Home Blog Page 3

করোনা দূর্যোগ মোকাবলিায় প্রাণিসম্পদ খাতে প্রনোদনা কারা পাবেন এবং কিভাব পাবনে?

0


                                 কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯-২০

নভেল করোনা ভাইরাস মহামারি আকারে ছড়িয়ে পরার ফলে প্রাণিসম্পদ খাতের সাথে সংযুক্ত খামারী/উৎপাদ/পরিবেশক সহ সংশ্লিষ্টরা মারাত্মক ক্ষতির সম্মুখীন হয়েছে।সেই ক্ষতি কাটিয়ে উঠতে যাতে মুল্ধন সংকটে পড়তে না হয় সে জন্য সরকার ৫,০০০ কোটি টাকার প্রনোদনা স্কিম চালু করার সিদ্ধান্ত নেয়।এর ধারবাহিকতায় বাংলাদেশ ব্যাংক ৫,০০০ কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম গঠন ও পরিচালনার নীতি প্রসঙ্গে একটি সার্কুলার প্রকাশ করেন। এই সার্কুলারে এ স্কিমের নাম দেওয়া হয় “কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কীম” (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)এই সার্কুলারে সূচনা অংশের ১(চ) ভাগে বলা হয়েছে “ঋণ বিতরনের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিদ্যমান কৃষি ও পল্লী ঋন নীতিমালায় বর্নিত বিধিবিধানসমূহ অনুসরনপুর্বক ব্যাংকার গ্রাহক-গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং প্রতিটি ঋনের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষন করবে।”

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ  কর্তৃক প্রকাশিত ২০১৯-২০ অর্থ বছরের কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা  মধ্যে প্রাণিসম্পদ খাতে ঋন গ্রহীতাদের সম্পর্কে বলা হয়েছে।

ঋণ গ্রহীতা সনাক্তকরণ

ব্যাংকগুলো কৃষি ও পল্লী ঋণের আবেদনকারীদের জাতীয় পরিচয়পত্র ও কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড-এর ভিত্তিতে প্রকৃত কৃষক সনাক্ত করবে। কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ডের বিপরীতে মাত্র ১০ টাকা জমা গ্রহণপূর্বক খোলা একাউন্টধারী কষৃ কদের ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে শুধুমাত্র পাশবই-এর ভিত্তিতেই প্রকৃত কৃষক সনাক্ত করা যেতে পারে। জাতীয় পরিচয়পত্র আছে কিন্তু কৃষি উপকরণ সহায়তা কার্ড নেই সে ক্ষেত্রে প্রয়োজনে ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান বা স্থানীয় স্কুল/কলেজের প্রধান শিক্ষক অথবা ব্যাংকের কাছে গ্রহণযোগ্য ব্যক্তির দেওয়া প্রত্যয়নপত্রও প্রকৃত কৃষক সনাক্তকরণের কাজে ব্যবহার করা যেতে পারে। (অনুচ্ছদে ৫.০১)

ঋণ গ্রহীতার যোগ্যতা

কৃষি কাজে সরাসরি নিয়োজিত প্রকৃত কৃষকগণ কৃষি ঋণ প্রাপ্তির জন্য যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন। পল্লী অঞ্চলে আয় উৎসারী কর্মকান্ডে জড়িতরাও কৃষি ও পল্লী ঋণের সংশ্লিষ্ট খাতে ঋণ সুবিধা পেতে পারেন। তবে, সাধারণভাবে খেলাপি ঋণ গ্রহীতাগণ নতুন ঋণ পাবার যোগ্য বলে বিবেচিত হবেন না। উল্লেখ্য, ক্ষুদ্র, প্রান্তিক কৃষক ও বর্গাচাষিসহ অন্যান্য কৃষকদেরকে সহজ পদ্ধতিতে একক/গ্রুপ ভিত্তিতে কৃষি ঋণ প্রদান করা যাবে।(অনুচ্ছদে ৫.০২)

আবেদনপত্র গ্রহণ, প্রাপ্তিস্বীকার ও বিবেচনা

গ্রাহকের আবেদনপত্রের প্রাপ্তি স্বীকার করতে হবে। আবেদনপত্র প্রাপ্তির পর ঋণ মঞ্জুরি ও বিতরণের মধ্যে সময়ের ব্যবধান যৌক্তিকীকরণ এবং গ্রাহকের কোনো অভিযোগ থাকলে তা দ্রুত নিস্পত্তির ব্যবস্থা করতে হবে। বিশেষ করে শস্য ও ফসল চাষের জন্য ঋণের আবেদন দ্রুততম সময়ে নিষ্পত্তি করতে হবে। এ ক্ষেত্রে ঋণের আবেদন নিষ্পত্তিকরণের সময়সীমা হবে আবেদনপত্র জমার দিন হতে সর্বোচ্চ  ১০ কর্মদিবস। বাতিলকৃত আবেদনপত্রগুলো বাতিলের কারণ উল্লেখপূর্বক একটি ফাইলে সংরক্ষণ করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের পরিদর্শন দল এবং স্ব- স্ব ব্যাংকের নিরীক্ষা দলের যাচাইয়ের জন্য ফাইলটি সংরক্ষণ করতে হবে।  ( অনুচ্ছেদ ৫.০৪)

আবেদনপত্র প্রক্রিয়াকরণ ফি/চার্জ

কৃষকের আবেদনের প্রেক্ষিতে মাত্র ১০ টাকা প্রাথমিক জমার বিনিময়ে হিসাব খোলা  যাবে। অগ্রাধিকার প্রাপ্ত খাত হিসেবে কৃষক/গ্রাহক পর্যায়ে স্বল্প সুদে ঋণ প্রাপ্তি নিশ্চিত করার লক্ষ্যে ব্যাংকসমূহ কর্তৃক সকল প্রকার কৃষি ও পল্লী ঋণে নির্ধারিত সুদ ব্যতীত অন্য কোন নামে কোন প্রকার চার্জ, প্রসেসিং ফি/মনিটরিং ফি ইত্যাদি ধার্য করা যাবে না। এছাড়া, ক্ষুদ্রঋণ প্রতিষ্ঠান কর্তৃক ব্যাংক-এমএফআই লিংকেজ/পার্টনারশীপের মাধ্যমে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে মাইক্রোক্রেডিট রেগুলেটরি অথরিটি কর্তৃক নির্ধারিত ফি/চার্জ ব্যতীত অন্য কোন ফি/চার্জ ধার্য করা যাবে না। (অনুচ্ছেদ ৫.০৫)

ঋণ মঞ্জুরির ক্ষেত্রে ব্যাংকসমূহ এবং ব্যাংকের সাথে পার্টনারশীপের ভিত্তিতে কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণকারী ক্ষুদ্র ঋণ প্রতিষ্ঠানসমূহ কর্তৃক নিম্ন লিখিত চার্জ ডকুমেন্ট ব্যতীত অন্য কোন চার্জ ডকুমেন্ট গ্রহণ করতে পারবে নাঃ

  1. ডিপি নোট (১০ টাকা থেকে ৫০ টাকার স্ট্যাম্প/সরকারী নির্দেশনা মোতাবেক)
  2. লেটার অব হাইপোথিকেশন (স্ট্যাম্প প্রয়োজন নেই)
  3. লেটার অব গ্যারান্টি ব্যক্তিগত (স্ট্যাম্প প্রয়োজন নেই)

জামানত

ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে জামানত গ্রহণ করা/না করার বিষয়টি ব্যাংক/অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমহূ নিজের প্রচলিত শর্তে ব্যাংক-গ্রাহক স¤পর্কের ভিত্তিতে নির্ধারণ করবে। কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির আওতায় আয়-উৎসারী কর্মকান্ডে ঋণ প্রদানের ক্ষেত্রে গ্রুপ/ব্যক্তিগত গ্যারান্টি গ্রহণের বিষয়টি বিবেচনা করা যেতে পারে। (অনুচ্ছেদ ৫.০৮)

