পশু-পাখি টিকা
গবাদি পশূর রোগ প্রতিরোধে টিকা কোন বিকল্প নেই।তাই পশু-পাখিকে নিয়মিত টিকা প্রয়োগ করতে হবে।নিচে কিছু গরুত্ব পূর্ন টিকা নিয়ে আলাপ কর হলে।(যেখানে লেখার নিচে দাগ দেওয়া আছে সেখানে ক্লিক করলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।সেসমস্ত কারনে টিকা কাজ করে না তা জানতে এখানে ক্লিক করুন।)
ডেইরী খামারঃ
১। ক্ষুরা রোগের টিকা
এই টিকা ৪ মাসের উপরের বয়সের যেকোন পশূকে প্রয়োগ করা যায়।ট্রাইভেলেন্ট টিকাটি গরুকে ৬ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।প্রথম প্রয়োগের ২১ দিন পর বুষ্টার ডোজ দিতে হবে ।এরপর ৪ মাস পর পর এই টিকা প্রয়োগ করতে হবে। (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
২।এন্থ্রাক্স/তড়কা টিকাঃ
এই টিকা গরুকে প্রয়োগ করতে হয় ১ মিলি করে চামড়া নীচে।আর এই টিকা প্রয়োগ করলে এক বছর পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে তাই প্রতি বছরে ১ বার এই টিকা প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৩।বাদলা টিকাঃ
এই টিকা প্রতি গরুকে ৫ মিলি করে গলা বা ঘাড়ের ঢিলা চামড়ার নিচে দিতে হয়।একবার দিলে মোটামুটি ৬ মা পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে।তবে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি ৪ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ দেওয়া যায় তাহলে পরবর্তীতে ১ বছর অন্তর অন্তর এই টিকা প্রয়োগ করলে হবে।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৪।গলাফুলা টিকাঃ
সাধারনত প্রাপ্ত বয়স্ক (২ বছরের উপর) গরুকে এই টিকা প্রয়োগ করা যায়।এই টিকা দুই ধরনের।একটি হল অয়েল এডজুভেন্ট যা গরুকে ২ মিলি চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হয়।আর অন্যটি হল এলাম অধঃপতিত যা প্রতি গরুকে ৫ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৫।ম্যাস্টাইটিস টিকাঃ
সরকারীভাবে এই টিকা পাওয়া যায় না।তবে বেসরকারীভাবে এই টিকা পাওয়া যায়।সংশ্লিষ্ট কোম্পানীর নির্দেশনা মোতাবেক এই টিকা ব্যবহার করা যেতে পারে।
৬।জলাতংক টীকাঃ
জলাতংক হল একটি জীবনঘাতী রোগ যা জলাতংক রোগে আক্রান্ত কুকুরের এবং আরো কিছু প্রাণির কামড়ে হতে পারে।সরকারীভাবে যে টিকা পাওয়া যায় তা কুকুর কামড় দেওয়ার আগে প্রয়োগ করতে হয়।তবে বেসরকারীভাবে কিছু টিকা পাওয়া যায় যা কুকুর কামড়ানোর পরে ব্যবহারের জন্য বলা হয়।সরকারীভাবে যেটা টিকাটি কুকুর কামড়ানোর পূর্বে প্রয়োগ করা হয় তার ডোজ হল ৩ মিলি মাংসে।৩০ দিন পর বুষ্টার ডোজ দিয়ে এরপর প্রতিবছরে একবার করে প্রয়োগ করতে হয়।
মোটাতাজাকরনঃ
গরুর মোটা তাজাকরনের জন্যও ক্ষুরা রোগের টিকা,তড়কা টিকা,বাদলা টিকা,গলাফুলা টিকা প্রয়োগ করা হয়।যা প্রয়োগ নিয়ম ডেইরী খামারে টিকা প্রয়োগের মতই।
১। ক্ষুরা রোগের টিকা
এই টিকা ৪ মাসের উপরের বয়সের যেকোন পশূকে প্রয়োগ করা যায়।ট্রাইভেলেন্ট টিকাটি গরুকে ৬ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।প্রথম প্রয়োগের ২১ দিন পর বুষ্টার ডোজ দিতে হবে ।এরপর ৪ মাস পর পর এই টিকা প্রয়োগ করতে হবে। (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
২।এন্থ্রাক্স/তড়কা টিকাঃ
এই টিকা গরুকে প্রয়োগ করতে হয় ১ মিলি করে চামড়া নীচে।আর এই টিকা প্রয়োগ করলে এক বছর পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে তাই প্রতি বছরে ১ বার এই টিকা প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৩।বাদলা টিকাঃ
