Home Blog Page 3

লাম্পি স্কিন ডিজিজ রোগের কারন,লক্ষন, প্রতিকার ও প্রতিরোধ

0
লাম্পি স্কিন ডিজিজ

লাম্পি স্কিন ডিজিজ(এল,এস,ডি) একটি ভাইরাস ঘটিত রোগ যা মুলত গৃহপালিত গরু এবং মহিষকে আক্রান্ত করে।পশুর গায়ে ফোসকা দেখে প্রাথমিক ভাবে এই রোগ সনাক্ত করা হয়।লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়িয়ে পড়লে গরু পালনের সাথে জড়িত সকলে কম বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়।বিশেষ করে প্রান্তিক খামারীরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়।এই রোগের ফলশ্রুতিতে গরু থেকে মাংস উৎপাদন এবংদুধ উৎপাদন মারাত্মকভাবে ক্ষতিগ্রস্থ হয়।দীর্ঘ স্থায়ী সমস্যা হিসেবে আসে গর্বপাত এবং অনুর্বরতার মত বিষয়গুলো।

কার কারনে হয়?

লাম্পি স্কিন ডিজিজ মুলত একটি ভাইরাস গঠিত রোগ যা লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাস (LSDV) নামক ভাইরাসের কারনে হয়।ভেড়ার এবং ছাগলের পক্স ভাইরাসের সাথে রয়েছে তার দারুন মিল।

কোন কোন প্রাণিতে হতে পারে?

লাম্পি স্কিন ডিজিজ নির্দিষ্ট পোষকের দেহে আক্রমন  করে।এই পোষকের মধ্যে আছে গরু এবং এশিয়ান মহিষ (Bubalus bubalis)। তবে মহিষে আক্রান্ত হওয়ার হার খুব কম।কিন্তু গরুতে আক্রান্ত হওয়ার ঝুঁকিটা বেশি।আশার কথা  হল, লাম্পি স্কিন ডিজিজ মানুষকে আক্রান্ত করে না।

কিভাব ছড়ায়?

লাম্পি স্কিন ডিজিজ ছড়ানোর প্রধান কারন হতে পারে এক খামার থেকে অন্য খামারে,এক স্থান থেকে অন্য স্থানে এমন কি এক দেশ থেকে অন্য দেশে গরু নিয়ে যাওয়া। মুলত এই গরু স্থানান্তরের মাধ্যমে অনেক দূর পর্যন্ত এই ভাইরাস ছড়িয়ে পড়তে পারে। আর মশা,মাছির মাধ্যমে কাছাকাছি স্থানগুলোতে ছড়িয়ে পড়তে পারে।মূলত যে মশা,মাছি গুলো পোষকের দেহ থেকে রক্ত পান করে তারা এই কাজটি করে থাকে। এক এক এলাকায় একেক ধরনের বাহকের মাধ্যমে এই রোগ ছড়াতে পারে।তবে এই রোগের ভাইরাসটি সাধারনত এই সব বাহকের শরীরে বংশ বিস্তার করে না।সাধারনত কিছু মাছি (যেমনঃStomoxys calcitrans), মশা(Aedes aegypti), আঠাঁলি (Rhipicephalus and Amblyomma spp) এই ভাইরাস ছড়াতে পারে।



সাধারনত সরাসরি স্পর্শের কারনের এই রোগ ছড়ায় না,তবে মাঝে মধ্যে হতে পারে।পশু আক্রান্ত হওয়ার পর ভাইরাস রক্তে ছড়িয়ে পড়তে পারে তবে তা অল্প কয়েকদিন থাকে।কিন্তু কিছু কিছু পশুতে এই রোগের সংক্রমন মারাত্মক হলে এই অবস্থা দুই সপ্তাহও থাকতে পারে।যে সমস্ত পশুর চামড়ায় ক্ষত দেখা যায় এবং নাক মুখ দিয়ে লালা ঝড়ে তার মাধ্যমে পশূর সামনের খাবার এবং পানি সংক্রমিত হতে পারে।

অসুস্থ পশুর শরীর থেকে যখন ফোসকাগুলো খসে পড়ে তখন সেখানে যে ভাইরাস থাকে তা নতুন করে রোগ তৈরি করার সামর্থ্য রাখে।অসুস্থ ষাড়ের বীর্যেও এই ভাইরাস থাকতে পারে।তাই এই ষাড় দিয়ে যদি প্রজনন করানো হয় হয় তাহলে গাভীটিও আক্রান্ত হতে পারে।অসুস্থ গাভী থেকে দুধের মাধ্যমে অথবা ওলানের বাটের ক্ষতের মাধ্যমে দুধ খাওয়া বাচুরকে আক্রান্ত করতে পারে।

আক্রান্ত পশুতে ব্যবহৃত নিডল যদি অন্য সুস্থ পশুতে পুশ করা হয় সেক্ষেত্রেও এই রোগ ছড়ানোর একটা সম্ভাবনা থাকে।

এই রোগে কি কি লক্ষন দেখা যায়?

শরীরে প্রবেশ করার চার থেকে সাত দিনের মধ্যে এই রোগের লক্ষন প্রকাশ পায় আক্রান্ত পশুর শরীরে।এই রোগে আক্রান্ত হওয়ার পর নিম্ন লিখিত লক্ষনগুলো প্রকাশ পায়—-

১। সাধারনত প্রথমে যা দেখা যায় তা হল নাক এবং চোখ দিয়ে পানি পড়ে।

২।শরীরের কিছু কিছু স্থানে লসিকা গ্রন্থিগুলো ফুলে উঠে যা সহজে অনুভব করা যায়।

৩। খুব বেশি জ্বর থাকতে পারে।যা টানা এক সপ্তাহও হতে পারে।

৪।দুগ্ধবতী গাভীর হঠাৎ করে দুধ উৎপাদন কমে যায়।

৫।শরীরের বিভিন্ন জায়গায় গুটি দেখা দেয়।এটি দেখলে আর সন্দেহের তেমন অবকাশ থাকে না যে এটা লাম্পি স্কিন ডিজিজ।এই গুটিগুলোর ব্যাসার্ধ ১০ – ১৫ মিলি  মিটার  পর্যন্ত হতে পারে।তবে এই গুটির পরিমান কম বেশি হতে পারে।কম আক্রান্ত পশুর শরীরে কম গুটি থাকে কিন্তু বেশি আক্রান্ত পশুর সারা শরীর ঢেকে যায় এই গুটিতে। মুখে, গলায়, তলপেটে, ওলানে এবং পায়ে এই গুটি এবং ক্ষত বেশি দেখা যায়।এই গুটিগুলো ভিতরের দিকে প্রথমে চামড়া থেকে শুরু করে পরবর্তীতে সাবকিউটেনিয়াস স্থরে এমনকি চামড়া নীচে মাংস পেশীতেও পৌঁছে যেতে পারে।মুখের বা নাকের ভিতরে যেই গুটিগুলো উঠে সেগুলো ফেটে গিয়ে ক্ষত হতে পারে।যেখানে দুর্গন্ধযুক্ত পুঁজও হতে পারে।এই সময় নাক মুখ দিয়ে তরল ঝড়তে পারে যেখানে খুব বেশি পরিমানে লাম্পি স্কিন ডিজিজের জীবানু থাকতে পারে।সাধারনত যে গুটি উঠে তার মাঝখানে ঘা হতে পারে যা পরবর্তীতে খোসা আকারে উঠে আসে।চামড়ার এই গুটিগুলো অনেক সময় কয়েক মাসও থেকে যেতে পারে।মাঝে মধে দেখা যায় দুই চোখের কর্নিয়াতে ঘাঁ হতে পারে যাতে খুব ব্যাথা থাকে।পায়ে বা হাঁটুতে যে ক্ষত হয় তা অনেক সময় ২য় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়াল ইকফেকশনের কারনে চামড়ার নীচে গভীর ক্ষত তৈরি করতে পারে ।যার ফলে  পশূ খোড়াঁতে শুরু করে।

পোষ্টমর্টেম করলে পরিপাক তন্ত্র এবং শ্বসন তন্ত্রের বিভিন্ন স্থানে পক্সের মত ক্ষত চিহ্ন দেখা যায়।

একই লক্ষনের অন্যান্য রোগ থেকে কিভাবে আলাদা করবেন?