ঋণ বিতরণের জন্য বরাদ্দকৃত এলাকা

‘লীড ব্যাংক’ পদ্ধতির আওতায় সংশ্লিষ্ট ব্যাংক শাখাসমূহ তাদের অনকুূলে বরাদ্দকৃত ইউনিয়নসমূহে ফসলসহ কৃষির বিভিন্ন খাতে ঋণ প্রদান করবে। তবে, অন্য ব্যাংক শাখার নামে বরাদ্দকৃত পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নের কোন আগ্রহী আবেদনকারীকে সংশ্লিষ্ট শাখার অনাপত্তিপত্র দাখিল সাপেক্ষে ঋণ প্রদান করা যাবে। এজন্য পার্শ¦বর্তী ব্যাংক শাখাসমূহের মধ্যে ঋণ গ্রহীতাদের তালিকা বিনিময় করতে হবে। এছাড়া, বর্তমানে বেসরকারি ও বিদেশী ব্যাংকসহ বাংলাদেশে কার্যরত সকল তফসিলী ব্যাংকের জন্য কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ বাধ্যতামূলক হওয়ায় লীড ব্যাংক পদ্ধতির আওতায় যে ইউনিয়ন যে ব্যাংক শাখার অনুকূলে বরাদ্দকৃত সেই ব্যাংক শাখা হতে অনাপত্তিপত্র নিয়ে উক্ত এলাকায় বেসরকারি ও বিদেশি ব্যাংকসমূহ কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণ করবে। (অনুচ্ছেদ ৫.০৯)

কৃষি ঋণের প্রধান খাতে ঋণ বিতরণ

কৃষির প্রধান ৩টি খাতে (যথা-শস্য, মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ) অন্যান্য খাতের চেয়ে ঋণ বিতরণে অগ্রাধিকার দিতে হবে। (অনুচ্ছেদ ৫.১৫)

কর্মসূচির আওতাভুক্ত খাত/উপখাতসমূহ

কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির আওতাভুক্ত খাত/উপ-খাতসমূহ নিম্নরূপ ঃ (অনুচ্ছেদ ৬.০১)

ক)      শস্য/ফসল (ধান, গম, ডাল, তৈলবীজ ইত্যাদিসহ পরিশিষ্ট-ঙ তে উল্লিখিত সকল ফসল);

খ)       মৎস্য সম্পদ;

গ)       প্রাণিসম্পদ;

ঘ)       কৃষি যন্ত্রপাতি (ব্যবহারকারী পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণ);

ঙ)       সেচ যন্ত্রপাতি (ব্যবহারকারী পর্যায়ে প্রদত্ত ঋণ);

চ)       বীজ উৎপাদন

ছ)       শস্যগুদাম ও বাজারজাতকরণ (শুধুমাত্র নিজস্ব উৎপাদিত ফসল গুদামজাতকরণ ও বাজারজাতকরণ);

জ)      দারিদ্র্য বিমোচন ও আয় উৎসারী কর্মকান্ড (পল্লী অঞ্চলের দরিদ্র জনগোষ্ঠির আয় উৎসারী কর্মকান্ড প্রদত্ত ঋণ);

ঝ)      অন্যান্য (ঋণ নিয়মাচারে উল্লিখিত হয়নি এমন অপ্রচলিত ফসল চাষ/কৃষিতে প্রদত্ত ঋণ)।

প্রাণিসম্পদ খাতে ঋণ প্রদান (অনুচ্ছেদ ৬.০৫)

বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে প্রাণিসম্পদ খাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। কিন্তু বর্তমানে দেশে প্রয়োজনের তুলনায় মাংস ও দুগ্ধ সরবরাহের পরিমাণ অপ্রতুল। প্রাণিসম্পদ উন্নয়নের লক্ষ্যে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্য অর্জনে ব্যাংক/

আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রাণিসম্পদের প্রচলিত নিম্নবর্ণিত খাত/উপখাতসমূহে ঋণ বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে। ২০১৯-২০  অর্থবছরের কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচির অধীনে ব্যাংকগুলোর বার্ষিক লক্ষ্যমাত্রার ন্যূনতম ১০ শতাংশ প্রাণিসম্পদ খাতে বিতরণ করতে হবে। (অনুচ্ছেদ ৬.০৫)

গবাদি পশু (অনুচ্ছেদ ৬.০৫.১)

ক)      হালের বলদ, দুগ্ধ খামার স্থাপন, ছাগল/ভেড়ার খামার স্থাপন, গরু মোটাতাজাকরণ ইত্যাদিতে ঋণ প্রদানের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা ব্যাংক গ্রহণ করবে।

খ)       গরুর পাশাপাশি মহিষ পালন একটি লাভজনক খাত। গরুর মতো মহিষ হতেও দুধ ও মাংস পাওয়া যায়। পাশাপাশি হালচাষ এবং গ্রামীণ পরিবহণেও মহিষের যথেষ্ট গুরুত্ব রয়েছে। পরিবেশগত এবং প্রথাগত কারণে বাংলাদেশের চরাঞ্চলসহ যে সকল এলাকায় মহিষ পালন লাভজনক সে সকল এলাকায় মহিষ পালনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       ব্যাংকের নিজস্ব প্রশিক্ষণ প্রাপ্ত অফিসার বা একজন ভেটেরিনারী চিকিৎসক কর্তৃক সময়ে সময়ে গরু/ছাগলের খামার পরিদর্শনের ব্যবস্থা করা যেতে পারে। উক্ত পরিদর্শন প্রতিবেদনের আলোকে দ্রæত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য গ্রাহকদের ব্যাংক শাখার মাধ্যমে প্রয়োজনীয় পরামর্শ দেয়া যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

দুগ্ধ উৎপাদন ও কৃত্রিম প্রজনন খাতে পুনঃঅর্থায়ন স্কীম ( অনুচ্ছেদ ৬.০৫.২)

দেশের বেকার যুবকদের আত্মকর্মসংস্থান, পুষ্টি চাহিদা পূরণসহ গুঁড়াদুধ ও দুগ্ধজাত সামগ্রীর আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে বৈদেশিক মুদ্রা সাশ্রয়ার্থে দুগ্ধ উৎপাদনে স্বয়ংসম্পূর্ণতা অর্জনের লক্ষ্যে গাভী লালন-পালন এবং কৃত্রিম প্রজননের মাধ্যমে সংকর জাতের গাভীপালনের জন্য ৫ (পাঁচ) বছর পর্যন্ত নবায়ন/আবর্তনযোগ্য (জবাড়ষারহম) ২০০.০০ (দুইশত) কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম গঠন করা হয়। এ স্কীমের আওতায় গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার সর্বোচ্চ ৪%। ব্যাংক/বিশেষায়িত আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বিতরণকৃত ঋণের বিপরীতে সুদ ক্ষতি/ভর্তুকি বাবদ বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট অতিরিক্ত ৫% দাবী করতে পারবে। এছাড়া, অংশগ্রহণকারী ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো বাংলাদেশ ব্যাংক হতে ব্যাংক রেটে (বর্তমানে ৫%, যা পরিবর্তনশীল) পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাচ্ছে। বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে স্বাক্ষরিত অংশগ্রহণ চুক্তিপত্রের আওতায় সরকারী ও বেসরকারী খাতের ১৪টি ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠান ইতোমধ্যে এ স্কীমের আওতায় সমুদয় অর্থ গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণ সম্পন্ন করেছে।

পোলট্রি খাত (অনুচ্ছেদ ৬.০৫.৩)