এই টিকা প্রতি গরুকে ৫ মিলি করে গলা বা ঘাড়ের ঢিলা চামড়ার নিচে দিতে হয়।একবার দিলে মোটামুটি ৬ মা পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে।তবে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি ৪ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ দেওয়া যায় তাহলে পরবর্তীতে ১ বছর অন্তর অন্তর এই টিকা প্রয়োগ করলে হবে।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৪।গলাফুলা টিকাঃ
সাধারনত প্রাপ্ত বয়স্ক (২ বছরের উপর) গরুকে এই টিকা প্রয়োগ করা যায়।এই টিকা দুই ধরনের।একটি হল অয়েল এডজুভেন্ট যা গরুকে ২ মিলি চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হয়।আর অন্যটি হল এলাম অধঃপতিত যা প্রতি গরুকে ৫ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ছাগলের টিকাঃ
ছাগলের মুলত দুইটি রোগের টিকা খুব গুরুত্বপুর্ন।তাহল পিপিআর এবং বসন্তের টিকা।তাছাড়া গরুর কিছু টিকাও ছাগলে ব্যবহার করা হয়।
১। পিপিআর টিকাঃ
ছাগলের একটি জীবন ঘাতী রোগ হল পিপিআর।এই রোগ এতই মারাত্মক যে ৪-৫ দিনের মধ্যে ছাগল মারা যাতে পারে।(এই লিংকে ক্লিক করলে পিপিআর রোগ সম্পর্কে বিস্তারিত জানতে পারবেন)।সাধারত ৪ মাসের অধিক বয়সী ছাগলকে এই টিকা প্রদান করা হয়।নিয়মটি হল প্রতি ছাগলের জন্য ১ মিলি চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হবে।একবার প্রয়োগ করলে মোটামুটি সপ্তাহ দুয়েক লাগে এ টিকার কাজ করতে।আর এই টিকা কার্যকর থাকে ১ বছর পর্যন্ত। (এই লিংকে ক্লিক করলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।)
পিপিআর রোগ কি,লক্ষন,চিকিৎসা,প্রতিরোধ
২। ছাগলের বসন্ত টিকাঃ
এই টিকা প্রয়োগের নিয়ম হল প্রতি পশূকে ১ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হবে।প্রতি বছর এক বার করে দিলেই মোটামুটি এক বছর পর্যন্ত এই টিকা কার্যকর থাকে।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৩। ক্ষুরা রোগের টিকাঃ
এই টিকা ৪ মাসের উপরের বয়সের যেকোন পশূকে প্রয়োগ করা যায়।ট্রাইভেলেন্ট টিকাটি ছাগলকে ২ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।প্রথম প্রয়োগের ২১ দিন পর বুষ্টার ডোজ দিতে হবে ।এরপর ৪ মাস পর পর এই টিকা প্রয়োগ করতে হবে। (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৪। বাদলা টীকাঃ
এই টিকা প্রতি ছাগলকে ২ মিলি করে গলা বা ঘাড়ের ঢিলা চামড়ার নিচে দিতে হয়।একবার দিলে মোটামুটি ৬ মা পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে।তবে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি ৪ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ দেওয়া যায় তাহলে পরবর্তীতে ১ বছর অন্তর অন্তর এই টিকা প্রয়োগ করলে হবে।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৫।গলাফুলা টিকাঃ
এলাম অধঃপতিত টিকা যা প্রতি ছাগলকে ২ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
ভেড়ার টিকাঃ
ছাগলের প্রায় সব টিকাই ভেড়াতে দেওয়া হয়।
১। পিপিআর টিকাঃ
সাধারত ৪ মাসের অধিক বয়সী ভেড়াকে এই টিকা প্রদান করা হয়।নিয়মটি হল প্রতি ভেড়ার জন্য ১ মিলি চামড়ার নিচে প্রয়োগ করতে হবে।একবার প্রয়োগ করলে মোটামুটি সপ্তাহ দুয়েক লাগে এ টিকার কাজ করতে।আর এই টিকা কার্যকর থাকে ১ বছর পর্যন্ত। (এই লিংকে ক্লিক করলে বিস্তারিত জানতে পারবেন।)
২। ক্ষুরা রোগের টিকাঃ
