ে কাপ্তাই যাওয়ার পথে মগবান ইউনিয়নে প্রায়ই দেখা মেলে মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রণালয় কর্তৃক গরীব সুফলভোগীদের মাঝে বিনামূল্যে বিতরণকৃত ভেড়ার পাল।
গত বছর “সমাজ ভিত্তিক ও বানিজ্যিক খামারে দেশী ভেড়ার জাত উন্নয়ন ও সংরক্ষন” প্রকল্পের আওয়তায় বিনামূল্যে ভেড়া প্রদান করা হয়।রাঙ্গামাটি সদর উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তরের আন্তরিক তত্ত্ববধানে ভেড়ার সংখ্যা বাড়তে থাকে।যা দৃষ্টি কাড়ে পর্যটকদের।
ডা:সুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অ:দা:)
রাঙ্গমাটি সদর
বৃষ্টি বাদলে ব্রয়লার মুরগীর খামার ব্যবস্থা পনা
বৃষ্টির দিনে ব্রয়লার মুরগীর খামারে পর্যাপ্ত আলো বাতাসের ব্যবস্থা রাখতে হবে
১)কাল বৈশাখীরা বৃষ্টি সময় প্রাচুর বাতাস থাকে তাই।খামারের চাল উড়ে যেতে পারে তাই মাটির সাথে শক্ত খুঁটি পুতে তার শক্ত তার বা দড়ি দিয়ে টানা দিয়ে বাঁধতে হবে যাতে প্রচন্ড বাতাস উড়িয়ে না নিতে পারে।
২) খামারে সব সময় পর্দা ফেলে রাখা যাবে না।বিশেষ করে মুরগীর বয়স ১৫ দিনের অধিক হলে।যখন প্রয়োজন তখন পর্দা ফেলতে হবে।আবার আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পর্দা তুলে দিতে হবে।
৩) মুরগী বড় হয়ে গেলে পর্দা কখনো সম্পুর্ন ফেলা যাবে না।সবচেয়ে ভাল হয় উপরে ২ ফুট খালি রেখে নিচের দিকে পর্দার ফেলা হলে।
৪) খামারে যাতে কোন ভাবে বৃষ্টির পানি ঢুকতে না পারে সেদিকে সতর্ক তগাকতে হবে।
৫) খামারে পর্যাপ্ত আলো বাতাস চলা চলের ব্যবস্থা রাখতে হবে।যাতে করে মুরগী পর্যাপ্ত বাতাস পাই।যা তার বৃদ্ধির জন্য খুব প্রয়োজন।
৬)খামারের লিটার/ভুষি পর্যাপ্ত শুষ্ক রাখার চেষ্ঠা করবেন।
সফল যারা কেমন তার!
নিতান্ত সহজ সরল এই মানুষটির নাম মোঃ সিরাজুল হক। তার গরুর দুধের দাম বাজার দরের চেয়ে কমপক্ষে দশ টাকা বেশি থাকে।বলুন তো কেন? সেই উত্তর আপনারাই দিবেন।কিন্তু তার গবাদি পশু পাখি গুলোর প্রতি সেবার বিষয়ে তার কোন আপোষ নেই।
![]() |
নিজ খামারে মোঃসিরাজুল হক |
রাঙ্গমাটি প্রাণিসম্পদ দপ্তরের রেকর্ড অনুসারে তিনি খামার শুরু করেন ১৯৮২ সালে।সেই থেকে বর্তমানে ৩০+ গরু নিয়ে তার খামারটি চোখে পড়ে রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার রাঙ্গামাটি পৌরসভার আসামবস্তি এলাকায়। বর্তমানে দুধালো গরু আছে ১৫ টি দুধাল গাভী রয়েছে।
রাঙ্গামাটি সদর উপজেলার প্রাণিসম্পদ দপ্তরের সহযোগীতায় কৃত্রিম প্রজনন করিয়ে খামারে এখন মোটামুটি সব গাভীই অধিক দুধ উৎপাদনকারী ক্রস ফ্রিজিয়ান এবং ক্রস জার্সি ।
নিজের খামারের গরুগুলোর খাবারের কথা চিন্তা করে বিশাল এলাকা জুড়ে গড়ে তুলেছেন নেপিয়ার এবংপাকচুং ঘাসের বাগান।তার মতে গবাদি পশু পালনের জন্য কাঁচা ঘাসের কোন বিকল্প নেই।
![]() |
নিজের লাগানো পাকচুং ঘাসের প্লটে খামারী মোঃসিরাজুল হক |
যারা নতুন খামারী,যারা খামার নিয়ে হতাশায় আছেন তাদের জন্য এই পোস্ট।এরকম সফল খামারি আরো অনেক উদাহরন পাওয়া যাবে রাঙ্গামাটিতে ।আর সমগ্র দেশের কথা বললে তো আর কথাই নেই!
তাই বিজ্ঞান সম্মতভাবে খামার করুন আর লাভবান হোন, এই প্রত্যাশা।
ডাঃসুচয়ন চৌধুরী
উপজেলা প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তা (অঃদাঃ)
রাঙ্গামাটি সদর
facebook page :farmer hope