ডিম ও মাংস সরবরাহের মাধ্যমে দেশের প্রোটিন ঘাটতি পূরণে পোলট্রি খাত একটি গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। ইতোমধ্যে নিজের একটি অবস্থান তৈরি করে নেয়া পোলট্রি শিল্পের ব্যাকওয়ার্ড এবং ফরওয়ার্ড লিঙ্কেজ কর্মকান্ড কর্মসংস্থান সৃষ্টির পাশাপাশি বাংলাদেশের জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। বর্তমানে দেশে ডিম ও মাংসের চাহিদার তুলনায় সরবরাহের পরিমাণ অপ্রতুল। পোলট্রি খাতের উন্নয়নের মাধ্যমে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্য অর্জনের লক্ষ্যে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহকে প্রাণিসম্পদের প্রচলিত নিম্নবর্ণিত খাত/উপখাতসমূহে ঋণ বিতরণের প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে ঃ

ক)      হাঁস-মুরগির খামার স্থাপন এবং হাঁ স-মুরগির খাদ্য, টিকা, ঔষধপত্র μয় ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। এছাড়া কোয়েল, খরগোশ, গিনিপিগ ইত্যাদির বিভিন্ন লাভজনক খামার স্থাপনের জন্য ঋণ প্রদান করা যেতে পারে। পোলট্রি খাতে ঋণ প্রদানের কার্যμম একটি নির্দিষ্ট এলাকায় কেন্দ্রীভ‚ত না রেখে ভৌগোলিক অবস্থান নির্বিশেষে দেশের বিভিন্ন অঞ্চলে এ খাতে ঋণ প্রদানের প্রচেষ্টা গ্রহণ করা যেতে পারে।

খ)       পরিবেশগত এবং প্রথাগত কারণে বাংলাদেশের বিল এবং জলা এলাকাসহ যে সকল এলাকায় পারিবারিক উদ্যোগে হাঁস পালন লাভজনক সে সকল এলাকায় হাঁস পালনের জন্য প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       পোলট্রি বর্জ্য থেকে বায়োগ্যাস ও বিদ্যুৎ উৎপাদন করা যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহের মধ্যে ব্রয়লার এবং লেয়ার মুরগি পালনে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি  ব্যাংক ও অর্থায়নকারী প্রতিষ্ঠানসমূহের অনুসরণের জন্য এতদ্সঙ্গে সংযুক্ত করা হলো। অন্যান্য খাতসমূহে ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি নির্ধারণে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

টার্কি পাখি পালনে ঋণ প্রদান ( অনুচ্ছেদ ৬.০৫.৪)

বাংলাদেশে টার্কি পাখি পালন μমেই জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। টার্কি পাখি পালনের জন্য উন্নত অবকাঠামোর দরকার হয় না এবং তুলনামূলক খরচ কম হওয়ায় এদেশের মানুষ টার্কি পালনে উদ্বুদ্ধ হচ্ছে। টার্কির মাংসে প্রোটিনের পরিমাণ বেশি এবং চর্বির আধিক্য কিছুটা কম হওয়ায় এটি অত্যন্ত স্বাস্থ্যসম্মত। বর্তমানে বাণিজ্যিকভাবে খামার করে টার্কি পালনে লাভবান হচ্ছে খামারীরা। টার্কি পাখি পালন একদিকে যেমন গরু বা খাসির মাংসের বিকল্পরূপে প্রোটিনের চাহিদা পূরণ করছে অন্য দিকে কর্মসংস্থান সৃষ্টির মাধ্যমে জাতীয় অর্থনীতিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। টার্কি পাখি পালনের প্রসার ঘটানোর মাধ্যমে সরকারের প্রাণিসম্পদ নীতিমালার বাস্তবায়ন ও উদ্দেশ্যও অর্জন করা সম্ভব। এলক্ষ্যে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানসমূহের মাধ্যমে টার্কি পাখি পালনে নিম্নবর্ণিত খাতসমূহে ঋণ প্রদান করা যেতে পারেঃ

ক)      টার্কি বাচ্চা, ছোট আকারের খামারের জন্য (সর্বোচ্চ ১০০০ টি টার্কি পাখি পালনের জন্য) এবং খাদ্য, টিকা ও ঔষধপত্র  ইত্যাদি খাতে ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

খ)       টার্কি পালনে তুলনামূলক খরচ কম, মাংস উৎপাদন ক্ষমতা বেশী ও ঝামেলাহীনভাবে দেশী মুরগীর মত পালন করা যায় বিধায় দেশের সকল অঞ্চলে এ খাতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

গ)       টার্কি পালনে অন্যান্য পাখির তলু নায় রোগবালাই কম এবং খামারের ঝুঁকি কম হওয়ায় পারিবারিক উদ্যোগে টার্কি পালন খাতে প্রয়োজনীয় ঋণ প্রদান করা যেতে পারে।

উপর্যুক্ত খাতসমূহে ঋণ প্রদানের জন্য ঋণের পরিমাণ ও মেয়াদ নিরূপণ এবং পরিশোধসূচি প্রণয়নের ক্ষেত্রে ব্যাংক/আর্থিক প্রতিষ্ঠানগুলো  নিজেরাই এবং প্রয়োজনবোধে স্থানীয় প্রাণিসম্পদ কর্মকর্তাদের সাথে পরামর্শ করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহণ করবে।

অনগ্রসর এবং উপেক্ষিত এলাকায় অগ্রাধিকার ভিত্তিতে ঋণ প্রদান (অনুছেদ৬.১৯.৫)

কৃষি ও পল্লী ঋণ সুবিধা বর্গাচাষিসহ ক্ষুদ্র ও প্রান্তিক পর্যায়ের কৃষকদের কাছে পৌঁছানোর পাশাপাশি আয় উৎসারী কর্মকান্ড ও দারিদ্র্য বিমোচন খাতে ঋণ প্রদানের মাধ্যমে স্ব-কর্মসংস্থান সৃষ্টি ও দারিদ্র্য লাঘবকরণ কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালার অন্যতম উদ্দেশ্য। এই উদ্দেশ্য বাস্তবায়নে অপেক্ষাকৃত অনগ্রসর এবং উপেক্ষিত এলাকায় (যেমন- চর, হাওর, উপক‚লীয় এলাকা, পাহাড়ী অঞ্চল ইত্যাদি) কৃষি ও পল্লী ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে অগ্রাধিকার প্রদান করতে হবে। অনগ্রসর এলাকার কৃষকদের ঋণের ওপর সুদের হার তুলনামূলকভাবে কিছুটা কম ধার্য করা যেতে পারে।

নেপিয়ার ঘাস চাষে ঋণ প্রদান  (অনুচ্ছেদ৬.১৯.৯)

বর্তমানে দেশে গবাদি পশুর খাদ্য হিসেবে ঘাসের চাহিদা ব্যাপক বৃদ্ধি পাওয়ায় এবং বাণিজ্যিকভাবে ঘাস উৎপাদন লাভজনক বিবেচিত হওয়ায় দেশের উত্তরাঞ্চলসহ সারাদেশে ঘাসের চাষাবাদ বৃদ্ধি পেয়েছে। বাণিজ্যিকভাবে ঘাস চাষে সফলতা লাভের জন্য এখাতে ব্যাংক ঋণের প্রয়োজনীয়তা রয়েছে। সে লক্ষ্যে নেপিয়ার ঘাস চাষে ঋণ প্রদানের জন্য ব্যাংকসমূহ সংযুক্ত ঋণ নিয়মাচার অনুসারে কৃষি ঋণ বিতরণ করতে পারবে।

 

প্রাণীসম্পদ উন্নয়নে বার্ষিক কৃষি ও পল্লী ঋণ কর্মসূচি ঃ খাত/উপখাত (পরিশিষ্ট ক)

২.২। প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন

ক) হালের গরু/মহিষ

খ) প্রাণিসম্পদ উন্নয়ন

গরু মোটাতাজাকরণ

দুগ্ধ খামার

ছাগল/ভেড়ার খামার

গ)হাঁস/মুরগির খামার  (পোলট্রি)

ঘ)কেঁচো কম্পোস্ট সার ।

বাংলাদেশ  ব্যাংক কৃষি ঋন শাখা থেকে প্রকাশিত কৃষি ও পল্লী উন্নয়ন নীতিমালা ২০১৯-২০ হুবহু পেতে এখানে ক্লিক করুন

খামারীদের সুবিধার্থে এবং প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাংকের ওয়েব সাইট থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।তাই এ সমস্ত বিষয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গন্য হবে।এই পোষ্টের কোন তহত্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

খামারীদের জন্য সুখবর “প্রাণিসম্পদ খাতে প্রনোদনা”!