কোন পশু যখন এল,এস,ডি দ্বারা মারাত্মক ভাবে আক্রান্ত হয়ে যায় তখন তাকে সহজে সনাক্ত করা যায়।কিন্তু প্রাথমিক পর্যায়ে অন্যান্য সমজাতীয় রোগ থেকে আলাদা করা কঠিন হয়ে পড়ে। এই অবস্থায় নিশ্চিত হওয়ার জন্য ল্যাবরেটরীতে পরীক্ষা করা প্রয়োজন হয়ে পড়ে।সেই ক্ষেত্রে সন্দেহজনক পশুগুলো থেকে নমুনা সংগ্রহ করে পিসিআর পদ্ধতিতে নিশ্চিত ভাবে এই রোগ নিশ্চিতভাবে নির্নয় করা হয়।যেসমস্ত রোগের লক্ষঙ্গুলো এল,এস,ডির সাথে সাদৃশ্যপূর্ন নিম্নে সেরকম কিছু রোগ নিয়ে আলোচনা করা হল।

           ১।সিউডো লাম্পি স্কিন ডিজিজ/ বোবাইন হারপিস ম্যামিলাইটিস (Bovine herpes virus 2) রোগের ফলে চামড়ায় যে লক্ষন হয় তা অনেক সময় লাম্পি স্কিন ডিজিজের সাথে একই রকম মনে হতে পারে।তবে এই রোগের ক্ষেত্রে ক্ষতটি চামড়ার বেশি ভিতরে প্রবেশ করে না এবং এই রোগটির স্থায়িতে লাম্পি স্কিন ডিজিজের চেয়ে অনেক কম এবং তীব্রতাও অনেক কম।

২।সিউডো কাউপক্স (Parapoxvirus) ভাইরাসের সংক্রমনে যে লক্ষন দেখা যায় তাও লাম্পি স্কিন ডিজিজের সাথে সাদৃশ্যপূর্ন ।কিন্তু সিউডো কাউপক্সের ক্ষেত্রে শুধু মাত্র পশুর ওলানে এবং বাটে বৈশিষ্ট্যপূর্ন লক্ষন দেখা যায়।

৩।পোকা মাকরের কামড়, ছুলি/আমবাত এবং আলোক সংবেদনশীলতার কারনে চামড়ায় যে লক্ষন দেখা যায় তা অনেক সময় লাম্পি স্কিন ডিজিজের সাথে মিল থাকতে পারে।তবে এই ক্ষেত্রেও ক্ষত তেমন গভীর হয় না।এই রোগের তীব্রতাও অনেক কম যা এল,এস,ডির চেয়ে অনেক কম সময়ে সেরে যায়।

৪।ডার্মাটোফিলোসিস হলেও চামড়ায় ক্ষত দেখা যেতে পারে তবে সেটা ঘাঁ হয় না ।

৫। ডেমোডিকোসিস হলে সাধারনত গলায় এবং তলপেটের চামড়ায় ক্ষত থাকে।আর এই রোগে শরীরের পশম পড়ে যায়।এই রোগের চামড়া থেকে নমুনা  নিয়ে পরীক্ষা করলে  মাইট পাওয়া যায়।

৬। বোবাইন পেপুলার স্টোমাটাইটিস (Parapoxvirus) এর ক্ষত শুধ মাত্র মুখের ঝিল্লীতে দেখা যায়।

৭। বেসনয়টিওসিস হলে স্ক্লেরাল কঞ্জাংক্টিভা এবং চামড়ার যে ক্ষত হয় সেখানে লোম পড়ে যায়।

খামারে লাম্পি স্কিন ডিজিজ সন্দেহ হলে কি করতে হবে?

খামারে লাম্পি স্কিন ডিজিজ সন্দেহ হলে দ্রুততম সময়ে নিকটস্থ প্রাণিসম্পদ দপ্তরে যোগাযোগ করতে হবে।যাতে দ্রুত সময়ে রোগ নিরুপন সম্ভব হয়।যদি সম্ভব হয় তাহলে যে বা যেসমস্ত পশুকে অসুস্থ মনে হচ্ছে তাদেরকে অন্যান্য সুস্থ পশু থেকে আলাদ করতে হবে।এই অসুস্থ পশুর সংস্পর্শে যাতে অন্য কেউ যেতে না পারে সেই দিকে খেয়াল রাখতে হবে।তাছাড়া অন্যন্য সুস্থ পশুগুলোকে পরীক্ষা করতে হবে ।যে ব্যক্তি এই অবস্থায় খামারে যাবে বা খামার থেকে বের হবে তার হাত, পা এবং অন্যন্যা ব্যবহৃত দ্রব্যাদি জীবানুনাশক দিয়ে পরিষ্কার করতে হবে।যেই খামারের পশু আক্রান্ত হয়েছে এবং তার পার্শবর্তী খামারসমূহে মাছি নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা নিতে হবে।

লাম্পি স্কিন ডিজিজ নিয়ন্ত্রন ও প্রতিরোধে করনীয়ঃ

এই রোগ প্রতিরোধের জন্য  সবচেয়ে ভাল পদক্ষেপ হল টিকা প্রয়োগ।পুরো এলাকা জুড়ে নিয়মিত টিকা প্রয়োগের মধ্যমে এই রোগের প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করতে হবে পশুর দেহে।দেশের এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পশুর চলাচল কঠোর ভাবে নিয়ন্ত্রন করতে হবে । দেশের সীমান্তে গরু পারাপার কঠোরভাবে নিয়ন্ত্রন করতে হবে অথবা বন্ধ করে দিতে হবে।গরুর স্থানান্তরের জন্য ভেটেরিনারি সার্টিফিকেটের ব্যবস্থা করতে হবে যাতে পশুর জন্মস্থান এবং স্বাস্থ্য সম্পর্কে বিবরন থাকবে।এমনকি টিকা প্রয়োগের পরও নির্দিষ্ট সময় পর্যন্ত পশুকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে নেওয়া যাবে না।খামারে নিয়মিত মশা মাছি নিয়ন্ত্রনে ব্যবস্থা নিতে হবে।এতে এই রোগ সম্পূর্ন নিয়ন্ত্রন করা না গেলে ঝুঁকি  অনেক কমানো যাবে।খামার জীবানুমুক্ত করতে হবে।

খামার জীবানুমুক্ত করবেন কিভাবে?

লাম্পি স্কিন ডিজিজ ভাইরাসটি খুব ঠান্ডা এবং শুষ্ক পরিবেশেও টিকে থাকতে পারে যেখানে পি,এইচ ৬.৩ – ৮.৩ । এল,এস, ডি আক্রান্ত পশুর ক্ষতস্থানে, খসে পড়া গুটির খোসায় এই ভাইরাসটি টিকে থাকতে পারে কয়েক মাস।তাই এল,এস,ডি আক্রান্ত খামার,খামারে ব্যবহৃত দ্রব্যাদি এবং নিযুক্ত লোকজন সহ সবকিছু ভাল করে জীবানুমুক্ত করা প্রয়োজন।যদিও এল,এস,ডি ভাইরাসটি প্রায় সকল জীবানুনাশক এবং ডিটারজেন্টের প্রতি সংবেদনশীল তবু ভাল ভাবে জীবানুমুক্ত করার জন্য খামারের গোবর,খড়কুটো আগেই সরিয়ে নিতে হবে।খামার জ়ীবানুমুক্ত করার জন্য এমন জীবানু নাশক ব্যবহার করতে হবে যাতে তা ভাইরাসের চারপাশে থাকা যেকোন জৈব উপাদান ভেদ করতে পারে।জাতীয় সংঘের খাদ্য এবং কৃষি সংস্থার (FAO) Animal Health Manual on Procedures for Disease Eradication by Stamping Out (FAO,2001) এ খামার জীবানু মুক্ত করার ব্যপারে কিছু ব্যবহারিক নির্দেশনা দিয়েছে।

খামারে কীট পতঙ্গ নিয়ন্ত্রনঃ

খামারে ঠিক মত মশা মাছি নিয়ন্ত্রন করা গেলে এই ভাইরাসে চলাচল অনেকটূকু নিয়ন্ত্রন করা যাবে কিন্তু সম্পুর্ন রুপে এই রোগের প্রতিরোধ করা যাবে না। বিশেষ করে যেখানে পশু ছেড়ে দিয়ে পালন করা হয়।যে সমস্ত খামারে পশুকে সম্পুর্ন রুপে বেঁধে পালন করা হয় সে সমস্ত খামারে মশার উৎপাত কমানোর জন্য মশারি বা নেট ব্যবহার করা যায়।আবার পশুর গায়ে মশা  মাছি না বসার জন্য ঔষধ ব্যবহার করে সাময়িকভাবে মশামাছি এবং আঠাঁলি প্রতিরোধ করা যায়।

যখন কীটনাশক ব্যবহার করা হয় তখন খেয়াল রাখতে হবে যেন তার অতিমাত্রায় ব্যবহারের ফলে পরিবেশের ক্ষতি না হয় এবং অন্যান্য উপকারী কীট পতঙ্গ যেন ক্ষতির সম্মুখীন না হয়।কীট পতঙ্গ যেখানে প্রজনন করতে পারে, যেমনঃ জমানো পানি, ময়লা, গোবর ইত্যাদি স্থান ভাল ভাবে পরিষ্কার করলে কীট পতঙ্গের পরিমান কমিয়ে আনা যায়।