এই টিকা ৪ মাসের উপরের বয়সের যেকোন পশূকে প্রয়োগ করা যায়।ট্রাইভেলেন্ট টিকাটি ভেড়াকে ২ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।প্রথম প্রয়োগের ২১ দিন পর বুষ্টার ডোজ দিতে হবে ।এরপর ৪ মাস পর পর এই টিকা প্রয়োগ করতে হবে। (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৪। বাদলা টীকাঃ
এই টিকা সাধারনত ৩ মাস বয়সের উপরের ভেড়াকে প্রয়োগ করা হয়। প্রতি ভেড়াকে ২ মিলি করে গলা বা ঘাড়ের ঢিলা চামড়ার নিচে দিতে হয়।একবার দিলে মোটামুটি ৬ মাস পর্যন্ত প্রতিরোধ ব্যবস্থা কার্যকর থাকে।তবে প্রথম ডোজ দেওয়ার পর যদি ৪ সপ্তাহ পর ২য় ডোজ দেওয়া যায় তাহলে পরবর্তীতে ১ বছর অন্তর অন্তর এই টিকা প্রয়োগ করলে হবে।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৫।গলাফুলা টিকাঃ
এলাম অধঃপতিত টিকা যা প্রাপ্ত বয়স্ক প্রতি ভেড়াকে ২ মিলি চামড়ার নীচে প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
হাঁসের টিকাঃ
হাঁসের জন্য গুরুত্বপূর্ব টিকা মুলত দুইটি।
১।ডাক প্লেগ টিকাঃ
হাঁসের বয়স ৩ সপ্তাহ হলে এই টিকা দেওয়া যায়।সাধারনত প্রতিটি হাঁসে ১ মিলি করে বুকের মাংসে এই টিকা প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
২।কলেরা টিকাঃ
সাধারনত ২ মাস বা তদুর্ধ বয়সী হাঁসকে এই টিকা দিতে হয়।প্রতি হাসঁকে ১ মিলি করে দিতে হবে।অয়েল এডজুডেন্ট টিকা দিতে হবে চামড়ার নীচে এবং এলাম অধঃপতিত টিকা হলে মাংসে দিতে হবে।(বিস্তারিত)
মুরগীর টিকাঃ
১।বাচ্চা মুরগীর রানীক্ষেত টিকাঃ
সাধারনত ৪ হতে ৭ দিন বয়সের মুরগীকে এই টিকা প্রদান করা হয়।এই ক্ষেত্রে প্রতিটি সুস্থ মুরগীর বাচ্চার চোখে ১ ফোটা করে উভয় চোখে দিতে হবে।(বিস্তারিত জানতে এই লিংকে ক্ললিক করুন)
২।বড় মুরগীর রানীক্ষেত টিকাঃ
২ মাস বা ততোধিক বয়সের মোরগ-মুরগীকে এই টিকা প্রদান করা হয়।প্রতিটি সুস্থ মুরগীকে ১ মিলি টিকা মাংসে প্রয়োগ করতে হবে।
৩। ফাউল পক্সঃ
পক্সের টিকা প্রয়োগের জন্য বিশেষ ধরনের সুঁচ (Biforked pricking needle ) বা বিকল্প হিসেবে ইনজেকশনের সূঁচের অর্ধেক ডুকিয়ে ২১ দিনের বা তদুর্ধ বয়সী মোরগ-মুরগীর পাখার ত্রিকোনাকৃতি মাংস বিহীন চামড়ায় একাধিকবার খুঁচিয়ে প্রয়োগ করতে হয়।এই টিকা জীবনে একবার প্রদান করলেই হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৪। ফাউল কলেরা টিকাঃ
সাধারনত ২ মাস বা তদুর্ধ বয়সী মোরগ-মুরগীকে এই টিকা দিতে হয়।প্রতি হাসঁকে ১ মিলি করে দিতে হবে।অয়েল এডজুডেন্ট টিকা দিতে হবে চামড়ার নীচে এবং এলাম অধঃপতিত টিকা হলে মাংসে দিতে হবে। (বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৫। ফাউল টাইফয়েড টিকাঃ
৬ সপ্তাহের উর্ধ্ব বয়সী মোরগ-মুরগীতে এই টিকা দিতে হয়।১ম ডোজের ৩০ দিন পর ২য় ডোজ এবং ৬ মাস পর বুষ্টার ডোজ দিতে হয়।এই টিকা প্রয়োগের নিয়ম হল ০.৫ মিলি করে চামড়ার নীচের ইঞ্জেকশন দিতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
৬। গামবোরো টিকাঃ
সাধারনত ১১-১২ দিন বয়সে প্রথম ডোজ এবং এক সপ্তাহ পর বুষ্টার ডোজ প্রয়োগ করতে হয়।এই টিকাটি সুস্থ মোরগ-মুরগীর প্রতি চোখে ১ ফোঁটা করে প্রয়োগ করতে হয়।(বিস্তারিত জানতে এখানে ক্লিক করুন)
তথ্য উৎসঃ
১। পশুপাখির রোগ প্রতিষেধক টিকা উৎপাদন,সংরক্ষন ও ব্যবহার নির্দশিকা;প্রাণিসম্পদ গবেষনা প্রতিষ্ঠান,মহাখালী,ঢাকা।
২। ইন্টারনেট।
বিঃদ্রঃ উপরের লেখার তথ্য সমূহ জনস্বার্থে প্রকাশ করা হয়েছে।এই তথ্য যেকোন সময় পরিবর্তন হতে পারে। তাই এই টিকা ব্যবহারের পূর্বে অবশ্যই সংশ্লিষ্ট উপজেলা প্রাণিসম্পদ দপ্তর হতে পরামর্শ গ্রহন করুন।এই তথ্য ব্যবহারে কোন অনাখাংকিত অবস্থার সৃষ্টি হলে কর্তৃপক্ষ কোনভাবেই দায়ী থাকবে না।