0

              “কৃষি খাতে বিশেষ প্রনোদনামূলক পুর্নঃঅর্থায়ন স্কিম”

দেশব্যাপী চলমান করোনা (কোভিড ১৯) মহামারি প্রাণিসম্পদের সাথে জড়িত খামারী উৎপদক,সরবরাহকারী এবং উদ্যক্তাদের উপর বিরুপ প্রভাব ফেলেছে।তাই বাংলাদেশ সরকারের পক্ষ হতে ব্যাংকের মাধ্যমে সহজ শর্তে খামারী/উৎপাদক/উদ্যোগতাদের সহজ শর্তে ঋণ সহাওতা প্রদানে উদ্যেশ্যে ৫,০০০ (০পাঁচ হাজার) কোটি টাকার পুনঃঅর্থায়ন স্কীম ঘোষনা করা হয়েছে।যার নাম দেওয়া হয়েছে “কৃষি খাতে বিশেষ প্রনোদনামূলক পুর্নঃঅর্থায়ন স্কিম”। প্রান্তিকসহসহ  পর্যায়ে খামারীদেরসহ সকলকে বিষয়টি অবহিত করার জন্য মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয় থেকে একটি নির্দেশনা ও জারি করা হয়েছে।

বাংলাদেশ ব্যাংকের কৃষি ঋণ বিভাগ ঢাকাস্থ প্রদাহ্ন কার্যালয় হতে গত ১৩ এপ্রিল,২০২০ খ্রি. তারিখে বাংলাদেশ কার্যরত সক্ল তফসিলি ব্যাংকের প্রধান নির্বাহঈ কর্মকর্তা/ব্যবস্থাপনা পরচালকদের উদ্যেশ্যে একটি সার্কুলার জারি করেন।এই সার্কুলারে নভেল করোনা ভাইরাস এর প্রাদুর্ভাবের কারানে কৃষি খাতে চলতি মূলধন সরবয়ারহের উদ্যেশ্যে ৫,০০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকার পূনঃ অর্থায়ন স্কীম গঠন ও পরিচালনার নীতিমালা প্রসঙ্গে নির্দেশনা প্রদান করা হয়।এই নির্দেশনায় বলা হয়েছে।

১. (ক)এ স্কীমের নাম হবে “কৃষি খাতে বিশেষ প্রণোদনামূলক পুনঃঅর্থায়ন স্কীম”; তহবিলের পরিমাণ হবে ৫,০০০.০০ (পাঁচ হাজার) কোটি টাকা।  বাংলাদেশ ব্যাংকের নিজস্ব উৎস থেকে এ অর্থায়ন করা হবে;

(খ)   এ স্কীমের আওতায় পুনঃ অর্থায়ন গ্রহণে ইচ্ছুক ব্যাংকসমূহকে বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে একটি অংশগ্রহণ চুক্তি (Participation Agreement) স্বাক্ষর করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংক এর সাথে স্বাক্ষরিত অংশগ্রহণ চুক্তিপত্রের (Participation Agreement) মাধ্যমে বাংলাদেশে কার্যরত তফসিলি ব্যাংকসমূহ এ স্কীমের আওতায় পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা গ্রহণ করতে পারবে। এ স্কীমের আওতায় ব্যাংকসমূহ ৩০ সেপ্টেম্বর, ২০২০ মেয়াদের মধ্যে গ্রাহকের অনূকুলে ঋণ বিতরণ পূর্বক মাসিক ভিত্তিতে পুন:অর্থায়নের জন্য আবেদন করতে হবে ।

(গ)   ব্যাংকসমূহের কৃষি ঋণ বিতরণের লক্ষ্যমাত্রা এবং সক্ষমতার ভিত্তিতে কৃষি ঋণ বিভাগ কর্তৃক ব্যাংকসমূহের অনুকূলে তহবিল বরাদ্দ করা হবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণের পর বরাদ্দকৃত তহবিল হতে পর্যায়ক্রমে বরাদ্দকৃত তহবিলের সমপরিমাণ অর্থায়ন করা হবে।

(ঘ)   ব্যাংকসমূহের বর্তমান গ্রাহকদের মধ্য হতে ক্ষতিগ্রস্থ গ্রাহকগণ বিদ্যমান ঋণ সুবিধার অতিরিক্ত ২০ শতাংশ পর্যন্ত ঋণ এ স্কীমের আওতায় গ্রহণ করতে পারবে। এক্ষেত্রে ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের ভিত্তিতে জামানতের/সহায়ক জামানতেরবিষয়ে ব্যাংক সিদ্ধান্ত গ্রহণ করতে পারবে। এছাড়া নতুন গ্রাহকগণের ঋণের সর্বোচ্চ পরিমাণ সংশ্লিষ্ট ব্যাংক প্রয়োজনীয় যাচাই-বাছাই এর ভিত্তিতে নির্ধারণপূর্বক এ স্কীমের আওতায় বিতরণ করতে পারবে।তবে এ স্কীমের আওতায় গৃহীত ঋণ কোনভাবেই গ্রাহকের পুরাতন ঋণ সমন্বয়ের জন্য ব্যবহার করা যাবে না।

(ঙ)   ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংকগুলো বিদ্যমান কৃষি ও পল্লী ঋণ নীতিমালায় (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন) বর্ণিত বিধিবিধানসমূহ অনুসরণপূর্বক ব্যাংকার-গ্রাহক সম্পর্কের আলোকে কেস-টু-কেস ভিত্তিতে বিবেচনা করবে এবং প্রতিটি ঋণের জন্য পৃথক হিসাব সংরক্ষণ করবে।

২. ঋণের মেয়াদ ঃ

(ক) অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ পুনঃঅর্থায়ন গ্রহণের তারিখ হতে অনধিক ১৮ মাসের (১২ মাস + গ্রেস পিরিয়ড ৬ মাস)মধ্যে আসল এবং সুদ (বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক নির্ধারিত ১% সুদ হারে) পরিশোধ করবে।

খ) অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহের ন্যায় গ্রাহক পর্যায়েও ঋণের সর্বোচ্চ মেয়াদ হবে ঋণ গ্রহণের তারিখ হতে ১৮ মাস (৬ মাস গ্রেস পিরিয়ডসহ)।

৩. ঋণের সুদের হারঃ

(ক) এ স্কীমের আওতায় অংশগ্রহণকারী ব্যাংকসমূহ বাংলাদেশ ব্যাংক হতে নির্ধারিত ১% সুদ হারে পুনঃঅর্থায়ন সুবিধা পাবে।

(খ) গ্রাহক পর্যায়ে সুদের হার হবে সর্বোচ্চ ৪%। উক্ত সুদ হার চলমান গ্রাহক এবং নতুন গ্রাহক উভয় ক্ষেত্রেই প্ের যাজ্য হবে।