বায়োসিকিউরিটিঃ

যে সমস্ত পশুর দেহে এই ভাইরাস আছে কিন্তু কোন রোগের লক্ষন প্রকাশ  করে নাই সে সমস্ত পশু খামারে কিনে নিয়ে  আসলে ঐ পশুর মাধ্যমে খামারে লাম্পি স্কিন ডিজিজের জীবানু খামারে ঢুকে যেতে পারে।তাই এলাকায় লাম্পি স্কিন ডিজিজ দেখা গেলে খামারে কোন নতুন পশু প্রবেশ না করানোই উত্তম।আর যদি পশু আনতেই হয় তাহলে নির্ভর যোগ্য উৎস্য থেকে সংগ্রহ করা উচিত।আর এই পশু ক্রয় করার আগে ভাল করে স্বাস্থ্য পরীক্ষা করানো উচিত এবং খামারে আনার পরও কমপক্ষে ২৮ দিন কোয়ারেন্টাইনে রাখা উচিত।

খামারে দর্শনার্থী প্রবেশ খুব নিয়ন্ত্রিত ভাবে করতে হবে।খামারের প্রয়োজনীয় যেকোন যাবাহন বা দ্রব্যাদি খামারে প্রবেশের পূর্বে ভাল করে ধুয়ে  নিতে হবে।

চিকিৎসাঃ
লাম্পি স্কিন ডিজিজ একটি ভাইরাস গঠিত রোগ তাই এর সরাসরি কোন চিকিৎসা নেই।তবে দ্বিতীয় পর্যায়ের ব্যাকটেরিয়ার সংক্রমন রোধ করার জন্য লক্ষন দেখে চিকিৎসা প্রয়োগ করতে হয়।এই ক্ষেত্রে একজন অভিজ্ঞ ভেটেরিনারি চিকিৎসকের পরামর্শ নেওয়া উচিত।

লাম্পি স্কিন ডিজিজে জ্বর এবং গায়ে ব্যাথা থাকলে কিটোপ্রোপেন বা প্যারসিটামল জাতীয় ব্যাথা নাশকগুলো ব্যবহার করা যাতে পারে।রোগ খুব তীব্র হলে চিকিৎসকের পরামর্শ অনুযায়ী এন্টিবায়োটিক ব্যবহারের প্রয়োজন হতে পারে।

গুটিগুলো ফেটে গেলে পটাশ বা আয়োডিন সলিউশন দিয়ে ক্ষত স্থান ধুতে হবে নিয়মিত।তাছাড়া ঘা হয়ে গেলে বিভিন্ন ধরনের সালফার পাউডার ডাক্তারের পরামর্শ অনুযায়ী ক্ষত স্থানে ব্যবহার করতে হবে।

গরুর দুধে ভাইরাস মোকাবিলা—কিভাবে?

0


যুগ যুগ ধরে মানুষ আদর্শ খাদ্য হিসেবে দুধ গ্রহন করেছে।যার মাধ্যমে নিজের অজান্তে বা সজ্ঞানেই মানুষ নিজের মধ্যে গড়ে তুলেছে বিভিন্ন রোগ প্রতিরোধী দূর্গ।কারন দুধের মধ্যে এমন কিছু উপাদান আছে যা শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা  সুদৃঢ় করে।

দুগ্ধ প্রোটিন ক্যাসিন

দুধের এরকম একটি উপাদান হল কেসিন। এটি হল দুধের মূল প্রোটিন অংশ।এই কেসিন প্রোটিন এবং তার ক্ষুদ্র ক্ষুদ্র অংশ বা পলি পেপটাইটগুলোও ভাইরাস বিরোধী কাজ করে।এরা শরীরের রোগ প্রতিরোধে ভূমিকা রাখে মুলত দুই উপায়ে।তার মধ্যে একটি হল শরীরের ভিতরে বহিরাগত ভাইরাসকে মেরে ফেলার যে প্রক্রিয়া চলে তাকে ত্বরান্বিত করে।আর একটি হল এই ক্ষেত্রে শরীরের মারাত্মক আত্মঘাতী কিছু কার্যক্রম (যেমনঃপচন বা Sepsis)) কে সে কমিয়ে আনে বা প্রশমিত করে।তাছাড়া শরীরের ভিতরে যে বি-লিম্পোসাইট এবং টি-লিম্পোসাইট গুলো থাকে তাদেরকে সচল করে দেয় এবং সচলগুলোর কার্যকারিতে বৃদ্ধি করে দেয়। দুধের আরেকটি প্রোটিন হল ল্যাক্টোফেরন যা সরাসরি ভাইরাসের উপর কাজ করে।

ল্যাকটো এল্বুমিন এর প্রভাব

আলফা ল্যাকটো অ্যালবুমিন (α Lacto albumin) নামের দুগ্ধ প্রোটিনটিও ভাইরাস বিরোধি কার্যক্রমের সাথে জড়িত সাথে সাথে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাও বৃদ্ধি করে।গবেষনায় দেখা গেছে লেকটোফেরন এবং এর থেকে উৎপন্ন পেপটাইটগুলো মুলত ভাইরাস তার পোষক দেহের কোষের সাথে যেখানে ক্রিয়া বিক্রিয়া করে সেখানেই হস্তক্ষেপ করে।পোষক কোষের (Host cell) প্রাচীরে যে ঋনাত্মক চার্জধর্মী হেপারেন সালফেট (heparin Suhate) থাকে তার সাথে মিথস্ক্রিয়া করে ইলেক্ট্রোস্ট্যাটিক অবস্থা তৈরি করে।ফলে ভাইরাস আর পোষকের কোষের অভ্যন্তর প্রবেশ করতে পারে না।

অন্যদিকে বিটা –ল্যকটোগ্লোবিউওলিন বা  আলফা ল্যাকটোএলবুমিন জাতীয় দুগ্ধ প্রোটিনের বাইরের আবরনীতে ঋনাত্মক ধর্মী অংশ (Anionic patch) থাকে কিন্তু ক্যাসিনের বাইরের দিকে ধনাত্মক এবং ঋনাত্মক ধর্মী অংশ আছে।তাই দুধের এই দুই ধরনের বৈশিষ্ট্য থাকার কারনে এর ভাইরাস এবং পোষকের দেহের মিথস্কিয়ায় জোড়ালোভাবে বাধা প্রদান করতে পারে।

সাধারনত একটি ভাইরাস তার জীবন চক্রে বেশ কয়েকটি ধাপ অতিক্রম করে ।যেমনঃ পোষক কোষের সাথে যুক্ত হওয়া,তারপর উক্ত কোষের মধ্যে ডুকে যায়,ভাইরাসের জিনোমের রেপ্লিকেশন সম্পন্ন হয়,ভাইরাস নিজস্ব প্রোটিন তৈরি করে নিজেদের বংশ বিস্তার করে এবং আক্রান্ত কোষ থেকে বের হয়ে আসে।এই ধাপগুলো যেকোন পর্যায়ে দুগ্ধজাত প্রোটিন বা ভাইরাস রোধী উপাদান কাজ করে।

ভাইরাসের গাঠনিক প্রোটিনের সাথে যুক্ত হয়েঃ

যেই ভাইরাসগুলোর বাইরে কোন আবরনী পর্দা  থাকে না (Non Enveloped) সেগুলোর বাইরের দিকে গাঠনিক প্রোটিনগুলো অনেক সময় কাঁঠা বা আঁশের মত বাইরের দিকে বের হয়ে থাকে যা পোষক কোষের সাথে প্রাথমিকভাবে যুক্র হতে সাহায্য করে।আর সমস্ত ভাইরাসের বাইরে পর্দা থাকে (Enveloped) তারা পোষক কোষের রিসেপ্টরের সাথে যুক্ত হয়।

দুধের এমন কিছু প্রোটিন আছে যা এই দুই ধরনের ভাইরাস প্রোটনের সাথে যুক্ত হয় ভাইরাসকে পোষক কোষের সাথে যুক্ত হতে বাঁধা দেয়।ইনফ্লুয়েঞ্জা ভাইরাসের আবরনীতে হিমাগ্লুটিনিন নামে একধরনের প্রোটিন পাওয়া যায় যা ভাইরাসকে পোষক কোষের সাথে যুক্ত হতে এবং ভাইরাসের জিনোম ঐ কোষের ভিতরে প্রবেশ করতে সহায়তা করে।দুধের কিছু প্রোটিন এই হিমাগ্লুটোনিনের সাথে যুক্ত হয়ে হিমাগ্লুটিনেশোনের মাধ্যমে এর কার্যকরিতা ধ্বংস করে দেয় ফলে ঐ ভাইরাস আর পোষক কোষে প্রবেশ করতে পারে না।

ভাইরাসকে পোষক কোষের সাথে সংযুক্ত হতে বাঁধা প্রদানঃ

ভাইরাস পোষক কোষের সাথে যুক্ত হওয়াড় জন্য পোষক কোষের কোন রিসেপ্টরকে সনাক্ত করতে হয় তারপর তার সাথে যুক্ত হয়ে পরবর্তী কার্যক্রম শুরু করে ।কিন্তু যদি ভাইরাস এই রিসেপ্টরকে খুঁজে না পায় তাহলে  সে তার জীবনের পরবর্তী ধাপগুলো অতিক্রক করতে পারে না।দুধের প্রোটিন এই রিসেপ্টর গুলোর সাথে ক্রিয়া করে নিষ্কিয় করে দেয়।যার কারনে ভাইরাস তাকে আর খুঁজে পাই না।

