জার্মান একটি লতা জাতীয় স্থায়ী ঘাস।ইহা উঁচু,নিচু,ঢালু,জলাবদ্ধ,স্যাঁতস্যাতে এবং অন্য কোন ফসল বা শস্য হয় না ঐ সমস্ত জমিতে চাষ করা যায়।এ ঘাস গোবর সার ও গো-শালা বিধৌত পানিতে খুব ভাল জন্মে এবং কোন সারের দরকার হয় না।একবার লাগালে ৪-৫ বছর ঘাস পাওয়া যায়।
জমি নির্বাচনঃ
জার্মান ঘাস পারা ঘসের মত নিচু ও জলাবদ্ধ জমিতে চাষ করা যায়।জার্মান ঘাস দাঁড়ানো পানিতেও জন্মানো যায়।যে সমস্ত জমিতে সারা বছর পানি থাকে অথবা কিছুকাল পানিতে ডুবে থাকে,সেসব জমিতে এ ঘাস চাষ করা যায়।
রোপনের সময়ঃ
সাধারনত মার্চ হতে সেপ্টেম্বর মাস পর্যন্ত এ ঘাস চাষের উপযুক্ত সময়।
বংশ বিস্তারঃ
এ ঘাসে হতে সক্ষম ভাল বীজ উৎপাদন হয় না।কাজেই কাটিং বা মোথা দ্বারা বংশ বিস্তার করতে হয়।
চারা তৈরীঃ
গাছ পরিপক্ক হলে কান্ডের গিট হতে শীকড় বের হয়।এরকম পরিপক্ক গাছের কমপক্ষে ৩ টি গীট নিয়ে কাটিং করতে হয়।
চাষ পদ্ধতিঃ
প্রচলিত পদ্ধতি উত্তম রুপে জমি চাষ দিতে হবে।তবে বন্যা পরবর্তীতে কাদামাটিতে চাষ না দিয়েই রোপন করা যায়।প্রতি হেক্টরে ২৮ -৩০ হাজার কাটিং প্রয়োজন।প্রতিটি লাইনের দূরত্ব ৫০ সেঃমিঃ রাখতে হয় এবং প্রতিটি কাটিং এর মধ্যবর্তী দূরত্ব ২৫ সেঃমিঃ হলেই চলে।
রোপন পদ্ধতিঃ
সমতল শুকনা জমিতে লাগালে প্রথমে কয়েকটা চাষ দিয়ে জমি আগাছা মুক্ত করে নিতে হবে।এরপর নির্দিষ্ট দূরত্বে কদাল দিয়ে গর্ত করে চারা বা কাটিং রোপন করতে হবে।কাটিংগুলো কাত করে অর্থাৎ ৪৫ – ৬০ ˙ কোণে এমনভাবে লাগাতে হবে যেন কাটিং এর গিট মাটির নিচে একটি গিট মাটির সামনে এবং অপর গিট মাটির উপরে থাকে।
সার প্রয়োগঃ
গোবর সার ও গো-শালা বিধৌত পানিতে চাষ করলে কোন পানির প্রয়োজন হয় না।সাধারন নীচু জমি প্রস্তুতকালীন হেক্টর প্রতি ইউরিয়া ৫০ কেজি,টিএসপি ৭০ কেজি ও এমপি ৩০ কেজি করে দিতে হবে।ঘাস লাগানোর ১ মাস পর হেক্টর প্রতি ৫০ কেজি ইউরিয়া প্রয়োগ করতে হবে।প্রতি কাটিং এর পর হেক্টর প্রতি ৫০ কেজি ইউরিয়া সার প্রয়োগ করতে হবে।
সেচঃ
খরা মৌসুমে পরতি ১৫ – ২০ দিন পর পর সেচ দিতে হবে।
ঘাস কাটার সময়ঃ
গ্রীষ্মকালে ৩০-৩৫ দিন পর পর এবং শীতকালে ৩৫-৪৫ দিন পর ঘাস কাটা যায়।তবে এটা সেচ প্রয়োগের উপর নির্ভর করে।সেই হিসেবে ১ম বছর ৬- ৭ বার এবং পরবর্তী বছরগুলোতে ৮ -১০ বার পর্যন্ত প্রতি বছর কাটিং সংগ্রহ করা যায়।
ঘাস উৎপাদনঃ
উর্বর জমিতে ও ভাল ব্যবস্থাপ্পনায় প্রতি হেক্টরে উৎপাদন প্রায় ১৩০ – ১৫০ টন।
ঘাসের পুষ্টিমানঃ
প্রতি কেজি ঘাসে শুষ্ক পদার্থ ২৫০ গ্রাম,জৈব পদার্থ ২৪০ গ্রাম,প্রোটিন ১৮ গ্রাম ও বিপাকীয় শক্তি ২৫ মেগাজুল।