৪.    ঋণ বিতরণের খাতঃ

শস্য ও ফসল খাত ব্যতীত কৃষির অন্যান্য চলতি মূলধন নির্ভরশীল খাতসমূহ (যথাঃ হর্টিকালচার অর্থাৎ মৌসুম ভিত্তিক ফুল ও ফল চাষ, মৎস্য চাষ, পোল্ট্রি, ডেইরি ও প্রানিসম্পদ খাত) ; তবে, কোনো একক খাতে ব্যাংকের অনুকূলে বরাদ্দকৃত ঋণের ৩০% এর অধিক ঋণ বিতরণ করতে পারবেনা। এছাড়াও, যে সকল উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠান কৃষক কর্তৃক উৎপাদিত কৃষিপন্য ক্রয়পূর্বক সরাসরি বিক্রয় করে থাকে তাদেরকেও এ স্কীমের আওতায় ঋণ বিতরণের জন্য বিবেচনাকরা যাবে। তবে, এক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক কোন উদ্যোক্তা প্রতিষ্ঠানকে এককভাবে ৫.০০ (পাঁচ) কোটি টাকার উর্দ্ধে ঋণ বিতরণ করতে পারবে না;

৫.    পুনঃঅর্থায়ন আবেদন পদ্ধতিঃ

সংশ্লিষ্ট ব্যাংক গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ বিতরণ করে বাংলাদেশ ব্যাংক হতে পুনঃঅর্থায়ন প্রাপ্তির লক্ষ্যে নিম্নোক্ত প্রয়োজনীয় তথ্য/কাগজপত্রসহ মাসিক ভিত্তিতে মহাব্যবস্থাপক, কৃষি ঋণ বিভাগ, বাংলাদেশ ব্যাংক এর নিকট পুনঃঅর্থায়ন দাবি করবেঃ

i)প্রকৃত বিতরণ সংক্রান্ত সনদপত্র,

ii)বিতরণকৃত ঋণের সমন্বিত বিবরণী(সংযুক্ত ছক মোতাবেক);

iii)ঋণ পরিশোধের প্রতিশ্রুতিপত্র (ডিপি নোট) ও লেটার অব কন্টিনিউটি;   – সংশ্লিষ্ট অন্যান্য তথ্য।

৬. পরিশোধ পদ্ধতিঃ

(ক) বিভিন্ন দফায় ব্যাংকের অনুকূলে ছাড়কৃত অর্থ মেয়াদ পূর্তির মধ্যেইসুদসহ গৃহীত আসলের সমুদয় অর্থ বাংলাদেশ ব্যাংককে পরিশোধ করতে হবে ;

(খ)   গ্রাহক পর্যায়ে বিতরণকৃত ঋণ আদায়ের সকল দায়-দায়িত্ব ঋণ বিতরণকারী ব্যাংকের ওপর ন্য¯ Í থাকবে। গ্রাহক পর্যায়ে ঋণ আদায়ের সাথে বাংলাদেশ ব্যাংকের পাওনাকে সম্পর্কিত করা যাবে না ;

(গ)   ঋণের বকেয়া নির্ধারিত তারিখের মধ্যে পরিশোধিত না হলে বাংলাদেশ ব্যাংকের সাথে রক্ষিত চলতি হিসাব বিকলন করে তা আদায়/সমন্বয় করা হবে ;

(ঘ)   এ স্কীমের আওতায় প্রদত্ত ঋণের অর্থ বা এর কোন অংশের সদ্ব্যবহার হয়নি মর্মে বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট প্রতীয়মান হলে বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক সে পরিমান অর্থের ওপর নির্ধারিত হারের অতিরিক্ত ২% হারে সুদসহএককালীন আদায় করা হবে।

৭. অন্যান্য শর্ত ঃ

(ক) বাংলাদেশ ব্যাংকের নিকট হতে তহবিলের প্রাপ্যতা সীমা বিবেচনা সাপেক্ষে সংশ্লিষ্ট ব্যাংক ঋণ বিতরণ করবে এবং ঋণ বিতরণের ক্ষেত্রে ব্যাংক প্রচলিত বিধি-বিধান অনুসরণ করবে ;

(খ)   উক্ত ঋণের জন্য প্রযোজ্য বাংলাদেশ ব্যাংক কর্তৃক জারীকৃত বর্তমানে অনুসৃত অন্যান্য নীতিমালা যেমন জামানত, আবেদনপত্র গ্রহন ও প্রক্রিয়াকরনের সময়কাল, ঋণ গ্রহীতার যোগ্যতা নিরূপন, ঋণ বিতরণ, ঋণের সদ্ব্যবহার, তদারকি ও আদায় প্রক্রিয়া যথারীতি অনুসৃত হবে ;

(গ)   উপরোক্ত পুনঃঅর্থায়নের ক্ষেত্রে সময়ে সময়ে বাংলাদেশ ব্যাংকের চাহিদার প্রেক্ষিতে ব্যাংক প্রয়োজনীয় তথ্য, কাগজপত্র এবং দলিলাদির কপি বাংলাদেশ ব্যাংককে সরবরাহ করবে।

(বাংলাদেশ  ব্যাংকের সার্কুলারটি হুবহু পেতে  এখানে ক্লিক করুন খানে ক্লিক করুন  )

খামারীদের সুবিধার্থে এবং প্রচারের জন্য বাংলাদেশ ব্যাঙ্গকের ওয়েব সাইট থেকে এই তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।তাই ক্ষন গ্রহন এবং এ সমস্ত বিষয়ে যেকোন সিদ্ধান্ত গ্রহনের ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট ব্যাংকের এবং প্রয়োজনীয় ক্ষেত্রে সংশ্লিষ্ট দপ্তরের সিদ্ধান্ত চূড়ান্ত বলে গন্য হবে।এই পোষ্টের কোন তহত্য রেফারেন্স হিসেবে ব্যবহার করা যাবে না।

দেশীয় পদ্ধতিতে খুব সহজে ঘি তৈরি করবেন কিভাবে?

0


দুধ থেকে বিভিন্ন পদ্ধতিতে ঘি তৈরি করা যায়।তবে খুব সহজে ঘরোয়া পদ্ধতিতে ঘি তৈরি পদ্ধতি নিয়ে আজকে আলোচনা করব।যারা ছোট খামারী অর্থাৎ যাদের খামারে দুধ উৎপাদন কম অথবা কোন দুর্যোগ জনিত কারনে আপনি যদি দুধ বিক্রি করতে  না পারেন তাহলে খুব সহজে এই পদ্ধতিতে দুধ থেকে ঘি তৈরি করতে পারবেন।কেউ যদি খাঁটি ঘি তৈরির উদ্দ্যেশ্যে দুধ কিনে ঘি তৈরি করতে চান তাহলেও এই পদ্ধতি ব্যবহার করতে পারেন।আসুন এবার আমরা ধাপে ধাপে ঘি তৈরি প্রক্রিয়াগুলো জেনে নিই।

প্রথম ধাপঃ (ভাল মানের দুধ সংগ্রহ)

ভাল মানের দুধ

ভাল ঘি তৈরির জন্য সবচেয়ে যেটি বেশি গুরুত্বপূর্ন তা হল ভাল মানের দুধ সংগ্রহ। দুধের গুনগত মানের উপর নির্ভর করব ঘি এর গুনগত মান।দুধের মধ্যে যে চর্বি বা ফ্যাট থাকে তার উপর নির্ভর করে ঘি এর পরিমান কতটূকু হবে।যদি ধরে নিই দুধে ৪% ফ্যাট আছে তাহলে মোটামুটি ভাবে ২৫-২৬ লিটার দুধ দিয়ে আপনি ১ কেজি খাঁটি ঘি পেতে পারেন।আর যেই গরুগুলো দানাদার খাদ্যের চেয়ে কাঁচা ঘাসের উপর বেশি নির্ভরশীল তাদের দুধ থেকে তৈরি ঘি এর গুনগত মান তুলনামুলকভাবে ভাল হয়।

দ্বিতীয় ধাপঃ (দুধ ফুটানো)