ভাইরাসের বংশ বিস্তারে (replication) বাঁধা প্রদান করাঃ

ভাইরাসের রেপ্লিকেশনের জন্য বিভিন্ন এনজাইম ব উৎসেক প্রয়োজন দুগ্ধজাত বিভিন্ন প্রোটিন এই সমস্ত এনজাইমকে বাধাঁ দিয়ে ভাইরাসের রেপ্লকেশনকে বাধাগ্রস্ত করে ফলে ভাইরাস বংশ বিস্তার করতে পারে না।

পোষক কোষের সহজাত রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বৃদ্ধি করাঃ

পোষক দেহের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থ দুই ধরনের একটি হল তার সহজাত (innate) যা স্বাভাবিকভাবে তার শরীরে থাকে ।আর অন্যটি হল, যখন বাইরের থেকে শরীরের জন্য ক্ষতিকর কোনকিছু (Foreign Antigen) শরীরে প্রবেশ করে শরীরের অভ্যন্তরে বেশ কিছু প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়।যার ফলে বিভিন পদার্থ উৎপন্ন হয়ে উক্ত বিপদ মোকাবেলা করে।এটি হল তার অভিযোজিত(Adoptive)  রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা।

শরীরে সহজাত রোগ প্রতিরোধের জন্য আছে বিভিন্ন ধরনের লিয়োকোসাইট যেমন ম্যাক্রোফেজ, ডেনড্রাইটিক সেল,কিলার কোষ ইত্যাদি।আবার রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা যখন নতুন শত্রু মোকাবিলায় অভিযোজিত হয় তখন মূল ভূমিকা পালন করে বি-লিম্পোসাইট এবং টি-লিম্পোসাইট এর মত কোষ গুলো।আর এই দুইটি পথকে একত্রিত করতে কাজ করে সাইটোকাইন কেমোকাইন নামক বিভিন্ন সংকেত প্রদানকারী পদার্থ।

ল্যাকটোফেরন প্রাকৃতিক কিলার কোষের (Natural Killer Cell) সাইটোটক্সিক ক্ষমতাকে আরো বাড়িয়ে দেয়।সাথে সাথে পলিমরফোনিউক্লিয়ার লিউকোসাইটের গতিশীলতাও বাড়িয়ে দেয় এবং সুপার অক্সাইড উৎপাদন বাড়িয়ে দেয়।এটি ম্যাক্রোফেজগুলোকে সক্রিয় করে দেয় এবং বিভিন্ন ধরনের সাইটোকাইন উৎপাদনের জন্য উদ্দীপ্ত করে।
অন্যদিকে ল্যাকটোফেরন বিপদকালীন মূহুর্তে লিম্পোসাইটের বৃদ্ধিকে উদ্দীপ্ত করে।যার ফলে অপরিনত বি-লিম্পোসাইট এবন টি-লিম্পোসাইটগুলো গঠনত পরিবর্তন হয়।ফলশ্রুতিতে বি-লিম্পোসাইটগুলো এন্টিজেনকে টি-হেল্পার টাইপ ২ কোষগুলোর সামনে তুলে ধরতে পারে।

তার মানে রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থায় নিয়োজিত কোষগুলোকে সক্রিয় করা থেকে শুরু করে এন্টিজেন বিরোধী যুদ্ধে অংশ গ্রহন করা পর্যন্ত বিভিন্ন ধাপে দুগ্ধজাত ল্যাকটোফেরন সযোগিতা করার মাধ্যমে দেহের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে সুদৃঢ় করে।

দুগ্ধজাত বিভিন্ন পেপ্টাইট কিভাবে রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতাকে ত্বরান্বিত করে?

ল্যাকটোফেরন ছাড়াও বিভিন দুগ্ধজাত প্রোটিন এবং পেপটাইট ভাইরাস বিরোধী রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা তৈরি করে।ল্যাকটোফেরন থেকে তৈরি ল্যাকটোরিসিন ও ল্যাক্টোরেফেরাম্পিন শরীরের রোগ প্রতিরোধ ব্যবস্থা জোরদার করতে কাজ করে।
কেসিন পেপটাইট অধিক লিম্পোসাইট এর সংখ্যা বৃদ্ধির জন্য উদ্দীপ্ত করে।সাথে সাথে শরীরে যে ম্যাকরোফেজ আছে তাদের কার্যকারীতে বাড়িয়ে দেয়।তাদের কাজ হলো শরীরের জন্য ক্ষতিকর এন্টিজেনকে খেয়ে ফেলা।

তাহলে বিষয়টি দাঁড়াল, দুধের এমন অনেক প্রোটিন এবং পেপ্টাইট আছে যা ভাইরাস বিরোধী কাজ করে মূলত ভাইরাস রোগ তৈরি জন্য যে যে ধাপের মধ্য দিয়ে যায় সেই সেই ধাপে বাধা প্রদান করে।আবার এদের মধ্যে অনেকে আছে যারা এন্টি ভাইরাল ঔষধের কার্যকারিতা বাড়িয়ে দেয়।তবে এই বিষয়ে আরো বিস্তারিত গবেষনা প্রয়োজন।দুধের প্রোটিনও হয়ত হতে পারে কোন এন্টি ভাইরাল ড্রাগের টেমপ্লেট।

এই লেখাটি লেখার সময় আমি বেশ কিছু লেখকের লেখা,সায়েন্টিফিক জার্নাল সর্বোপরি ইন্টারনেটের সাহায্য নিয়েছি।দুধ যে ভাইরাসের প্রতিরোধে অনেক ভুমিকা রাখতে পারে তার কয়েকটি রেফারেন্স নিচে উল্ল্যেখ করলাম।যা আমার এই লেখার খোরাক জুগিয়েছে।

[বিঃদ্রঃ এই লেখা কোন চিকিৎসা পত্র বা সেই সুম্পর্কিত কোন বিষয় নয়।এটি শুধু মাত্র বিজ্ঞান ভিত্তিক আলোচনা।কেউ অনুসরন করলে তা নিজ দায়িত্ব করতে হবে।তাই এই লেখার কোন প্রভাবের জন্য লেখক দায়ী থাকবে না।

Sources/References:
  1. Kayser, H., and Meisel, H. (1996) Stimulation of human peripheral blood lymphocytes by bioactive peptides derived from bovine milk proteins, FEBS Lett 383, 18-20.
  2. Bellamy, W., Takase, M., Yamauchi, K., Wakabayashi, H., Kawase, K., and Tomita, M.(1992) Identification of the bactericidal domain of lactoferrin, Biochim Biophys Acta 1121,130-136.
  3. Fiat, A. M., Levy-Toledano, S., Caen, J. P., and Jolles, P. (1989) Biologically active peptides of casein and lactotransferrin implicated in platelet function, J Dairy Res 56, 351-355.
  4. Meisel, H. (1997) Biochemical properties of regulatory peptides derived from milk proteins, Biopolymers 43, 119-128.
  5. Haiyan Sun and Håvard Jenssen, Milk Derived Peptides withImmune Stimulating Antiviral Properties (http://dx.doi.org/10.5772/50158)
  6. Internet

ব্রয়লার খামারীরা কত টাকা পর্যন্ত ঋন পেতে পারেন?

0


ব্রয়লার খামারীরা ব্যাংক থেকে কতটাকা পর্যন্ত ঋন পেতে পারেন বাংলাদেশ বাংক প্রকাশিত “কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন ণীতিমালা ২০১৯-২০” এই বিষয়ে একটি নিয়মাচার দেওয়া হয়েছে যা এই নীতিমালার পরিশীষ্ট-‘ঠ/১’ তে উল্লেখ  করা হয়েছে।

প্রসঙ্গত উল্ল্যেখ্য যে, করোনা ভাইরাসের মাহাদূর্যোগে ব্রয়লার খামারীরা যাতে মূল্ধন সংকটে না পড়েন সেই জন্য সরকার ৫,০০০ টাকার প্রণোদনা স্কিম ঘোষনা করেছেন।বাংলাদেশে ব্যাংক এই উদ্যেশ্যে একটি সার্কুলার জারি করেন।যাতে বলা হয়, এই প্রনোদনা স্কীমের নাম হবে “কৃষি খাতে বিশেষ প্রনোদনামুলক পুনঃঅর্থায়ন স্কিম” যা বাংলাদেশ ব্যাংক নিজস্ব উৎস হতে অর্থায়ন কয়া হবে।এই সার্কুলারের “সূচনা” পর্বের ১(চ) অংশে বলেছেন, বিদ্যমান ব্যাংকগুলো বিদ্যমান কৃষি ও পল্লী ঋন নীতিমালায় বর্নিত বিধিসমূহ অনুসরন পুর্বক ব্যাংক গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে প্রদান করা হবে।

ব্রয়লার মুরগি (মাংস উৎপাদনের জন্য) পালনের জন্য ঋণ সংক্রান্ত নিয়মাচার

১।  ১ (এক) দিন বয়সের ব্রয়লার বাচ্চা ক্রয় করে পালনের জন্য ঋণ প্রদান করা যাবে।

২। প্রতি ১০০০টি ব্রয়লার মুরগি পালনের (৩০ দিন র্পযন্ত) জন্য ব্যয়ঃ

 

খরচের বিবরণী টাকা
ঘর তৈরি বাবদ (এককালীন) ৫,০০,০০০/-
বাচ্চা ক্রয় বাবদ ৮০,০০০/-
খাদ্য ক্রয় বাবদ ১,৫০,০০০/-
খাদ্য পাত্র ও পানির পাত্র ক্রয় বাবদ ১৫,০০০/-
টিকা, ঔষধ ও ভিটামিন ক্রয় বাবদ ৩০,০০০/-
বিদ্যুৎ ও জ্বালানী খরচ (প্রতি মাসে) ১৫,০০০/-
শ্রমিক বাবদ (প্রতি মাসে) ২৫,০০০/-
অন্যান্য খরচ ১০,০০০/-
মোট (আট লক্ষ পঁচিশ হাজার টাকা মাত্র)

 

৮,২৫,০০০/-

৩। ১০০০টি ব্রয়লার মুরগি পালনের জন্য অনধিক ৮,২৫,০০০/- (আট লক্ষ পঁচিশ হাজার) টাকা উক্ত স্কীমের অধীনে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

৪। স্বল্প পরিসরে সর্বোচ্চ ১০০০টি ব্রয়লার মুরগির খামার (নতুন) তৈরিতে ঘর তৈরি বাবদ (এককালীন) প্রদত্ত ঋণ কৃষি ঋণ হিসেবে বিবেচিত হবে। তবে, ১০০০ এর অধিক পরিমানে ব্রয়লার মুরগির খামার অর্থাৎ বৃহৎ পরিসরে বা বাণিজ্যিকভাবে ব্রয়লার মুরগি উৎপাদনে অবকাঠামোগত ব্যয়ে প্রদত্ত ঋণ কৃষি ঋণ হিসাবে বিবেচিত হবে না।

৫। সুবিধাভোগী ঋণ গ্রহিতা নির্বাচনের ক্ষেত্রে নারী ও প্রান্তিক খামারীদের অগ্রাধিকার দিতে হবে।

৬। ঋণ পরিশোধের ক্ষেত্রে ঋণ গ্রহিতা অনধিক ২ মাস গ্রেস পিরিয়ড পাবেন।

৭। ঋণ গ্রহিতাকে ৩৬-৫৪ মাসের মধ্যে (গ্রেস পিরিয়ড সহ) ঋণ সমন্বয় করতে হবে।

৮। ব্যাংক শাখাসমূহ এ খাতে বিতরণকৃত ঋণের তথ্যাদি সংরক্ষণ করবে। প্রয়োজনবোধে বাংলাদেশ ব্যাংক বা সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের প্রধান কার্যালয় এর চাহিদা মোতাবেক তা সরবরাহ করবে।

দেশ  বাংলাব্যাংক কৃষি ঋন শাখা থেকে প্রকাশিত কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯-২০ হুবহু পেতে এখানে ক্লিক করুন

খামারীদের সুবিধার্থে এবং প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইট থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।তাই এ সমস্ত বিষয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গন্য হবে।এই পোষ্টের কোন তহত্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

 

করোনা দূর্যোগ মোকাবলিায় প্রাণিসম্পদ খাতে প্রনোদনা কারা পাবেন এবং কিভাব পাবনে?

0


                                 কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯-২০

নভেল করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরার ফলে প্রাণিসম্পদ খাতের সাথে সংযুক্ত খামারী/উৎপাদ/পরিবেশক সহ সংশ্লিষ্টরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যাতে মুল্ধন সংকটে পড়তে না হয় সে জন্য সরকার ৫,০০০ কোটি টাকার প্রনোদনা স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।এর ধারবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ৫,০০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম গঠন ও পরিচালনার নীতি প্রসঙ্গে একটি সার্কুলার প্রকাশ করেন। এই সার্কুলারে এ স্কিমের নাম দেওয়া হয় “কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কীম” (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)এই সার্কুলারে সূচনা অংশের ১(চ) ভাগে বলা হয়েছে “ঋণ বিতরনের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিদ্যমান কৃষি ও পল্লী ঋন নীতিমালায় বর্নিত বিধিবিধানসমূহ অনুসরনপুর্বক ব্যাংকার গ্রাহক-গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং প্রতিটি ঋনের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষন করবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ  কর্তৃক প্রকাশিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা  মধ্যে প্রাণিসম্পদ খাতে ঋন গ্রহীতাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।

ঋণ গ্রহীতা সনাক্তকরণ

ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লী ঋণের আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড-এর ভিত্তিতে প্রকৃত কৃষক সনাক্ত করবে। কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ডের বিপরীতে মাত্র ১০ টাকা জমা গ্রহণপূর্বক খোলা একাউন্টধারী কষৃ কদের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাশবই-এর ভিত্তিতেই প্রকৃত কৃষক সনাক্ত করা যেতে পারে। জাতীয় পরিচয়পত্র আছে কিন্তু কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড নেই সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা স্থানীয় স্কুল/কলেজের প্রধান শিক্ষক অথবা ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির দেওয়া প্রত্যয়নপত্রও প্রকৃত কৃষক সনাক্তকরণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। (অনুচ্ছদে ৫.০১)

ঋণ গ্রহীতার যোগ্যতা

কৃষি কাজে সরাসরি নিয়োজিত প্রকৃত কৃষকগণ কৃষি ঋণ প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। পল্লী অঞ্চলে আয় উৎসারী কর্মকান্ডে জড়িতরাও কৃষি ও পল্লী ঋণের সংশ্লিষ্ট খাতে ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। তবে, সাধারণভাবে খেলাপি ঋণ গ্রহীতাগণ নতুন ঋণ পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র, প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষিসহ অন্যান্য কৃষকদেরকে সহজ পদ্ধতিতে একক/গ্রুপ ভিত্তিতে কৃষি ঋণ প্রদান করা যাবে।(অনুচ্ছদে ৫.০২)

আবেদনপত্র গ্রহণ, প্রাপ্তিস্বীকার ও বিবেচনা

গ্রাহকের আবেদনপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করতে হবে। আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের মধ্যে সময়ের ব্যবধান যৌক্তিকীকরণ এবং গ্রাহকের কোনো অভিযোগ থাকলে তা দ্রুত নিস্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে শস্য ও ফসল চাষের জন্য ঋণের আবেদন দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণের আবেদন নিষ্পত্তিকরণের সময়সীমা হবে আবেদনপত্র জমার দিন হতে সর্বোচ্চ  ১০ কর্মদিবস। বাতিলকৃত আবেদনপত্রগুলো বাতিলের কারণ উল্লেখপূর্বক একটি ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল এবং স্ব- স্ব ব্যাংকের নিরীক্ষা দলের যাচাইয়ের জন্য ফাইলটি সংরক্ষণ করতে হবে।  ( অনুচ্ছেদ ৫.০৪)

আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণ ফি/চার্জ

কৃষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র ১০ টাকা প্রাথমিক জমার বিনিময়ে হিসাব খোলা  যাবে। অগ্রাধিকার প্রাপ্ত খাত হিসেবে কৃষক/গ্রাহক পর্যায়ে স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংকসমূহ কর্তৃক সকল প্রকার কৃষি ও পল্লী ঋণে নির্ধারিত সুদ ব্যতীত অন্য কোন নামে কোন প্রকার চার্জ, প্রসেসিং ফি/মনিটরিং ফি ইত্যাদি ধার্য করা যাবে না। এছাড়া, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ/পার্টনারশীপের মাধ্যমে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক নির্ধারিত ফি/চার্জ ব্যতীত অন্য কোন ফি/চার্জ ধার্য করা যাবে না। (অনুচ্ছেদ ৫.০৫)

ঋণ মঞ্জুরির ক্ষেত্রে ব্যাংকসমূহ এবং ব্যাংকের সাথে পার্টনারশীপের ভিত্তিতে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণকারী ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক নিম্ন লিখিত চার্জ ডকুমেন্ট ব্যতীত অন্য কোন চার্জ ডকুমেন্ট গ্রহণ করতে পারবে নাঃ

  1. ডিপি নোট (১০ টাকা থেকে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প/সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক)
  2. লেটার অব হাইপোথিকেশন (স্ট্যাম্প প্রয়োজন নেই)
  3. লেটার অব গ্যারান্টি ব্যক্তিগত (স্ট্যাম্প প্রয়োজন নেই)

জামানত

ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে জামানত গ্রহণ করা/না করার বিষয়টি ব্যাংক/অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমহূ নিজের প্রচলিত শর্তে ব্যাংক-গ্রাহক স¤পর্কের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির আওতায় আয়-উৎসারী কর্মকান্ডে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রুপ/ব্যক্তিগত গ্যারান্টি গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। (অনুচ্ছেদ ৫.০৮)