যে দুধ থেকে ঘি তৈরী করবেন তা একটি পরিষ্কার সিলভারের অথবা স্টীলের পাত্রে নিয়ে পর্যাপ্ত পরিমান ফুটাতে হবে।যাতে কোন ক্ষতিকর জীবানু থাকতে না পারে। দুধ ফুটতে ফুটতে সর পড়া শুরু করলে ফুটানো বন্ধ করতে হবে।

দুধ ভাল করে ফুটাতে হবে

তৃতীয় ধাপঃ ( দুধের গাঁজন বা ফার্মেন্টেশন)

সহজ কথায় বলতে গেলে এই ধাপে সিদ্ধ দুধ থেকে দই তৈরি করা হয়।ফুটানো দুধকে ঘরের তাপমাত্রায় শীতল করে ঐ দুধের সাথে দই অথবা পুরনো দইয়ের পানি যুক্ত করতে হবে। আপনি চাইলে লেবুর রসের পানি বা তেতুল গুলানো পানি দিয়েও এই কাজটি করতে পারেন।তবে দইয়ের ব্যবহার সর্বোত্তম।আপনাকে যে কাজটি করতে হবে তা হল, দুধের সাথে পরিমান মত দই মিশাতে হবে।সাধারনত প্রতি কেজি দুধের জন্য ১/২ টেবিল চামচ পরিমান দই দিলেই যতেষ্ঠ।

দুধের ফার্মেন্টেশন করে দইয়ে পরিনত করতে হবে

এই দই  উক্ত দুধের সাথে ভালভাবে মিশিয়ে অন্ধকার শীতল স্থানে ডেকে রাখতে হবে প্রায় ৮ ঘন্টা।ধরেন আপনি যদি সন্ধ্যা বেলা দই মিশ্রিত করে রেখে দেন তাহলে সকাল বেলা সবটুকু দুধ দইয়ে পরিনত হবে।অর্থাৎ দুধের গাঁজন বা ফার্মেন্টেশন সম্পন্ন হবে।তাপমাত্রা, সংরক্ষনের পরিবেশ, দইয়ের ধরন, দুধের ফ্যাটের পরিমান ইত্যাদি কিছু বিষয়ের কারনে ফার্মেন্টেশনের জন্য প্রয়োজনীয় সময় কম বেশি হতে পারে।

চতুর্থ ধাপঃ (মন্থন)

দই থেকে মাখন আলাদা করার জন্য দইকে ঘুঠনী দিয়ে ঘূটতে হবে।যারা নিয়মিত ঘি তৈরি করে তারা বিদ্যুৎ চালিত ঘুঠণী ব্যবহার করতে পারে।তবে যারা অনিয়মিত বা দূর্যোগকালীন অবস্থায় ঘি তৈরি করতে চান তারা বাজার থেকে সাধারন ঘূঠনী কিনেও ব্যবহার করতে পারেন।ঐতিহ্যগতভাবেও মাখন তৈরি জন্য বিশেষ ঘূঠনী ব্যবহৃত হয় যুগ যুগ ধরে।

কাঠের তৈরী ঘুঠনী
হাতে চালিত য়ান্ত্রীক ঘুঠনী

তবে ঘঠুণী যা দিয়েই তৈরি হক না কেন।ঘুঠার সময় নির্দিষ্ট একটি নিয়ম অনুসরন করতে হবে।তা হলে একবার ঘড়ির কাঁটা যে দিকে ঘুরে সেই দিকে(Clock wise) এবং পরের পার তার বিপরিত দিকে ঘুরাতে হবে (Anti clock wise) তাহলে ধীরে ধীরে মাখন(Butter) এবং ঘোল (Butter Milk) আলাদা হতে থাকবে।ইলেক্ট্রিক মেশিন দিয়ে করলে মাখনটাকে বিকেন্দ্রিকরন (Centrifugal) করা হয়।

পঞ্চম ধাপঃ (মাখন আলাদ করা)

পর্যাপ্ত পরিমান ঘুঠণীর পর মাখন এবং ঘোলের মিশ্রন থেকে মাখনকে আলাদা করতে হবে ।এর ফলে মাখনে তরলের পরিমান কমে যায়।ঘুঠনী যত ভাল হবে তত বেশি মাখন আলাদা কবে।মাখন আলাদ করার পূর্বে একটু ঠান্ডা পানি মিশ্রিত করা যেতে পারে।ফলে মাখন কিছুটা শক্ত হয়ে যাবে এবং আলাদা করা সহজ হবে।যদি কোয়েক বার করে মাখন তৈরি করতে হয় তাহলে প্রত্যেক বার তৈরি করা মাখন শীতল স্থানে সংরক্ষন করতে হবে।

মাখ পৃথক করত্র হবে

ষষ্ট ধাপঃ (মাখন জ্বাল দেওয়া)

মাখনের মধ্যেও জলীয় অংশ থাকে কিন্তু ভাল ঘি তৈরি করতে হলে তাকে জলীয় অংশ মুক্ত করতে হবে।তাই মাখন তৈরি পরবর্তী পর্যায়ে মাখন জ্বাল দিয়ে শূকিয়ে ফেলতে হবে।এজন্য একটি ষ্টীলের পাত্রে মাখন নিয়ে সেটাকে হালকা মাঝারী আঁচের আগুনে জাল দিতে হবে।জ্বাল দেওয়ার এক পর্যায়ে গিয়ে মাখন ফুটতে থাকবে এবং ফুট ফাট শব্দ শূরু করবে।তবে সেই শব্দও এক সময় কমে আসবে।

মাখন ভাল ভাবে জ্বাল দিতে হবে

সপ্তম ধাপঃ (ঘি সংগ্রহ)

সিদ্ধ হতে হতে এক সময় দেখবেন মাখন একদম পরিষ্কার হয়ে গেছে এবং পাত্রের তলায় কিছু পদার্থে তলানী পড়েছে ।তখনই বুঝতে হবে ঘি তৈরির প্রায় চুড়ান্ত পর্যায়ে চলে এসেছে।এসসয় আপনি খাঁটি ঘি এর সেই চির পরিচিত সুন্দর ঘ্রানটি পাবেন।আর দেরি না করে চুলা থেকে  পাত্র নামিয়ে ছাঁকনী দিয়ে ছেকেঁ ঘি আলাদা করে প্রয়োজনীয় পাত্রে সংরক্ষন করতে পারেন। মনে রাখতে হবে ঘি সব সময় শুকনো পাত্রে সংরক্ষন করতে হবে এবং আলো থেকে দূরে শুষ্ক স্থানে সংরক্ষন করতে হবে।

ঘি তোরীর চূড়ান্ত পর্যায়

এখবে ঘি তৈরি করে আপনি কয়েক মাস পর্যন্ত ঘি সংরক্ষন করতে পারেন এবং প্রয়োজন মত সময়ে ঘি বিক্রি অথবা ব্যবহার করতে পারেন।

পশুর কোরারেন্টাইন এবং আইসোলেশন কি এবং কেন?

0


খোলা বাজার থেকে গরু সংগ্রহ করার পর সেগুলো সপ্তাহ দুইয়েক অন্য গরু থেকে আলাদা রাখা বড্ড প্রয়োজন।

কারন গরু গুলো যদি কোন রোগের জীবানু বহন করে অথবা কোন ধরনের সমস্যা থাকে তাহলে তার লক্ষন এই সময়ের মধ্যে দেখা যায়।

সেই ক্ষেত্রে প্রয়োজনীয় চিকিৎসা দিয়ে সুস্থ করে মূল খামারে অন্যান্য পশুর সাথে রাখা যায়।

সংক্ষেপে এটিই হল কোয়ারেন্টাইন

প্রশ্ন হল কোয়ারেন্টাইন না করলে কি সমস্যা?