ঋণ বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকা

‘লীড ব্যাংক’ পদ্ধতির আওতায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখাসমূহ তাদের অনকুূলে বরাদ্দকৃত ইউনিয়নসমূহে ফসলসহ কৃষির বিভিন্ন খাতে ঋণ প্রদান করবে। তবে, অন্য ব্যাংক শাখার নামে বরাদ্দকৃত পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কোন আগ্রহী আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট শাখার অনাপত্তিপত্র দাখিল সাপেক্ষে ঋণ প্রদান করা যাবে। এজন্য পার্শ¦বর্তী ব্যাংক শাখাসমূহের মধ্যে ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা বিনিময় করতে হবে। এছাড়া, বর্তমানে বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকসহ বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলী ব্যাংকের জন্য কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক হওয়ায় লীড ব্যাংক পদ্ধতির আওতায় যে ইউনিয়ন যে ব্যাংক শাখার অনুকূলে বরাদ্দকৃত সেই ব্যাংক শাখা হতে অনাপত্তিপত্র নিয়ে উক্ত এলাকায় বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকসমূহ কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করবে। (অনুচ্ছেদ ৫.০৯)

কৃষি ঋণের প্রধান খাতে ঋণ বিতরণ

কৃষির প্রধান ৩টি খাতে (যথা-শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) অন্যান্য খাতের চেয়ে ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। (অনুচ্ছেদ ৫.১৫)

কর্মসূচির আওতাভুক্ত খাত/উপখাতসমূহ

কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির আওতাভুক্ত খাত/উপ-খাতসমূহ নিম্নরূপ ঃ (অনুচ্ছেদ ৬.০১)

ক)      শস্য/ফসল (ধান, গম, ডাল, তৈলবীজ ইত্যাদিসহ পরিশিষ্ট-ঙ তে উল্লিখিত সকল ফসল);

খ)       মৎস্য সম্পদ;

গ)       প্রাণিসম্পদ;

ঘ)       কৃষি যন্ত্রপাতি (ব্যবহারকারী পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণ);

ঙ)       সেচ যন্ত্রপাতি (ব্যবহারকারী পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণ);

চ)       বীজ উৎপাদন

ছ)       শস্যগুদাম ও বাজারজাতকরণ (শুধুমাত্র নিজস্ব উৎপাদিত ফসল গুদামজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ);

জ)      দারিদ্র্য বিমোচন ও আয় উৎসারী কর্মকান্ড (পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠির আয় উৎসারী কর্মকান্ড প্রদত্ত ঋণ);

ঝ)      অন্যান্য (ঋণ নিয়মাচারে উল্লিখিত হয়নি এমন অপ্রচলিত ফসল চাষ/কৃষিতে প্রদত্ত ঋণ)।

প্রাণিসম্পদ খাতে ঋণ প্রদান (অনুচ্ছেদ ৬.০৫)

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমানে দেশে প্রয়োজনের তুলনায় মাংস ও দুগ্ধ সরবরাহের পরিমাণ অপ্রতুল। প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যাংক/

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রাণিসম্পদের প্রচলিত নিম্নবর্ণিত খাত/উপখাতসমূহে ঋণ বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২০১৯-২০  অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির অধীনে ব্যাংকগুলোর বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতে বিতরণ করতে হবে। (অনুচ্ছেদ ৬.০৫)

গবাদি পশু (অনুচ্ছেদ ৬.০৫.১)

ক)      হালের বলদ, দুগ্ধ খামার স্থাপন, ছাগল/ভেড়ার খামার স্থাপন, গরু মোটাতাজাকরণ ইত্যাদিতে ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যাংক গ্রহণ করবে।

খ)       গরুর পাশাপাশি মহিষ পালন একটি লাভজনক খাত। গরুর মতো মহিষ হতেও দুধ ও মাংস পাওয়া যায়। পাশাপাশি হালচাষ এবং গ্রামীণ পরিবহণেও মহিষের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। পরিবেশগত এবং প্রথাগত কারণে বাংলাদেশের চরাঞ্চলসহ যে সকল এলাকায় মহিষ পালন লাভজনক সে সকল এলাকায় মহিষ পালনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       ব্যাংকের নিজস্ব প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অফিসার বা একজন ভেটেরিনারী চিকিৎসক কর্তৃক সময়ে সময়ে গরু/ছাগলের খামার পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। উক্ত পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের ব্যাংক শাখার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

দুগ্ধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কীম ( অনুচ্ছেদ ৬.০৫.২)

দেশের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান, পুষ্টি চাহিদা পূরণসহ গুঁড়াদুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ার্থে দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে গাভী লালন-পালন এবং কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে সংকর জাতের গাভীপালনের জন্য ৫ (পাঁচ) বছর পর্যন্ত নবায়ন/আবর্তনযোগ্য (জবাড়ষারহম) ২০০.০০ (দুইশত) কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম গঠন করা হয়। এ স্কীমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার সর্বোচ্চ ৪%। ব্যাংক/বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে সুদ ক্ষতি/ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট অতিরিক্ত ৫% দাবী করতে পারবে। এছাড়া, অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ব্যাংক রেটে (বর্তমানে ৫%, যা পরিবর্তনশীল) পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে স্বাক্ষরিত অংশগ্রহণ চুক্তিপত্রের আওতায় সরকারী ও বেসরকারী খাতের ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এ স্কীমের আওতায় সমুদয় অর্থ গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ সম্পন্ন করেছে।

পোলট্রি খাত (অনুচ্ছেদ ৬.০৫.৩)

ডিম ও মাংস সরবরাহের মাধ্যমে দেশের প্রোটিন ঘাটতি পূরণে পোলট্রি খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইতোমধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করে নেয়া পোলট্রি শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড এবং ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ কর্মকান্ড কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে দেশে ডিম ও মাংসের চাহিদার তুলনায় সরবরাহের পরিমাণ অপ্রতুল। পোলট্রি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রাণিসম্পদের প্রচলিত নিম্নবর্ণিত খাত/উপখাতসমূহে ঋণ বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ঃ

ক)      হাঁস-মুরগির খামার স্থাপন এবং হাঁ স-মুরগির খাদ্য, টিকা, ঔষধপত্র μয় ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। এছাড়া কোয়েল, খরগোশ, গিনিপিগ ইত্যাদির বিভিন্ন লাভজনক খামার স্থাপনের জন্য ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। পোলট্রি খাতে ঋণ প্রদানের কার্যμম একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ খাতে ঋণ প্রদানের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা যেতে পারে।

খ)       পরিবেশগত এবং প্রথাগত কারণে বাংলাদেশের বিল এবং জলা এলাকাসহ যে সকল এলাকায় পারিবারিক উদ্যোগে হাঁস পালন লাভজনক সে সকল এলাকায় হাঁস পালনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       পোলট্রি বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহের মধ্যে ব্রয়লার এবং লেয়ার মুরগি পালনে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি  ব্যাংক ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুসরণের জন্য এতদ্সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। অন্যান্য খাতসমূহে ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি নির্ধারণে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

টার্কি পাখি পালনে ঋণ প্রদান ( অনুচ্ছেদ ৬.০৫.৪)

বাংলাদেশে টার্কি পাখি পালন μমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। টার্কি পাখি পালনের জন্য উন্নত অবকাঠামোর দরকার হয় না এবং তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় এদেশের মানুষ টার্কি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি এবং চর্বির আধিক্য কিছুটা কম হওয়ায় এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে খামার করে টার্কি পালনে লাভবান হচ্ছে খামারীরা। টার্কি পাখি পালন একদিকে যেমন গরু বা খাসির মাংসের বিকল্পরূপে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করছে অন্য দিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। টার্কি পাখি পালনের প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যও অর্জন করা সম্ভব। এলক্ষ্যে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে টার্কি পাখি পালনে নিম্নবর্ণিত খাতসমূহে ঋণ প্রদান করা যেতে পারেঃ

ক)      টার্কি বাচ্চা, ছোট আকারের খামারের জন্য (সর্বোচ্চ ১০০০ টি টার্কি পাখি পালনের জন্য) এবং খাদ্য, টিকা ও ঔষধপত্র  ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

খ)       টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ কম, মাংস উৎপাদন ক্ষমতা বেশী ও ঝামেলাহীনভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় বিধায় দেশের সকল অঞ্চলে এ খাতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       টার্কি পালনে অন্যান্য পাখির তলু নায় রোগবালাই কম এবং খামারের ঝুঁকি কম হওয়ায় পারিবারিক উদ্যোগে টার্কি পালন খাতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো  নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অনগ্রসর এবং উপেক্ষিত এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান (অনুছেদ৬.১৯.৫)

কৃষি ও পল্লী ঋণ সুবিধা বর্গাচাষিসহ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি আয় উৎসারী কর্মকান্ড ও দারিদ্র্য বিমোচন খাতে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য লাঘবকরণ কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার অন্যতম উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর এবং উপেক্ষিত এলাকায় (যেমন- চর, হাওর, উপক‚লীয় এলাকা, পাহাড়ী অঞ্চল ইত্যাদি) কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অনগ্রসর এলাকার কৃষকদের ঋণের ওপর সুদের হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ধার্য করা যেতে পারে।

নেপিয়ার ঘাস চাষে ঋণ প্রদান  (অনুচ্ছেদ৬.১৯.৯)

বর্তমানে দেশে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ঘাসের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাণিজ্যিকভাবে ঘাস উৎপাদন লাভজনক বিবেচিত হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে ঘাসের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে ঘাস চাষে সফলতা লাভের জন্য এখাতে ব্যাংক ঋণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে লক্ষ্যে নেপিয়ার ঘাস চাষে ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকসমূহ সংযুক্ত ঋণ নিয়মাচার অনুসারে কৃষি ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

 

প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচি ঃ খাত/উপখাত (পরিশিষ্ট ক)

২.২। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন

ক) হালের গরু/মহিষ

খ) প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন

গরু মোটাতাজাকরণ

দুগ্ধ খামার

ছাগল/ভেড়ার খামার

গ)হাঁস/মুরগির খামার  (পোলট্রি)

ঘ)কেঁচো কম্পোস্ট সার ।

বাংলাদেশ  ব্যাংক কৃষি ঋন শাখা থেকে প্রকাশিত কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯-২০ হুবহু পেতে এখানে ক্লিক করুন

খামারীদের সুবিধার্থে এবং প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইট থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।তাই এ সমস্ত বিষয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গন্য হবে।এই পোষ্টের কোন তহত্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

খামারীদের জন্য সুখবর “প্রাণিসম্পদ খাতে প্রনোদনা”!

0

              “কৃষি খাতে বিশেষ প্রনোদনামূলক পুর্নঃঅর্থায়ন স্কিম”

দেশব্যাপী চলমান করোনা (কোভিড ১৯) মহামারি প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত খামারী উৎপদক,সরবরাহকারী এবং উদ্যক্তাদের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে।তাই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে খামারী/উৎপাদক/উদ্যোগতাদের সহজ শর্তে ঋণ সহাওতা প্রদানে উদ্যেশ্যে ৫,০০০ (০পাঁচ হাজার) কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম ঘোষনা করা হয়েছে।যার নাম দেওয়া হয়েছে “কৃষি খাতে বিশেষ প্রনোদনামূলক পুর্নঃঅর্থায়ন স্কিম”। প্রান্তিকসহসহ  পর্যায়ে খামারীদেরসহ সকলকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে একটি নির্দেশনা ও জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ ঢাকাস্থ প্রদাহ্ন কার্যালয় হতে গত ১৩ এপ্রিল,২০২০ খ্রি. তারিখে বাংলাদেশ কার্যরত সক্ল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহঈ কর্মকর্তা/ব্যবস্থাপনা পরচালকদের উদ্যেশ্যে একটি সার্কুলার জারি করেন।এই সার্কুলারে নভেল করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবের কারানে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবয়ারহের উদ্যেশ্যে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকার পূনঃ অর্থায়ন স্কীম গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা প্রসঙ্গে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

১. (ক)এ স্কীমের নাম হবে “কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কীম”; তহবিলের পরিমাণ হবে ৫,০০০.০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকা।  বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে এ অর্থায়ন করা হবে;

(খ)   এ স্কীমের আওতায় পুনঃ অর্থায়ন গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যাংকসমূহকে বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি (Participation Agreement) স্বাক্ষর করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে স্বাক্ষরিত অংশগ্রহণ চুক্তিপত্রের (Participation Agreement) মাধ্যমে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকসমূহ এ স্কীমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এ স্কীমের আওতায় ব্যাংকসমূহ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ মেয়াদের মধ্যে গ্রাহকের অনূকুলে ঋণ বিতরণ পূর্বক মাসিক ভিত্তিতে পুন:অর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে ।

(গ)   ব্যাংকসমূহের কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা এবং সক্ষমতার ভিত্তিতে কৃষি ঋণ বিভাগ কর্তৃক ব্যাংকসমূহের অনুকূলে তহবিল বরাদ্দ করা হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পর বরাদ্দকৃত তহবিল হতে পর্যায়ক্রমে বরাদ্দকৃত তহবিলের সমপরিমাণ অর্থায়ন করা হবে।

(ঘ)   ব্যাংকসমূহের বর্তমান গ্রাহকদের মধ্য হতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকগণ বিদ্যমান ঋণ সুবিধার অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ এ স্কীমের আওতায় গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে জামানতের/সহায়ক জামানতেরবিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া নতুন গ্রাহকগণের ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই এর ভিত্তিতে নির্ধারণপূর্বক এ স্কীমের আওতায় বিতরণ করতে পারবে।তবে এ স্কীমের আওতায় গৃহীত ঋণ কোনভাবেই গ্রাহকের পুরাতন ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

(ঙ)   ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিদ্যমান কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন) বর্ণিত বিধিবিধানসমূহ অনুসরণপূর্বক ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং প্রতিটি ঋণের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করবে।

২. ঋণের মেয়াদ ঃ

(ক) অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের তারিখ হতে অনধিক ১৮ মাসের (১২ মাস + গ্রেস পিরিয়ড ৬ মাস)মধ্যে আসল এবং সুদ (বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ১% সুদ হারে) পরিশোধ করবে।

খ) অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহের ন্যায় গ্রাহক পর্যায়েও ঋণের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ঋণ গ্রহণের তারিখ হতে ১৮ মাস (৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ)।

৩. ঋণের সুদের হারঃ

(ক) এ স্কীমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্ধারিত ১% সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে।

(খ) গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪%। উক্ত সুদ হার চলমান গ্রাহক এবং নতুন গ্রাহক উভয় ক্ষেত্রেই প্ের যাজ্য হবে।

৪.    ঋণ বিতরণের খাতঃ

শস্য ও ফসল খাত ব্যতীত কৃষির অন্যান্য চলতি মূলধন নির্ভরশীল খাতসমূহ (যথাঃ হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রানিসম্পদ খাত) ; তবে, কোনো একক খাতে ব্যাংকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ঋণের ৩০% এর অধিক ঋণ বিতরণ করতে পারবেনা। এছাড়াও, যে সকল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কৃষক কর্তৃক উৎপাদিত কৃষিপন্য ক্রয়পূর্বক সরাসরি বিক্রয় করে থাকে তাদেরকেও এ স্কীমের আওতায় ঋণ বিতরণের জন্য বিবেচনাকরা যাবে। তবে, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে ৫.০০ (পাঁচ) কোটি টাকার উর্দ্ধে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না;

৫.    পুনঃঅর্থায়ন আবেদন পদ্ধতিঃ

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য/কাগজপত্রসহ মাসিক ভিত্তিতে মহাব্যবস্থাপক, কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এর নিকট পুনঃঅর্থায়ন দাবি করবেঃ

i)প্রকৃত বিতরণ সংক্রান্ত সনদপত্র,

ii)বিতরণকৃত ঋণের সমন্বিত বিবরণী(সংযুক্ত ছক মোতাবেক);

iii)ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতিপত্র (ডিপি নোট) ও লেটার অব কন্টিনিউটি;   – সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য।

৬. পরিশোধ পদ্ধতিঃ

(ক) বিভিন্ন দফায় ব্যাংকের অনুকূলে ছাড়কৃত অর্থ মেয়াদ পূর্তির মধ্যেইসুদসহ গৃহীত আসলের সমুদয় অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে পরিশোধ করতে হবে ;

(খ)   গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের সকল দায়-দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকের ওপর ন্য¯ Í থাকবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না ;

(গ)   ঋণের বকেয়া নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পরিশোধিত না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত চলতি হিসাব বিকলন করে তা আদায়/সমন্বয় করা হবে ;

(ঘ)   এ স্কীমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের অর্থ বা এর কোন অংশের সদ্ব্যবহার হয়নি মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রতীয়মান হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমান অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২% হারে সুদসহএককালীন আদায় করা হবে।

৭. অন্যান্য শর্ত ঃ

(ক) বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট হতে তহবিলের প্রাপ্যতা সীমা বিবেচনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ঋণ বিতরণ করবে এবং ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করবে ;

(খ)   উক্ত ঋণের জন্য প্রযোজ্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত বর্তমানে অনুসৃত অন্যান্য নীতিমালা যেমন জামানত, আবেদনপত্র গ্রহন ও প্রক্রিয়াকরনের সময়কাল, ঋণ গ্রহীতার যোগ্যতা নিরূপন, ঋণ বিতরণ, ঋণের সদ্ব্যবহার, তদারকি ও আদায় প্রক্রিয়া যথারীতি অনুসৃত হবে ;

(গ)   উপরোক্ত পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদার প্রেক্ষিতে ব্যাংক প্রয়োজনীয় তথ্য, কাগজপত্র এবং দলিলাদির কপি বাংলাদেশ ব্যাংককে সরবরাহ করবে।

(বাংলাদেশ  ব্যাংকের সার্কুলারটি হুবহু পেতে  এখানে ক্লিক করুন খানে ক্লিক করুন  )

খামারীদের সুবিধার্থে এবং প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাঙ্গকের ওয়েব সাইট থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।তাই ক্ষন গ্রহন এবং এ সমস্ত বিষয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গন্য হবে।এই পোষ্টের কোন তহত্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

দেশীয় পদ্ধতিতে খুব সহজে ঘি তৈরি করবেন কিভাবে?