অনেক রোগ আছে যা ছোঁয়াছে।স্পর্শ বা বিভিন্ন মাধ্যমে অসুস্থ পশু থেকে সুস্থ পশুতে যেতে পারে।

কোন রোগের জীবানু শরীরে প্রবেশের সাথে সাথে ঐ পশু অসুস্থ হয় না।একটি নির্দিষ্ট সময় পরে রোগের লক্ষন দেখা দেয়।এই নির্দিষ্ট সময়টিকে ঐ রোগের সুপ্তাবস্থা(Incubation period) বলে।

নতুন পশুকে অন্যান্য সুস্থ পশুর সাথে রাখার পূর্বে আলাদা ভাবে রেখে এই সময়টুকু নজরদারি করতে হয়।যদি এই সময়ে সে অসুস্থ না হয় তাহলে সকলের সাথে মিশতে পারবে আর যদি লক্ষন দেখা দেয় তা হলে সকল পশু থেকে আলাদা করে প্রয়োজনীয় চিকিৎসার ব্যবস্থা করতে হবে।এই বিষয়টিকে বলে সঙ্গ নিরোধ (islolation)।যেটি নতুন পুরাতন সকল পশুর জন্য প্রযোজ্য।

তাই সামনের কোরবানীকে সমানে রেখে যারা পশু ক্রয় করছেন তারা অবশ্যই কোরেন্টাইন এবং আইসোলেশন করুন।

আপনার খামার নিরাপদ হবে এবং অর্থনৈতিক ভাবে আপনি হবেন লাভবান।

স্মার্ট লাইভষ্টক ভিলেজের ডাটাবেইজ সংরক্ষন করুন এক্সেল সীটে

0


মৎস্য ও প্রাণিসম্পদ মন্ত্রনালয়াধীন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের মাঠ পর্যায়ে বিভিন্ন দপ্তরে স্মার্ট লাইভস্টক ভিলেজ এর কার্যক্রম চলছে।এর একটি অংশ হিসেবে খামারীদের একটি বেইস লাইন সার্ভে করে তথ্য সংগ্রহ করা হয়েছে।এই তথ্য এনালাইসিসের সুবিধার জন্য ডাটাগুলো এক্সেল সিটে রাখা প্রয়োজন।সেই জন্য প্রদত্ত ফর্মেট অনুযায়ী একটি এক্সেল সিট সবার সুবিধার জন্য তৈরি করলাম।

এই সিট আরো উন্নত করার জন্য, কোন ভুল পরিলক্ষিত হলে অথবা অন্য পরামর্শ থাকলে ই-মেইলে(farmerhope@gmail.com) অথবা কমেণ্টসে জানানোর জন্য অনুরোধ করা হল।

প্রসংগত উল্লেখ্য এই সিট সম্পূর্ন নিজ দায়িত্ব ব্যবহার করতে হবে এবং সার্ভের ক্ষেত্রে প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের সিদ্ধান্তই চুড়ান্ত ।

এক্সেল সীটটি ডাউনলোড করতে নীচের লিংকে ক্লিক করুন।
Smart Village Data Base in excel sheet prepared by Farmer Hope

বানিজ্যিক ভাবে লাভজনক খরগোশের খামার করবেন কিভাবে?

0


বৈজ্ঞানিক পদ্ধতিতে খরগোশ পালন অত্যন্ত লাভজনক। পৃথিবীর বিভিন্ন দেশ,যেমনঃ আমেরিকা, নিউজিল্যান্ড, ব্রিটেন, নেদারল্যান্ড এবং চীন জাপানসহ অনেক দেশে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ প্রতিপালন করা হয। তবে বাংলাদেশ ইহার পালন এবং মাংস জনপ্রিয়তা অর্জন করে।বাংলাদেশের বিভিন্ন প্রজাতির খরগোশ দেখা যায় তার মধ্যে সাদা কালো এবং খয়েরি রঙের খরগোশ বেশি।

খরগোশের কিছু শারীরিক বৈশিষ্ট্য

১।তাপমাত্রাঃখরোশের তাপমাত্রা গড়ে ৩৯.৫ ডিগ্রি সেলসিয়াস। যা ৩৮-৪০ ডিগ্রি সেলসিয়াস      হতে পারে।
২।নাড়ির স্পন্দনঃ ১৫০-৩০০বিট/প্রতি মিনিট। খুব ছোট খরগোশের হৃদয়ের স্পন্দন বেশি হয় ৩।শ্বাস-প্রশ্বাসের হারঃ ৩০ থেকে ১০০/প্রতি মিনিট। প্রাপ্তবয়স্ক ঘরে 5 থেকে 50/প্রতি মিনিট ৪।দুগ্ধদান কালঃ প্রতিটি খরগোশ গড়ে ৪২ দিন তাদের বাচ্চাকে দুগ্ধ দান করে।
৫।বাচ্চা প্রদানের হারঃ প্রতিটি মাদী খরগোস এক বছরে ২ থেকে ১০ টি বাচ্চা জন্ম দিতে পারে। সাধারণত প্রদর্শনীতে থাকা খরগোশের বাচ্চা কম হয় তবে অভ্যন্তরীণ ফার্মে ব্যবহৃত খরগোশের বাচ্চা সংখ্যা বেশি হয়।
৬।জীবনকালঃ খরগোশ ঘরে ৬ থেকে ১১ বছর বেঁচে থাকে। পূর্ণতা প্রাপ্তির বয়স ১৬ থেকে ২৬ সপ্তাহ তবে ছোট জাতের খরগোশের পূর্ণতা প্রাপ্তি আগে ঘটে।
৭।গর্ভধারণ কালঃ গর্ব কাল ৩০ থেকে ৩২ দিন। তবে এটি কোন কোন ক্ষেত্রে ৩০ থেকে ৩৪ দিন হতে পারে। প্রাপ্ত বয়স্ক খরগোশের ওজন ১ থেকে ১.৫ কেজি। তবে খুব কম ক্ষেত্রে ১২ কেজি পর্যন্ত হয়।
৮।সেক্স রেশিওঃ 100 পুরুষ অনুপাত 102 স্ত্রী খরগোশ।

বাংলাদেশে প্রাপ্ত বিভিন্ন জাতের খরগোশঃ

 

ডার্ক গ্রে নেটিভ

বাংলাদেশ এর উৎপত্তিস্থল বাংলাদেশ ঢাকা এবং যশোর অঞ্চলে এ জাতের খরগোশ দেখা যায় এদের গায়ের রং গাঢ় ধূসর এবং প্রতিটি প্রাপ্তবয়স্ক খরগোশ ২ থেকে ৩ কেজি পর্যন্ত হতে পারে এরা খুব চালাক চতুর এবং তৃণভোজী।

ফক্স

এই জাতের খরগোশ এর উৎপত্তিস্থল আমেরিকা তবে বাংলাদেশের ঢাকা এবং যশোরের পাওয়া যায় এদের গায়ের রং কালো এবং আমরা বর্ণ একটি প্রাপ্ত বয়স্ক খরগোশের দৈহিক ওজন ২.৫ – ৩.১৭ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এরা দেখতে ছোট হলেও দেহ মাংসল।

ডাচ

এদের আদি নিবাস স্থান নেদারল্যান্ড তবে বাংলাদেশের ঢাকায় এদের দেখা যায় সাদা দাগ যুক্ত ধূসর রঙের এ খরগোশের প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ওজন ১.৮০ – ২.২৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে এদের মাংস উন্নত মানের এবং এদেরকে প্রাণী হিসেবে ব্যবহার করা হয়।

নিউজিল্যান্ড লাল

এদের উৎপত্তিস্থল নিউজিল্যান্ড তবে ঢাকা বংশাল এলাকায় দেখা যায় লালচে সাদা রঙের এই খরগোশের ওজন ৩.৬০ -৪.৫০ কেজি হতে পারে। এদের মাংস খুবই সুস্বাদু এবং দ্রুত বৃদ্ধি পায় এরা ভালো তৃণভোজী।