0


দুধ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ঘি তৈরি করা যায়।তবে খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঘি তৈরি পদ্ধতি নিয়ে আজকে আলোচনা করব।যারা ছোট খামারী অর্থাৎ যাদের খামারে দুধ উৎপাদন কম অথবা কোন দুর্যোগ জনিত কারনে আপনি যদি দুধ বিক্রি করতে  না পারেন তাহলে খুব সহজে এই পদ্ধতিতে দুধ থেকে ঘি তৈরি করতে পারবেন।কেউ যদি খাঁটি ঘি তৈরির উদ্দ্যেশ্যে দুধ কিনে ঘি তৈরি করতে চান তাহলেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।আসুন এবার আমরা ধাপে ধাপে ঘি তৈরি প্রক্রিয়াগুলো জেনে নিই।

প্রথম ধাপঃ (ভাল মানের দুধ সংগ্রহ)

ভাল মানের দুধ

ভাল ঘি তৈরির জন্য সবচেয়ে যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ন তা হল ভাল মানের দুধ সংগ্রহ। দুধের গুনগত মানের উপর নির্ভর করব ঘি এর গুনগত মান।দুধের মধ্যে যে চর্বি বা ফ্যাট থাকে তার উপর নির্ভর করে ঘি এর পরিমান কতটূকু হবে।যদি ধরে নিই দুধে ৪% ফ্যাট আছে তাহলে মোটামুটি ভাবে ২৫-২৬ লিটার দুধ দিয়ে আপনি ১ কেজি খাঁটি ঘি পেতে পারেন।আর যেই গরুগুলো দানাদার খাদ্যের চেয়ে কাঁচা ঘাসের উপর বেশি নির্ভরশীল তাদের দুধ থেকে তৈরি ঘি এর গুনগত মান তুলনামুলকভাবে ভাল হয়।

দ্বিতীয় ধাপঃ (দুধ ফুটানো)

যে দুধ থেকে ঘি তৈরী করবেন তা একটি পরিষ্কার সিলভারের অথবা স্টীলের পাত্রে নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমান ফুটাতে হবে।যাতে কোন ক্ষতিকর জীবানু থাকতে না পারে। দুধ ফুটতে ফুটতে সর পড়া শুরু করলে ফুটানো বন্ধ করতে হবে।

দুধ ভাল করে ফুটাতে হবে

তৃতীয় ধাপঃ ( দুধের গাঁজন বা ফার্মেন্টেশন)

সহজ কথায় বলতে গেলে এই ধাপে সিদ্ধ দুধ থেকে দই তৈরি করা হয়।ফুটানো দুধকে ঘরের তাপমাত্রায় শীতল করে ঐ দুধের সাথে দই অথবা পুরনো দইয়ের পানি যুক্ত করতে হবে। আপনি চাইলে লেবুর রসের পানি বা তেতুল গুলানো পানি দিয়েও এই কাজটি করতে পারেন।তবে দইয়ের ব্যবহার সর্বোত্তম।আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল, দুধের সাথে পরিমান মত দই মিশাতে হবে।সাধারনত প্রতি কেজি দুধের জন্য ১/২ টেবিল চামচ পরিমান দই দিলেই যতেষ্ঠ।

দুধের ফার্মেন্টেশন করে দইয়ে পরিনত করতে হবে

এই দই  উক্ত দুধের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে অন্ধকার শীতল স্থানে ডেকে রাখতে হবে প্রায় ৮ ঘন্টা।ধরেন আপনি যদি সন্ধ্যা বেলা দই মিশ্রিত করে রেখে দেন তাহলে সকাল বেলা সবটুকু দুধ দইয়ে পরিনত হবে।অর্থাৎ দুধের গাঁজন বা ফার্মেন্টেশন সম্পন্ন হবে।তাপমাত্রা, সংরক্ষনের পরিবেশ, দইয়ের ধরন, দুধের ফ্যাটের পরিমান ইত্যাদি কিছু বিষয়ের কারনে ফার্মেন্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় কম বেশি হতে পারে।

চতুর্থ ধাপঃ (মন্থন)

দই থেকে মাখন আলাদা করার জন্য দইকে ঘুঠনী দিয়ে ঘূটতে হবে।যারা নিয়মিত ঘি তৈরি করে তারা বিদ্যুৎ চালিত ঘুঠণী ব্যবহার করতে পারে।তবে যারা অনিয়মিত বা দূর্যোগকালীন অবস্থায় ঘি তৈরি করতে চান তারা বাজার থেকে সাধারন ঘূঠনী কিনেও ব্যবহার করতে পারেন।ঐতিহ্যগতভাবেও মাখন তৈরি জন্য বিশেষ ঘূঠনী ব্যবহৃত হয় যুগ যুগ ধরে।

কাঠের তৈরী ঘুঠনী

হাতে চালিত য়ান্ত্রীক ঘুঠনী

তবে ঘঠুণী যা দিয়েই তৈরি হক না কেন।ঘুঠার সময় নির্দিষ্ট একটি নিয়ম অনুসরন করতে হবে।তা হলে একবার ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে সেই দিকে(Clock wise) এবং পরের পার তার বিপরিত দিকে ঘুরাতে হবে (Anti clock wise) তাহলে ধীরে ধীরে মাখন(Butter) এবং ঘোল (Butter Milk) আলাদা হতে থাকবে।ইলেক্ট্রিক মেশিন দিয়ে করলে মাখনটাকে বিকেন্দ্রিকরন (Centrifugal) করা হয়।

পঞ্চম ধাপঃ (মাখন আলাদ করা)

পর্যাপ্ত পরিমান ঘুঠণীর পর মাখন এবং ঘোলের মিশ্রন থেকে মাখনকে আলাদা করতে হবে ।এর ফলে মাখনে তরলের পরিমান কমে যায়।ঘুঠনী যত ভাল হবে তত বেশি মাখন আলাদা কবে।মাখন আলাদ করার পূর্বে একটু ঠান্ডা পানি মিশ্রিত করা যেতে পারে।ফলে মাখন কিছুটা শক্ত হয়ে যাবে এবং আলাদা করা সহজ হবে।যদি কোয়েক বার করে মাখন তৈরি করতে হয় তাহলে প্রত্যেক বার তৈরি করা মাখন শীতল স্থানে সংরক্ষন করতে হবে।

মাখ পৃথক করত্র হবে

ষষ্ট ধাপঃ (মাখন জ্বাল দেওয়া)

মাখনের মধ্যেও জলীয় অংশ থাকে কিন্তু ভাল ঘি তৈরি করতে হলে তাকে জলীয় অংশ মুক্ত করতে হবে।তাই মাখন তৈরি পরবর্তী পর্যায়ে মাখন জ্বাল দিয়ে শূকিয়ে ফেলতে হবে।এজন্য একটি ষ্টীলের পাত্রে মাখন নিয়ে সেটাকে হালকা মাঝারী আঁচের আগুনে জাল দিতে হবে।জ্বাল দেওয়ার এক পর্যায়ে গিয়ে মাখন ফুটতে থাকবে এবং ফুট ফাট শব্দ শূরু করবে।তবে সেই শব্দও এক সময় কমে আসবে।

মাখন ভাল ভাবে জ্বাল দিতে হবে

সপ্তম ধাপঃ (ঘি সংগ্রহ)

সিদ্ধ হতে হতে এক সময় দেখবেন মাখন একদম পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং পাত্রের তলায় কিছু পদার্থে তলানী পড়েছে ।তখনই বুঝতে হবে ঘি তৈরির প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে।এসসয় আপনি খাঁটি ঘি এর সেই চির পরিচিত সুন্দর ঘ্রানটি পাবেন।আর দেরি না করে চুলা থেকে  পাত্র নামিয়ে ছাঁকনী দিয়ে ছেকেঁ ঘি আলাদা করে প্রয়োজনীয় পাত্রে সংরক্ষন করতে পারেন। মনে রাখতে হবে ঘি সব সময় শুকনো পাত্রে সংরক্ষন করতে হবে এবং আলো থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষন করতে হবে।

ঘি তোরীর চূড়ান্ত পর্যায়

এখবে ঘি তৈরি করে আপনি কয়েক মাস পর্যন্ত ঘি সংরক্ষন করতে পারেন এবং প্রয়োজন মত সময়ে ঘি বিক্রি অথবা ব্যবহার করতে পারেন।

error: Content is protected !!