নিউজিল্যান্ড সাদা

আদি নিবাস নিউজিল্যান্ড বাংলাদেশের ঢাকা যশোর খুলনা এবং বাগেরহাটে এদের পাওয়া যায় সাদা রঙের এই খরগোশের ওজন প্রাপ্তবয়স্ক অবস্থায় ৪.০৫ – ৫.৪৪ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল, তৃণভোজী এই খরগোশের মাংস খুবই সুস্বাদু।

নিউজিল্যান্ড কালঃ

আদি নিবাস নিউজিল্যান্ড, তবে ঢাকা যশোর খুলনা অঞ্চলের এদের দেখা যায় সাদা রঙের খরগোশ দ্রুত বর্ধনশীল তৃণভোজী এবং এদের মাংস খুবই সুস্বাদু এদের ৪.০৫ – ৫.৪৪কেজি পর্যন্ত হতে পারে।

বেলজিয়াম

জন্মস্থান বেলজিয়াম, ঢাকা এবং পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেখা যায়। সাদা রঙের এই খরগোশের ওজন ৩.৫২ – ৪.৭০ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। দ্রুত বর্ধনশীল জাতের এই খরগোশ তৃণভোজী এবং এদের মাংস খুবই সুস্বাদু।

সিন ছিলা

এর জন্মস্থান ফ্রান্স, তবে ঢাকা এবং যশোরের পার্শ্ববর্তী এলাকায় দেখা যায়। এদের ওজন ২.৫০ – ২.৯৫ কেজি পর্যন্ত হতে পারে। এর মাংস অত্যন্ত ভালো মানের এবং এরা তৃনভোজী।

 

বাসস্থানঃ

স্বাভাবিকভাবে জাত অনুযায়ী মেজের আঁকার বিভিন্ন ধরনের হতে পারে। সাধারণত প্রতি আটটি খরগোশের জন্য 5 ফুট X ২ ফুট একটি খাঁচা প্রয়োজন এবং প্রজননের সময় খরগোশের জন্য আলাদা ঘর ব্যবহার করা হয়। এক্ষেত্রে প্রতি দেড় কেজি দৈহিক ওজনের জন্য এক বর্গ ফুট জায়গা প্রয়োজন হয়। বাংলাদেশের গ্রাম অঞ্চলে সাধারণত খরগোশ পালন করা হয়। সে ক্ষেত্রে বাচ্চা দেয়ার সময় এরা নিজেরাই নিজেদের গায়ের লোম ছিঁড়ে বাসা তৈরি করে।যদি খাচায় পালন করা হয় তবে বাচ্চা দেয়ার সময় আলাদাভাবে মেটারনিটি বক্স বা নেট ব্যবহার করা প্রয়োজন।

খরগোশের ঘরের বা খাঁচার পরিমাপঃ

প্রতিটি খরগোশের ঘরের দৈর্ঘ্য ৭৫ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৪৫ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ৩৫ সেন্টিমিটার হওয়া প্রয়োজন।

মেটারনিটি বক্সের পরিমাপঃ

মেটারনিটি বক্স এর দৈর্ঘ্য ৪০ সেন্টিমিটার, প্রস্থ ৩০ সেন্টিমিটার এবং উচ্চতা ২৫ সেন্টিমিটার। আর এই ঘরে জন্য যে দরজা রাখা হবে সেটি ১৫ সেন্টিমিটার।

খরগোশের খাদ্য:

বয়স এবং জাতভেদে বিভিন্ন খরগোশের খাদ্য গ্রহণ ও পুষ্টির প্রয়োজনীয়তা ভিন্ন হয়।একটি বয়স্ক খরগোশ দৈনিক ১৩০ থেকে ১৪৫ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করে। অন্যদিকে একটি দুধাল খরগোশ দৈনিক ২৫০ থেকে ৩০০ গ্রাম খাদ্য গ্রহণ করে। আর যদি খরগোশটা বাড়ন্ত হয় তাহলে প্রতিদিন ৯০ গ্রাম করে খাদ্য গ্রহণ করে।

খরগোশ কি কি খায়?

খরগোশ সাধারণত সবুজ শাকসবজি,ঋতু ভিত্তিক সবজি, পালং শাক, গাজর, মুলা, শাকের উচ্ছিষ্টাংশ, সবুজ ঘাস ইত্যাদি খায় আর দানাদার খাদ্যের মধ্যে চাল, গম, ভুট্টা ইত্যাদি খায়। তবে বাণিজ্যিকভাবে খরগোশ পালনের জন্য মুরগির মত তৈরিকৃত খাদ্য খরগোশের রেশন হিসেবে ব্যবহার করা যেতে পারে।

খরগোশের প্রজনন

সাধারণত ৫ থেকে ৬ মাস বয়সে খরগোশ প্রথম প্রজনন কম হয়।তবে ঋতু এবং পর্যাপ্ত ওজন প্রাপ্তির উপর অনেকাংশে নির্ভরশীল।গর্ভবতী খরগোশ ২৮  থেকে ৩৪ দিনের মধ্যে বাচ্চা দেয়।খরগোশ বাচ্চা জন্মের পর সাধারণত ৬ থেকে ৮ সপ্তাহ পর্যন্ত বাচ্চাকে দুধ খাওয়ায়। এই সময় বাচ্চার ওজন ৮০০ থেকে ১২০০ গ্রাম পর্যন্ত হতে পারে। একটি খরগোশ প্রতিবার দুই থেকে আটটি বাচ্চা দিতে পারে এবং একবার বাচ্চা দেওয়ার তিন মাস পরেই আবার বাচ্চা দিতে পারে।

 

খরগোশের রোগবালাইঃ

খরগোশ একটা ছোট প্রাণী।খরগোশ খুব সুন্দর এবং নরম প্রকৃতির প্রাণি। এটি খুব সহজে পোষ মানে। খরগোশের রোগ তুলনামূলকভাবে কম। খরগোশ পরিচ্ছন্ন জায়গায় থাকতে বেশি পছন্দ করে। ইহার ঘর সর্বদাই পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রাখা প্রয়োজন। ঘরে প্রয়োজনীয় আলো বাতাসের ব্যবস্থা থাকতে হবে। ঘরে অতিরিক্ত তাপমাত্রা ধুলাবালি পোকামাকড় প্রতিরোধ করতে হবে।কয়েকটি রোগ খরগোশের সাধারণত দেখা দেয়। নিম্নে অসুস্থ খরগোশের কয়েকটি লক্ষণ দেয়া হলো:

চোখ ও গান খাড়া থাকে শুষ্ক ও রুক্ষ দেখায় খাদ্য ও পানি খেতে অনীহা প্রকাশ করে দৌড়াদৌড়ি করে শরীরের তাপমাত্রা বৃদ্ধি পায়।ঘরে ২৯ ডিগ্রী সেলসিয়াস এর বেশি তাপমাত্রা থাকলে পুরুষ খরগোশের সাধারণত অনুর্বরতা দেখা যায়। তাছাড়া কক্সিডিওসিস গলাফুলা প্রভৃতি কয়েকটি রোগ সাধারণত দেখা যায়।

খরগোশ পালনের ঝুঁকিপূর্ণ দিক সমুহ

এখনো পর্যন্ত খরগোশ বাজারজাতকরণে তেমন কোনো ভালো ব্যবস্থা গড়ে ওঠেনি। তাছাড়া খরগোশের মাংস সবাই খেতে চায় না। খরগোশ অসুস্থ হলে বাঁচানো কঠিন হয়ে ওঠে। তাছাড়া খরগোশের প্রস্রাবে ভীষণ গন্ধ থাকে। যা অনেকের বিরক্তির কারণ হয়। খরগোশের বাচ্চা জন্মের পর প্রথম দশ দিন অধিক সর্তকতা অবলম্বন করতে হয় তা না হলে বাচ্চা টিকে থাকার সম্ভাবনা কমে যায়।

 

error: Content is protected !!